ইসরায়েলের তেল আবিবে ড্রোন হামলার দাবি হুতিদের
Published: 12th, April 2025 GMT
ইসরায়েলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর তেল আবিবে নতুন করে ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করেছে ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী।
শনিবার (১২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) আল-মাসিরাহ টিভিতে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে হুতির সামরিক শাখার মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেছেন, “আমাদের বিমান বাহিনী তেল আবিবে দুটি ইসরায়েলি সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে একটি গুণগত সামরিক অভিযান চালিয়েছে, দুটি ড্রোন ব্যবহার করে।”
আরো পড়ুন:
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ শনিবার
ইসলামী ফ্রন্টের বিক্ষোভ
‘ইসরায়েলের পণ্য বর্জনের জিহাদ শুরু করতে হবে’
মুখপাত্র জানিয়েছেন যে, ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে এই হামলা চালানো হয়েছে।
হুতির সামরিক মুখপাত্র আরো বলেন, “আমরা নিশ্চিত করছি যে, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে চলমান মার্কিন আগ্রাসনের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও আমরা গাজার প্রতি আমাদের কর্তব্য পালন থেকে পিছু হটবো না।”
ইসরায়েলের চ্যানেল টুয়েলভ নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলে পৌঁছানোর আগেই জর্ডানের আকাশসীমার মধ্যে মৃত সাগরের কাছে একটি ইয়েমেনি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জর্ডানের সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, একটি অজ্ঞাত ড্রোন জর্ডানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে এবং মৃত সাগরের কাছে মাদাবা গভর্নরেটের মাইন এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
গত মাস থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল নতুন করে তীব্র হামলা শুরু করার পর থেকে, হুতিরা ইসরায়েলি এবং মার্কিন লক্ষ্যবস্তুতে ঘন ঘন আক্রমণ চালিয়ে আসছে।
আগের দিন বৃহস্পতিবার , হুতির সামরিক মুখপাত্র উত্তর লোহিত সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী, ইউএসএস হ্যারি এস.
এদিকে, মার্কিন সেন্ট্রল কমান্ড সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি পোস্টে বলেছে, বিমানবাহী রণতরীটির ওপর ‘হুথিদের হামলার অদ্ভুত দাবি’ সত্ত্বেও তারা হুতিদের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই দিন-রাতে অবিরাম অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
হুতি পরিচালিত সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, শুক্রবার ভোর থেকে উত্তর ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে।
মার্কিন বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাজধানী সানা, সংলগ্ন তেল সমৃদ্ধ প্রদেশ মারিব এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় হোদেইদাহের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি স্থানে হুতিদের স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
সানার বাসিন্দারা সানার পূর্ব উপকণ্ঠে অবস্থিত মাউন্ট নুকুম এবং বানি হাশিশ জেলায় হামলা চালানোর আগে এবং পরে যুদ্ধবিমানের বিকট শব্দ শুনতে পান। এছাড়াও, রাজধানীর দক্ষিণ উপকণ্ঠে অবস্থিত সানহান জেলার বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালানো হয়।
ইয়েমেনে সম্ভাব্য বিমান হামলার বিষয়ে বাসিন্দাদের আগাম সতর্ক করার জন্য কোনো সতর্কীকরণ সাইরেন সিস্টেম নেই।
চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়াকে সানার একজন বাসিন্দা মোহাম্মদ বলেন, “আমরা যা শুনি তা হলো, আঘাত হানার এবং বিস্ফোরিত হওয়ার এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দ, তারপর আমরা পূর্ণ গতিতে যুদ্ধবিমানের শব্দ শুনতে পাই।”
গত ১৫ মার্চ, মার্কিন সামরিক বাহিনী লোহিত সাগরে ইসরায়েল এবং মার্কিন যুদ্ধজাহাজের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানো থেকে বিরত রাখতে হুতিদের লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা পুনরায় শুরু করে।
উত্তর ইয়েমেন নিয়ন্ত্রণকারী হুতি গোষ্ঠী বলেছে, ইসরায়েল গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বন্ধ করলে এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশের অনুমতি দিলে তারা আক্রমণ বন্ধ করবে।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।