রোগী আছে; কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স নেই। অপারেশন থিয়েটার (ওটি) আছে, অবেদনবিদ ও শল্যচিকিৎসক নেই। চিকিৎসাসেবায় এই নেই আর নেই ভোলার লালমোহন উপজেলায়। ২ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮১ জনসংখ্যার এই উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী এলেও চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা পান না। ফিরে যেতে হয় অনেককে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নামেই ৫০ শয্যা হাসপাতাল। চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবেই মূলত রোগীরা চিকিৎসাসেবা পায় না। নাজুক অব্যবস্থাপনায় চলছে এর কার্যক্রম। কনসালট্যান্ট ও মেডিকেল অফিসারসহ চিকিৎসকের ৩০ পদের মধ্যে আটজন এবং নার্স ও মিডওয়াইফের ৩৬টি পদের মধ্যে ১৯ জন কর্মরত আছেন। তৃতীয় শ্রেণির ১১৫ পদ থাকলেও ৫০টি শূন্য। লোকবলের অভাবে অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, এক্স-রে, ই-সিজি এবং আল্ট্রাসোনোগ্রামের সেবাও বন্ধ রয়েছে। এ কারণে বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতালে সেবা নিতে গিয়ে রোগীদের অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে। এতে সমস্যায় পড়ছেন দরিদ্র রোগীরা। তাদের চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
সংকটের মধ্যেও গত বছর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ হাজার ৪৫৩ জন। এর মধ্যে জরুরি বিভাগে ২১ হাজার ৪৪৮ জন এবং বহির্বিভাগে ৯৮ হাজার ৩৯৫ জন সেবা নিয়েছেন। ওই বছর ১ হাজার ৮৮ জন প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা জানান, হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি, চিকিৎসক কম। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনেকেই সেবা না পেয়ে ফিরে যান। ভাগ্যে চিকিৎসকের নাগাল পাওয়া গেলেও তারা তড়িঘড়ি রোগী দেখেন। ভর্তি রোগীরাও জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসক পাচ্ছেন না। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সংকট দূর করে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার আবেদন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
নার্সিং সুপারভাইজার দীপালি রানী দে জানান, নার্স ও মিডওয়াইফ সংকটের কারণে রোগীদের যথাযথ সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবুও আমরা সাধ্যের মধ্যে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
মেডিকেল অফিসার ডা.
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. তৈয়বুর রহমান জানান, নানা সংকটের মধ্যেই হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিষ্ঠার সঙ্গে সেবা দিচ্ছেন। এ কারণে স্থানীয়দের আস্থা অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। শত শত রোগী সেবা নিতে ছুটে আসছেন। দিন দিন রোগীর চাপ বাড়ছে। অনেক সেবাই নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। সংকটের বিষয়টি নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব স থ য কমপ ল ক স চ ক ৎসক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫