বিরোধীদের প্রতিবাদের মুখে হিন্দিকে আবশ্যিক করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটল মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার
Published: 23rd, April 2025 GMT
প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়ে ভারতের মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট হিন্দি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিল। গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার পর স্কুল শিক্ষামন্ত্রী দাদা ভুসে গণমাধ্যমকে বলেন, হিন্দি ভাষা শিক্ষা আবশ্যিক করা হচ্ছে না। ওই ভাষা শিক্ষা এখন থেকে ঐচ্ছিক বলে গণ্য হবে। বাধ্যতামূলক থাকবে শুধু মারাঠি ও ইংরেজি ভাষা।
জাতীয় শিক্ষানীতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রের দেবেন্দ্র ফাডনবিশ সরকার রাজ্যের সব স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মারাঠি ও ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি ভাষা শিক্ষাও আবশ্যিক বলে ঘোষণা করেছিল।
১৬ এপ্রিল ওই সরকারি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ ও প্রতিরোধ। শিবসেনা, কংগ্রেস, এনসিপি, মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনাসহ (এমএনএস) সব বিরোধী দল জবরদস্তি করে হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। সম্মিলিত এ প্রতিরোধের মুখে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হয়। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার হিন্দি ভাষা শিক্ষাকেও বাধ্যতামূলক বলে নির্দেশিকা জারি করেছিল।
পরিবর্তিত সিদ্ধান্তের ফলে হিন্দি তৃতীয় ভাষা হিসেবে গণ্য হবে। তা শেখা শিক্ষার্থীদের জন্য আবশ্যিক নয়। ইচ্ছা করলে শিক্ষার্থীরা তা শিখতে পারবে। স্কুল শিক্ষামন্ত্রী এ কথা জানানোর পাশাপাশি বলেছেন, খুব শিগগির এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশিকা জারি করা হবে।
বিরোধীদের পাশাপাশি হিন্দি চাপানোর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল রাজ্য সরকারের ভাষা পরামর্শদাতা কমিটিও। কমিটির চেয়ারম্যান লক্ষ্মীকান্ত দেশমুখ চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী ফাডনবিশকে বলেছিলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়নি। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আরজি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি বলেছিলেন, এতে রাজ্যের মঙ্গল।
কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রিভাষা নীতি অনুযায়ী দেশের সব রাজ্যে জবরদস্তি করে হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে সবার আগে সরব হয়েছিল তামিলনাড়ু সরকার। রাজ্যের ডিএমকে মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন অভিযোগ করেছিলেন, সরকার হিন্দি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে চাইছে। এই হিন্দি আগ্রাসন তাঁরা রুখবেন। স্ট্যালিন এ অভিযোগও করেছিলেন, হিন্দি চাপানোর বিরোধিতা করায় কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষা খাতে রাজ্যের পাওনা প্রায় আড়াই হাজার কোটি রুপি আটকে রেখেছে।
মহারাষ্ট্র সরকারের এই পিছু হটার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের সব দল।
মহারাষ্ট্রে হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব হন এমএনএস নেতা রাজ ঠাকরে। বিজেপির হিন্দি আগ্রাসন রুখতে তিনি উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার সঙ্গে হাত মেলানোরও ইঙ্গিত দেন। দুই ভাইয়ের এই সম্ভাব্য মিলন বৃহন্মুম্বাই পৌরসভা নির্বাচনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। রাজ্য রাজনীতিও চনমনে হয়ে উঠতে পারে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ও রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা জোটবদ্ধ হলে। সেই সম্ভাবনা দূর করতেই মুখ্যমন্ত্রী ফাডনবিশ পেছু হটলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র সরক র র আবশ য ক মন ত র কর ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের হামলা চলতে থাকলে পারমাণবিক আলোচনা হবে না: ইরানের প্রেসিডেন্ট
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। মাখোঁ তাকে ‘উত্তেজনা এড়াতে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের’ আহ্বান জানান। একই সঙ্গে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইরানকে পারমাণবিক আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। খবর বিবিসির
পেজেশকিয়ান মাখোঁকে বলেছেন, ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত থাকলে ইরান আলোচনার টেবিলে বসবে না।
রোববারের নির্ধারিত যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনা বাতিল ঘোষণা করার পরে ইরানের প্রেসিডেন্ট এ কথা বলেছেন।