বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, ‘কয়েক দিন আগে একটি বিনিয়োগ সম্মেলন হয়েছে। বিনিয়োগের জন্য তারা যে সম্মেলন করেছে, সেটাকে আমরা সাধুবাদ জানাই, সরকারের চেষ্টাকেও সাধুবাদ জানাই। কিন্তু দেশে রাজনৈতিক নিশ্চয়তা ও স্থিতিশীলতা যদি না থাকে, গণতান্ত্রিক সরকার যদি না থাকে, তাহলে বিনিয়োগ খুব একটা বেশি আসবে না। আমরা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চাই, অর্থনৈতিক উন্নয়ন চাই, মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন চাই। এগুলো যদি করতে হয়, তাহলে আমাদের আরও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আর বিনিয়োগ বাড়াতে হলে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় লাল তীর হাইব্রিড পেঁয়াজ প্রদর্শনী ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আবদুল আউয়াল মিন্টু এ কথাগুলো বলেন। বালিয়াকান্দি উপজেলার সোনাপুর বড় হিজলী জুলফিকার সিদ্দিকিয়া ওয়াজেদিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সংস্কারের ব্যাপারে বিএনপির কোনো দ্বিমত নেই উল্লেখ করে আবদুল আউয়াল বলেন, সংস্কারের দোহাই দিয়ে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার ছাড়া দীর্ঘদিন দেশ পরিচালিত হোক, বিএনপি তা চায় না।

আবদুল আউয়াল আরও বলেন, ‘এই সরকার প্রতিষ্ঠার সময়ও আমরা সাপোর্ট দিয়েছি এবং এখনো সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি, ভবিষ্যতেও সাপোর্ট দিয়ে যাব। তাই অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যে যে সংস্কারের দরকার, তা করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাই। যে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক, জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকা সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। কিন্তু সরকার যখন ডিসেম্বরে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলে আবার জুনে করবে বলে জানায়, তখন আমাদের কাছে দ্বিধা লাগে।’

মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো.

শহিদুল ইসলাম, বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম, রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া সম্রাট, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী, সদস্যসচিব কামরুল আলম এবং জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মঞ্জুরুল আলম বক্তব্য দেন। উল্লেখ্য, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু লাল তীর সিড লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল আউয় ল ম ন ট গণত ন ত র ক ব এনপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ