নিলাম দেখিয়ে বিদ্যালয়ের ঘর বাড়িতে নিলেন শিক্ষক
Published: 13th, April 2025 GMT
ময়মনসিংহের নান্দাইলে কৌশলে নিলাম দেখিয়ে বিদ্যালয়ের টিনের ঘর বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। একই বিদ্যালয়ের বিদায়ী প্রধান শিক্ষক নিজের লোক দিয়ে সেই ঘর কিনিয়ে নেন। এর পর সেই ঘর তিনি কিনে নিজ বাড়িতে স্থাপন করছেন। এলাকাবাসীর কাছে এমন অভিযোগ পেয়ে গতকাল রোববার সরেজমিনও সত্যতা মিলেছে।
উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের কিছমত বনগ্রামে অবস্থিত আব্দুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটেছে এ ঘটনা। স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৮৫ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক একই এলাকার বাসিন্দা এনায়েত হোসেন ভূঁইয়া রতন। তিনি কিছু দিনের মধ্যেই অবসরে যাবেন। নিয়ম অনুযায়ী, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ার কথা জ্যেষ্ঠ শিক্ষক এমদাদুল হকের। কিন্তু রতন ভূঁইয়া কৌশলে ৩১ মার্চ এই দায়িত্ব দিয়েছেন তাঁরই স্ত্রী শামছুন্নাহারকে।
এরই মধ্যে সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সিমেন্টের পিলারের ওপর স্থাপিত ৬৪ হাত লম্বা টিনের চাল ও বেড়াবিশিষ্ট একটি ঘর ভেঙে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান রতন ভূঁইয়া। এ জন্য লোক-দেখানো নিলামও ডাকা হয়। রোববার সরেজমিন বিদ্যালয়ের ওই ঘরের টিনের চাল, বেড়া ও অন্যান্য উপকরণ প্রধান শিক্ষক রতন ভূঁইয়ার ভিটার আশপাশে জড়ো করে রাখতে দেখা যায়। এসব দিয়েই তিনি নিজের পুরোনো বাড়ির কাছাকাছি নতুন বাড়িতে লম্বালম্বি দোচালা ঘর তৈরি করেছেন।
ঘরটি নিলামে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পালের সই করা একটি রেজুলেশন দেখান। এতে ঘর বিক্রির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে দেখা যায়। কিন্তু জানা গেছে, অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল হক ও প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন বর্তমান ইউএনও বা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে না জানিয়েই লোক-দেখানো নিলামের আয়োজন করেন। স্বল্পদামে ঘরটি নিলামে কেনা এক ব্যক্তির কাছ থেকে কিনে নেন প্রধান শিক্ষক রতন ভূঁইয়া। ঘর বিক্রির টাকা কোথায় আছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, ওই টাকা বিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে।
নিলামে ঘরটি ৩২ হাজার টাকায় কিনে নেওয়া হয় হিমেল মিয়ার নামে। তাঁর ভাষ্য, বৈধতা দেখানোর জন্য প্রধান শিক্ষক কাগজে-কলমে লিখে রেখেছেন। তবে কবে-কখন নিলাম হয়েছে, সেটা তাঁকে জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন ভূঁইয়া রতন বলেন, ২৭ মার্চ বিদ্যালয়ের টিনের ঘরটি নিলামে তোলা হয়। সর্বোচ্চ ডাককারী হিমেল মিয়া ৩২ হাজার টাকায় ঘরটি পান। পরে তিনি ৫০ হাজার টাকায় হিমেলের কাছ থেকে ঘরটি কিনেছেন। এতে দোষের কিছু দেখছেন না। নিলামের কাগজপত্র বিষয়ে তিনি বলেন, হিমেল তাঁর নিজের লোক। যে কোনো সময় চাইলে কাগজ করে দিতে পারবেন।
বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল হকের ভাষ্য, সবকিছুই নিয়মের মধ্যে করেছেন বলে প্রধান শিক্ষক তাঁকে জানিয়েছেন। এর বেশি কিছু জানেন না।
নান্দাইলের ইউএনও সারমিনা সাত্তার রোববার বিকেলে সমকালকে বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই, খতিয়ে দেখবেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুড়িগ্রামে সারের দাবিতে সড়কে কৃষকদের বিক্ষোভ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় সারের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন কৃষকরা। এসময় তারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করেন।
রবিাবর (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ২টার দিকে উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর সড়ক অবরোধ করেন কৃষকরা। একপর্যায়ে তারা ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সারোয়ার তৌহিদকে অবরুদ্ধ করেন। বিকেল ৫টার দিকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপ জন মিত্রের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন কৃষকরা।
আরো পড়ুন:
বাগেরহাটে হরতাল কর্মসূচিতে পরিবর্তন
ফরিদপুরে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ, ভোগান্তি চরমে
আন্দোলনরত কৃষকরা জানান, তীব্র সার সংকট দেখা দিয়েছে। রোপা আমন ধানে সার দিতে না পেরে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা।
ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ জানান, কৃষকরা বিকেল ৫টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ইউএনও দীপ জন মিত্র জানান, কৃষকরা কেন সার পাচ্ছেন না, সেটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/বাদশাহ/মাসুদ