যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ওপর জোর দিতে হবে
Published: 12th, April 2025 GMT
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক ও ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক কয়েকটি দেশের জোট এবং দ্বিপাক্ষীক চুক্তির ওপর জোর দিতে হবে। রাজধানীর এফডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কহারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, শুল্ক ও অশুল্ক বাধা কাটিয়ে বাণিজ্যের সম্প্রসারণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) গঠিত হয়েছিল। কিন্তু প্রভাবশালী দেশগুলো ডব্লিউটিও-এর নিয়োম-নীতির তোয়াক্কা করে। তাই সংস্থাটি এক্ষেত্রে সেভাবে প্রভাব রাখতে পারেনি। এরপর থেকেই নিজেদের মধ্যে সমমনা ১৫-২০ করে দেশ মিলে একাধিক জোট করে সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে বাণিজ্য করছে। আরও আগে আমাদের এ পথে যাওয়া দরকার ছিল।
তিনি আরও বলে, বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াতে অমরা অনেক দিন ধরেই বেশকিছু দেশের সঙ্গে এফটিএ করা কথা বলে আসছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামে যেখানে ৫০ দেশের সঙ্গে এফটি রয়েছে সেখানে আমাদের রয়েছে শুধুমাত্র ভুটানের সঙ্গে। যত দ্রুত সম্ভব আরও কিছু দেশের সঙ্গে এফটি করতে হবে। একই সঙ্গে নতুন বাজার, পণ্য বহুমুখীকরণ ও উৎপাদনশীলতার ওপর জোর দিতে হবে।
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে ঘোষিত নতুন শুদ্ধ আরোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত করায় বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে সাময়িক স্বস্তি মিললেও অনিশ্চয়তা কাটেনি। এই ৯০ দিনের মধ্যে নতুন করে এলসি খোলা হলে তার জাহাজিকরণ যদি ৯০ দিনের পরে হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে ওই রপ্তানির বিপরীতে স্থগিত করা সুবিধা প্রযোজ্য হবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। যদি এই স্থগিতাদেশের ৯০ দিন পর মার্কিন শুল্ক বিভাগ পণ্য খালাসিকরণের লক্ষ্যে শুল্ক অ্যাসেসমেন্ট করে তাহলে কত শতাংশ শুদ্ধ আরোপ করা হবে তা নিশ্চিত করা না গেলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে শঙ্কা থেকেই যাবে।
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ১০ সুপারিশ
বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কহারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ১০ দফা সুপারিশ করে। এগুলো হচ্ছে
১.
২. যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য কূটনীতি জোরদার করে সে দেশের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি অব্যাহত রাখা।
৩. যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য কূটনীতি বজায় রেখে আমদানি বাড়িয়ে তুলা, সয়াবিন, মেশিনারি, ওষুধ ও সেবা পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক কমালে তারা পাল্টা শুল্ক আরোপ থেকে সরে আসতে পারে।
৪. উচ্চ শুল্ক হার আরোপের উদ্বেগ নিরসনে অর্থনীতিবিদ, বাজার বিশ্লেষক ও ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের নিয়ে অর্থনৈতিক কনসাল্টেশন গ্রুপ গঠন করা।
৫. ৯০ দিনের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষে রপ্তানি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালে বা জাহাজীকরণ হলে রপ্তানীর বিপরীতে স্থগিতকৃত শুল্ক সুবিধা প্রযোজ্য হবে কিনা তা স্পষ্ট করা
৬. শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ দূরীকরণে দ্বন্দ্ব নিরসন ও শিল্প সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা
৭. অনেক সময় রপ্তানিমূল্য সঠিক সময়ে দেশে আনা হয় না। রপ্তানিকারকদের সঠিক সময়ে রপ্তানি মূল্য দেশে আনতে উৎসাহিত করতে হবে। এতে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ পাবে অন্যদিকে ঋণ খেলাপিও হ্রাস পাবে।
৮. পণ্য রপ্তানির ওপর ক্যাশ ইনসেনটিভ প্রদান নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। রপ্তানিকারকদের ক্যাশ ইনসেনটিভের মতো নগদ প্রণোদনা না দিয়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ এ ভর্তুকি দেওয়া যেতে পারে। এতে প্রণোদনার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে এবং প্রকৃত রপ্তানিকারকরা প্রণোদনা পাবে। চীন এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করে সফলতা পেয়েছে। ৯. আগামী নির্বাচনে ঋণখেলাপিদের মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত গড়ে তোলা এবং নির্বাচনী ইশতিহারে তা উল্লেখ করা।
১০. বিল অফ এন্ট্রি ইস্যুর ক্ষেত্রে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে এবং আমদানিতে ফরেন কারেন্সি রিলিজ করার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প য ক তর ষ ট র ৯০ দ ন র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’
ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী।
গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?
ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”
আরো পড়ুন:
কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী
পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি
কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”
কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”
ঢাকা/শান্ত