জমিতে মাটি কাটার কাজ চলছিল। ছেলে আশরাফুলকে (১২) নিয়ে সেই কাজ তদারকি করতে গিয়েছিলেন মনির হোসেন। কাজের ফাঁকে পরিশ্রান্ত শ্রমিকদের নাশতা এগিয়ে দিতে যায় আশরাফুল। আর তখন হঠাৎ মাটি নিতে আসা পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে সে। সেখান থেকে আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি। বাবা মনির হোসেনের চোখের সামনেই মুহূর্তের মধ্যে নিথর হয়ে পড়ে আশরাফুলের দেহ। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে স্থানীয় এক পল্লিচিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিনি তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাটি গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর সড়কের পাশে পরানপুর এলাকায়। নিহত আশরাফুল মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের জনতা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে আশরাফুল ছিল সবার বড়। খবর পেয়ে চাটখিল থানার পুলিশ রাতেই নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য আজ শনিবার সকালে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে আহাজারি করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন মা কোহিনুর বেগম। ছেলের জন্য বিলাপ করে তিনি বলেন, ‘আঁর আশরাফুল কই? তোরা আঁর বুকের ধনরে আঁর বুকে হিরাই আনি দে। আঁর মানিকেরে যে কিল্লাই আঁই হিগার বাপের লগে যাইতে দিলাম। আঁর মানিকেরে ছাড়া আঁই কেন্নে থাকুম। ও আল্লাহ কেন আঁর বুক এইভাবে খালি করি দিল গো।’ কোহিনুরের বিলাপে কাঁদেন প্রতিবেশীরাও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাতে জমির মাটি কাটার কাজ তদারকি করতে গিয়েছিলেন মনির হোসেন। সঙ্গে ছেলেকে নিয়ে যান তিনি। আর তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

আশরাফুলের স্বজন ইউপি সদস্য মো.

ইউছুফ প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার রাতে পরানপুর এলাকায় জমির মাটি কাটার কাজ তদারকিতে যান মনির হোসেন। ছেলে বায়না ধরে, বাবার সঙ্গে যাবে বলে। সে কারণে মোটরসাইকেলের পেছনে বসিয়ে তিনি ছেলেকে নিয়ে যান।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মাটিবাহী পিকআপ ভ্যানের ধাক্কা লেগে শিশু আশরাফুল মারা গেছে। তাঁরা খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মন র হ স ন আশর ফ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বাবা পটুয়া কামরুল হাসান স্মরণে মেয়ে শুমোনা হাসানের গান

ভালোবাসা, স্মৃতি ও উত্তরাধিকারকে কেন্দ্র করে এক আবেগঘন পরিবেশে পটুয়া কামরুল হাসানের কন্যা শুমোনা হাসান তার বাবাকে উৎসর্গ করে একটি হৃদয়স্পর্শী গান প্রকাশ করেছেন।

বাবা দিবস উপলক্ষে আজ দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানে ‘কত দূর বাবা তোমার বাড়ি’ শিরোনামে গানটি প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুমোনার পরিবার, ঘনিষ্ঠজন, এবং সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মীরা।

গানটি শুমোনার নিজস্ব রচনা, সুর এবং কণ্ঠে পরিবেশিত। এতে ফুটে উঠেছে একজন কন্যার তার বাবার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো, তাদের ভালবাসা, সংগ্রাম এবং অনন্য সম্পর্কের গল্প। গানের প্রতিটি কথা ও সুর যেন এক আবেগের যাত্রাপথ।

অনুষ্ঠানে শুমোনা বলেন, ‘এই মুহূর্তটি আমার এবং আমার পরিবারের জন্য এক বিজয়ী এবং আবেগময় সময়। বাবার আত্মা সবসময় আমাকে পথ দেখিয়েছে। এই গানটি তার প্রতি আমার ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার ছোট্ট বহিঃপ্রকাশ।’

শুমোনা জানান, ভবিষ্যতেও তিনি এই ধারা অব্যাহত রেখে তাঁর বাবার স্মৃতিকে সম্মান জানাতে চান সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ