ডিজিটাল সব পণ্যই চলে অ্যানার্জি বা ইলেকট্রিক শক্তির প্রবাহে। যন্ত্র যত ভালোভাবে বা যত বেশি পরিমাণ কাজ করবে, তত বেশি তাপ সংরক্ষণ করবে। যন্ত্র যথাযথ ঠান্ডা করা না হলে এসব যন্ত্রের কর্মদক্ষতা কমে যায়; সৃষ্টি হয় জটিলতা।
ঠিক যে কারণে স্মার্ট ডিভাইস, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, গেমিং কনসোল, বাড়িতে ব্যবহৃত নানা যন্ত্রপাতি ও গাড়িসহ নিত্যব্যবহার্য প্রায় সব পণ্যে কুলিং সিস্টেম রয়েছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা সচল থাকার কারণে স্মার্টফোনে তাপ উৎপন্ন হয় সব সময়। প্রশ্ন আসছে, আকারে ছোট ও স্লিম ঘরানার স্মার্টফোনে কুলিং সিস্টেম কীভাবে কাজ করে।
প্রথমত, হাইপারফরম্যান্স ও গেমিং স্মার্টফোনকে ঠান্ডা রাখতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্রযুক্তি হলো ভেপর চেম্বার লিকুইড কুলিং। এমন প্রযুক্তি বাষ্পের নীতি মেনে কাজ করে। ভেপর চেম্বার মূলত হিট পাইপের মানোন্নত সংস্করণ। বাড়তি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে পাইপটি সাধারণত ল্যাপটপ ও কম্পিউটারে ব্যবহার করা হয়। পুরো সিল করা সব পাইপ পূর্ণ থাকে তাপ-পরিবাহী তরল পদার্থে, যা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির কয়েকটি গরম উপাদান থেকে তাপ শোষণ করে এবং তা শীতল অঞ্চলে পৌঁছে দেয়।
দ্বিতীয়ত, ভেপর চেম্বার কুলিং সিস্টেম আসার কারণে তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাটি এখন অনেক বেশি কার্যকর। সমতল প্লেট আকৃতির সব ধরনের ভেপর চেম্বার হিট পাইপের তুলনায় বড় অংশজুড়ে, সমানভাবে তাপ বিনিময় করতে পারে। জানা জরুরি, স্মার্টফোনে জায়গা তুলনামূলক কম। অভ্যন্তরে সব উপাদান থাকে খুবই কাছাকাছি। ফলে বিশেষ ডিজাইন ভেপর চেম্বারকে আধুনিক স্মার্টফোনের জন্য ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে।
তৃতীয়ত, ভেপর চেম্বার কুলিং সিস্টেম কাজ করে মূলত বাষ্পের নীতি মেনে, যা মূলত সমতল ও সিল করা চেম্বার। যাতে থাকে অল্প পরিমাণে তরল কুল্যান্ট। তরল সাধারণত পানি বা অন্যসব তরলের মিশ্রণ হয়ে থাকে। সাধারণত তামা বা অ্যালুমিনিয়ামের মতো উপাদান দিয়ে বিশেষ চেম্বারটি তৈরি হয়। ফেজ পরিবর্তনের নীতির ওপর ভিত্তি করে কাজ করে চেম্বারটি। পুরো প্রক্রিয়া চলতে থাকে সারাক্ষণ।
কুলিং প্রক্রিয়াটি কাজ করে স্মার্টফোনে কাজ করার সময়, বিনোদনের সময় বা ফোন চার্জ দেওয়ার সময়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ পর চ ম ব র ক জ কর ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত