সন্তানকে অতিমাত্রায় শাসন করে তার বিপদ বাড়াচ্ছেন না তো
Published: 23rd, April 2025 GMT
বেশি শাসনে যা হতে পারে
আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন কোনো ভুল করলে মা-বাবা, বড় ভাই-বোনের কাছে বকা বা মার খেয়েছি। আবার মন খারাপ করে চোখের পানি মুছে নিজেরাই স্বাভাবিক হয়ে যেতাম। কিন্তু এখনকার শিশু-কিশোরদের অতিমাত্রায় বকা বা শাসন করলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি।
এখনকার অনেক অভিভাবকও অবশ্য সন্তানের খাওয়া, লেখাপাড়া, সৃজনশীল কাজ নিয়ে অতিমাত্রায় শাসন করেন। অনেকের ধারণা, মুঠোফোন, ভিডিও গেম, কার্টুনের যুগে সন্তানকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সবার সামনে বকা দেওয়া যেতেই পারে। বকা দিলে সন্তান মা-বাবার কথা মতো চলবে, ঠিকমতো পড়বে, সঠিকভাবে পুষ্টিকর খাবার খাবে। বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন। এই প্রজন্মের শিশুকে নিজের সঙ্গে মেলালে আপনি ভুল করবেন। একদিন বকা বা মার খেয়ে শিশু চুপ থাকতে পারে। কিন্তু দিনের পর দিন এ ধরনের পরিস্থিতি চলতে থাকলে সন্তান একসময় অতিমাত্রায় বিরক্ত হবে।
গবেষণার তথ্য বলছে, যেসব শিশু অতিমাত্রায় কড়া শাসনের মধ্যে বড় হয়, তারা পরবর্তী জীবনে বেশি আতঙ্কের মধ্যে থাকে। এ ধরনের শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়। তিক্ততা থেকে এসব শিশু-কিশোর অধিকাংশ সময় পরিবার ছাড়াও অন্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ফেলে।
সন্তান অতিমাত্রায় দুষ্টুমি করলে বা খুব বেশি অবাধ্য হলে, তাকে শাসন করতে হবে। তবে সেটা সব মানুষের সামনে চিৎকার-চেঁচামেচি করে নয়। শিশুকে অপদস্ত করলে ফল ভালো হবে না। শিশুদের আদর করে, বারবার বুঝিয়ে বলতে হবে। যেসব শিশু অভিভাবকের কাছ থেকে নিয়মিত বকা খায়, সেসব শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাস কমতে থাকে, তারা একটুতেই ভয় পায়।
আরও পড়ুনশিশুকে ভয় দেখাবেন না২০ অক্টোবর ২০২১কড়া শাসনে শিশুর ব্যক্তিত্ব যেভাবে বদলে যায়সন্তানকে কড়া শাসন না করে বোঝাতে হবে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সব শ শ
এছাড়াও পড়ুন:
অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ে নীলচক্র দেখতে বলছেন, কী আছে এই সিনেমায়?
সিনেমা হলে বসে বাবা সন্তানের হাত ধরছেন, এক তরুণী মুছছেন চোখের কোণ, পেছনের সারিতে একজন মা কানে কানে ছেলের সঙ্গে কিছু বলছেন; এমন দৃশ্য এখন দেখা যাচ্ছে ঈদের ‘নীলচক্র’ দেখতে গিয়ে।
দর্শক বলছেন ‘নীলচক্র’ শুধু বিনোদনের সিনেমা নয়, এটা সমাসাময়িক গল্পের এমন একটি সাসপেন্স থ্রিলার যা, এখনকার ইন্টারনেট প্রজন্মকে সচেতন করছে।
এই যেমন বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে বের হওয়া এক অভিভাবক ‘নীলচক্র’ সিনেমা দেখে বলছিলেন, ‘আমার মেয়ে মোবাইলে ব্যস্ত থাকে সবসময়, সেটা নিয়ে আমাদের অভিযোগের শেষ নেই। আজ একসঙ্গে আমরা সিনেমাটি উপভোগ করলাম। ইন্টারনেটের একটা ভুল কিভাবে আমাদের জীবন শেষ করে দিতে পারে সেটা দেখলাম। সিনেমা শেষে ও নিজে থেকে আমার কাঁধে মাথা রাখল। কিছু বলার ছিল না,শুধু অনুভব করলাম, ‘নীলচক্র’ আমাদের আরও কাছাকাছি এনে দিল।’
যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাস ‘নীলচক্র’ দেখে ফেরা একদল তরুণী বলছিলেন, ‘সিনেমাটি দেখে আমার মধ্যে সচেতনতা এসেছে। আমার একটা ব্যক্তিগত ভিডিও কিংবা ছবি আমার পুরো পরিবারকে শেষ করে দিতে পারে সেই ধারণা এলো। সিনেমায় আরিফিন শুভ দারুণ অভিনয় করেছেন, তাঁকে ও পরিচালককে ধন্যবাদ আমাদের দেশে আমার দেশের জন্য দরকারী এমন একটি গল্প নিয়ে সিনেমা করার জন্য।’
একজন মা এসেছিলেন সিনেমাটি দেখতে। তিনি বলছেন, ‘আমি সিনেমাটি দারুণ উপভোগ করেছি। আমাদের সমাজের জন্য খুব দরকারী গল্পের এই সিনেমা। আমার পরিবারে ছেলে ও মেয়ে আছে তরুণ। আমি তাঁদের নিয়ে এই সিনেমাটি আবার দেখব শুধুমাত্র সচেতনার জন্য।’
সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসায় ভাসছেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। এই সিনেমা প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘এই গল্প এখনকার। ইন্টারনেট যুগে একটা অসাবধান ক্লিক পুরো জীবন বদলে দিতে পারে। এটাই দেখানো হয়েছে। সাহসী বলেই করেছি, দরকারি বলেই করেছি। অনেকেই সিনেমাটি প্লট দেখে প্রশংসা করছেন জেনে ভাল লাগছে। অভিভাবক হোন বা তরুণ, যারা অনলাইনে থাকেন, সবারই দেখা উচিত। চোখ বন্ধ রাখলে বিপদ থেমে থাকে না।’
একটা ক্লিক, একটা ভিডিও, আর তাতেই পাল্টে যাচ্ছে জীবনের গতিপথ। শহরজুড়ে ফাঁস হচ্ছে একের পর এক ব্যক্তিগত ভিডিও। অন্ধকার, আতঙ্ক আর টানটান উত্তেজনায় মোড়ানো এক সময়ের গল্প নিয়ে পরিচালক মিঠু খানের ‘নীলচক্র: ব্লু সার্কেল’ এ এবার পর্দায় ফিরছেন আরিফিন শুভ। তাঁর বিপরীতে আছে মন্দিরা চক্রবর্তী।