আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স যখন নড়বড়ে, তখন টেস্ট সিরিজ খেলতে আসছে ‘বিপদের বন্ধু’ জিম্বাবুয়ে। দুই ম্যাচের সিরিজ সামনে রেখে শক্তিশালী দল দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে প্রতিপক্ষকে নিয়ে কোনোভাবে হালকা ভাবার সুযোগ নেই বলে মনে করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তার চোখে, জিম্বাবুয়ে যেমন, তেমনি অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকা সব আন্তর্জাতিক প্রতিপক্ষই সমান গুরুত্বের দাবিদার।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) মিরপুরে আবাহনী লিমিটেডের অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শান্ত বলেন, ‘প্রতিটি আন্তর্জাতিক সিরিজই চ্যালেঞ্জিং। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধেও আমাদের সেই মানসিকতা নিয়েই নামতে হবে। যে চাপ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে গেলে থাকে, এখানেও সেটা থাকবে।’

অনেকেই জিম্বাবুয়েকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখেন। তবে টাইগার অধিনায়ক স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, তারা কোনো দলকে ছোট করে দেখছেন না। শান্ত বলেন, ‘আমি বারবার বলছি, কোনো দলই ছোট নয়। ক্রিকেটাররাও এমন কিছু ভাবছে না। আমি চাই সাধারণ মানুষ এবং মিডিয়াও যেন এমন করে না ভাবে। জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকা সবাইকেই আন্তর্জাতিক মানের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখতে হবে।’

এ সিরিজকে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন শান্ত। তার ভাষায়, ‘আমরা কতটা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি সেটাই আসল বিষয়। গত বছর যদি দেখেন, টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের উন্নতি হয়েছে। তিনটি ম্যাচ জিতেছি। এবার আরও ছয়টি টেস্ট রয়েছে। আমরা চাই এর চেয়ে ভালো ফল করতে।’

আগামী ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আসবে জিম্বাবুয়ে দল। সিলেটে প্রথম টেস্ট মাঠে গড়াবে ২০ এপ্রিল, দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বাসাবাড়িতে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু নিয়োগ বন্ধে আইন করার সুপারিশ

বাসাবাড়ির কাজে তথা গৃহকর্মে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়োগ বন্ধে কঠোর আইন করার পাশাপাশি কার্যকরভাবে তা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।

বাংলাদেশ জাতীয় শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাজ করানো হলে তা শিশুশ্রমের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করা হয়। এ ছাড়া গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি ২০১৫-তে বলা হয়েছে, ১৪ বছরের নিচে কোনো শিশুকে গৃহকর্মে নিয়োগ করা যাবে না।

শ্রম সংস্কার কমিশন এ প্রসঙ্গে বলেছে, গৃহকর্মে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়োগ বন্ধে কঠোর আইন করতে হবে। একই সঙ্গে এই আইনের কার্যকর বাস্তবায়নেও গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, সেখানে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গৃহশ্রমিকদের বাংলাদেশ শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দিতে হবে। এর আগপর্যন্ত নিশ্চিত করতে হবে ‘গৃহকর্মীর কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা–২০১৫’–এর যথাযথ বাস্তবায়ন।

নিয়োগের ক্ষেত্রে আবাসিক, অনাবাসিক, খণ্ডকালীন বা স্থায়ী—সব ধরনের গৃহশ্রমিকদের জন্য কর্মঘণ্টা, বেতন, ছুটি, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সুবিধা উল্লেখ করে একটি স্বচ্ছ ও নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্মসংস্থান চুক্তি প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে শ্রমিকের কোনো অভিযোগ থাকলে সেটি কার বরাবর, কোন স্থানে এবং কীভাবে দায়ের করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাসহ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

গৃহশ্রমিকদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি ও নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মাধ্যমে গৃহকর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া গৃহকর্মীদের সংগঠন বা ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রদানেরও সুপারিশ করেছে কমিশন।

পারলারের কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে নেওয়ার পরামর্শ

এদিকে বিউটি পারলার খাতের শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে এ খাতের কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা ও তাঁদের সন্তানদের জন্য শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র বা ডে কেয়ার সুবিধা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতের কথা বলেছে কমিশন।

অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ খাতে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠনের সুপারিশও করেছে কমিশন। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মীদের কাজের মান ও ঝুঁকি বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা এবং তাঁদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে পদোন্নতি কাঠামো তৈরি করতে হবে।

দেশের সব বিউটি পারলার শ্রমিকদের পেশাগত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা সুরক্ষার জন্য শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের স্বীকৃতি দেওয়া, অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে।

বিউটি পারলারের কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান করাসহ সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা নির্দেশিকা প্রণয়নের কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বিউটি পারলারের কর্মীদের বড় একটি অংশ রাতে বাসায় ফেরে। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে ও রাত্রিকালীন বাড়ি ফেরার সময় তাঁদের হয়রানি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব শ্রমিকের সামাজিক মর্যাদা, সুরক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে কমিউনিটিভিত্তিক উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ