ইসরায়েলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর তেল আবিবে নতুন করে ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করেছে ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী। 

শনিবার (১২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) আল-মাসিরাহ টিভিতে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে হুতির সামরিক শাখার মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেছেন, “আমাদের বিমান বাহিনী তেল আবিবে দুটি ইসরায়েলি সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে একটি গুণগত সামরিক অভিযান চালিয়েছে, দুটি ড্রোন ব্যবহার করে।”

আরো পড়ুন:

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ শনিবার

ইসলামী ফ্রন্টের বি‌ক্ষোভ
‘ইসরায়েলের পণ্য বর্জনের জিহাদ শুরু করতে হবে’

মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে এই হামলা চালানো হয়েছে।

হুতির সামরিক মুখপাত্র আরো বলেন, “আমরা নিশ্চিত করছি যে, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে চলমান মার্কিন আগ্রাসনের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও আমরা গাজার প্রতি আমাদের কর্তব্য পালন থেকে পিছু হটবো না।”

ইসরায়েলের চ্যানেল টুয়েলভ নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলে পৌঁছানোর আগেই জর্ডানের আকাশসীমার মধ্যে মৃত সাগরের কাছে একটি ইয়েমেনি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জর্ডানের সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, একটি অজ্ঞাত ড্রোন জর্ডানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে এবং মৃত সাগরের কাছে মাদাবা গভর্নরেটের মাইন এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

গত মাস থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল নতুন করে তীব্র হামলা শুরু করার পর থেকে, হুতিরা ইসরায়েলি এবং মার্কিন লক্ষ্যবস্তুতে ঘন ঘন আক্রমণ চালিয়ে আসছে।

আগের দিন বৃহস্পতিবার , হুতির সামরিক মুখপাত্র উত্তর লোহিত সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী, ইউএসএস হ্যারি এস.

ট্রুম্যান এবং অন্যান্য মার্কিন যুদ্ধজাহাজের বিরুদ্ধে নতুন আক্রমণের দাবি করেন।

এদিকে, মার্কিন সেন্ট্রল কমান্ড সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছে, বিমানবাহী রণতরীটির ওপর ‘হুথিদের হামলার অদ্ভুত দাবি’ সত্ত্বেও তারা হুতিদের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই দিন-রাতে অবিরাম অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

হুতি পরিচালিত সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, শুক্রবার ভোর থেকে উত্তর ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে।

মার্কিন বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাজধানী সানা, সংলগ্ন তেল সমৃদ্ধ প্রদেশ মারিব এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় হোদেইদাহের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি স্থানে হুতিদের স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

সানার বাসিন্দারা সানার পূর্ব উপকণ্ঠে অবস্থিত মাউন্ট নুকুম এবং বানি হাশিশ জেলায় হামলা চালানোর আগে এবং পরে যুদ্ধবিমানের বিকট শব্দ শুনতে পান। এছাড়াও, রাজধানীর দক্ষিণ উপকণ্ঠে অবস্থিত সানহান জেলার বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালানো হয়।

ইয়েমেনে সম্ভাব্য বিমান হামলার বিষয়ে বাসিন্দাদের আগাম সতর্ক করার জন্য কোনো সতর্কীকরণ সাইরেন সিস্টেম নেই।

চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়াকে সানার একজন বাসিন্দা মোহাম্মদ বলেন, “আমরা যা শুনি তা হলো, আঘাত হানার এবং বিস্ফোরিত হওয়ার এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দ, তারপর আমরা পূর্ণ গতিতে যুদ্ধবিমানের শব্দ শুনতে পাই।”

গত ১৫ মার্চ, মার্কিন সামরিক বাহিনী লোহিত সাগরে ইসরায়েল এবং মার্কিন যুদ্ধজাহাজের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানো থেকে বিরত রাখতে হুতিদের লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা পুনরায় শুরু করে।

উত্তর ইয়েমেন নিয়ন্ত্রণকারী হুতি গোষ্ঠী বলেছে, ইসরায়েল গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করলে এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশের অনুমতি দিলে তারা আক্রমণ বন্ধ করবে।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

হুতিদের হামলা থেকে বাঁচতে গিয়ে সাগরে ডুবল ৭২৬ কোটি টাকার মার্কিন যুদ্ধবিমান

যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান থেকে দেশটির নৌবাহিনীর একটি এফ/এ-১৮ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান সাগরে পড়ে ডুবে গেছে। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে নৌবাহিনী এ কথা জানিয়েছে। যুদ্ধবিমানটির দাম ছয় কোটি ডলারের বেশি।

একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত এড়াতে রণতরীটি বড় ধরনের একটি বাঁক নিয়েছিল। তখন যুদ্ধবিমানটি সাগরে পড়ে যায়।

এ ঘটনায় একজন নাবিক সামান্য আহত হয়েছেন জানিয়ে নৌবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, রণতরীর যুদ্ধবিমান রাখার স্থানে এফ/এ-১৮ বিমানটি টেনে নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় ক্রু যুদ্ধবিমানটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে যুদ্ধবিমান ও সেটিকে টেনে নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর দুটিই সাগরে পড়ে যায়।

হুতি বিদ্রোহীরা গতকাল বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ট্রুম্যানকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের মার্কিন অভিযানে অংশ নিতে রণতরীটি এখন লোহিত সাগরে অবস্থান করছে।

এ ঘটনায় একজন নাবিক সামান্য আহত হয়েছেন জানিয়ে নৌবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, রণতরীর যুদ্ধবিমান রাখার স্থানে এফ/এ-১৮ বিমানটি টেনে নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় ক্রু যুদ্ধবিমানটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে যুদ্ধবিমান ও সেটিকে টেনে নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টর দুটিই সাগরে পড়ে যায়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধবিমানটি সরিয়ে নেওয়ার কাজে নিয়োজিত ক্রুরা বিমানটি সাগরে পড়ে যাওয়ার আগে বেরিয়ে আসতে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেন। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

আরেকজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, যুদ্ধবিমানটি ডুবে গেছে। নৌবাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, একেকটি এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমানের দাম ছয় কোটি ডলারের বেশি।

ইউএসএস ট্রুম্যান প্রায়ই ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের হামলার লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে। মিসরের কাছে একটি বাণিজ্যিক জাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে গত ফেব্রুয়ারিতে রণতরীটি সংবাদের শিরোনাম হয়। তবে ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।

এদিকে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযানে মধ্য মার্চ থেকে সাতটি এমকিউ-৯ র‌্যাপার ড্রোন হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল একজন মার্কিন কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।

এর আগে গত ডিসেম্বরে ইউএসএস ট্রুম্যানের আরেকটি এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমানকে ‘ভুলবশত’ ভূপাতিত করে লোহিত সাগরে থাকা মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস গেটিসবার্গ। ওই ঘটনায় দুই পাইটলই নিরাপদে যুদ্ধবিমান থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন।

এদিকে এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযানে মধ্য মার্চ থেকে সাতটি এমকিউ-৯ র‌্যাপার ড্রোন হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল একজন মার্কিন কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘১৫ মার্চ থেকে সাতটি এমকিউ-৯ খোয়া গেছে।’ তবে এসব ড্রোন খোয়া যাওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ করেননি তিনি। প্রতিটি ড্রোনের দাম তিন কোটি ডলার।

আরও পড়ুননিজেদের যুদ্ধবিমান নিজেরাই ভূপাতিত করল মার্কিন সামরিক বাহিনী২২ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেয়েকে নিয়ে অস্ত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠানে কিম
  • হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র থেকে বাঁচতে গিয়ে সাগরে ডুবল মার্কিন যুদ্ধবিমান  
  • হুতিদের হামলা থেকে বাঁচতে গিয়ে সাগরে ডুবল ৭২৬ কোটি টাকার মার্কিন যুদ্ধবিমান