বরগুনার তালতলী উপজেলার করাইবাড়িয়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতঘরসহ ২৪টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও ঘর মালিকরা।

রোববার রাত ১২টার দিকে করাইবাড়িয়া বাজারের বশির খানের পেট্রোলের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে মুহূর্তের মধ্যে তা আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়ে।

এসময় স্থানীয় বাসিন্দারা তালতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে খবর দেন। পরে তালতলী ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভাতে গেলে তাদের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রে ত্রুটি থাকায় তারা আগুন নিভাতে ব্যর্থ হয়। পরে খবর দেওয়া হয় পার্শ্ববর্তী উপজেলা আমতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে।

আমতলী ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আগুনে পুড়ে যায় মুদি-মনোহারি, হার্ডওয়্যার, ফার্মেসি ও তেলের দোকানসহ ১৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ৪টি বসতঘরসহ ২৪টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী মহিবুল্লাহ মোল্লা বলেন, আমি ৭ বছর ধরে এই বাজারে ব্যবসা করি। আমার প্রায় ৪০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। আমি সর্বস্ব হারিয়ে এখন রাস্তার ফকির হয়ে গেছি।

মুদি দোকানদার ফারুক মিয়া বলেন, আমার প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। আমি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছি। এখন কীভাবে আমার ঋণের টাকা শোধ করব জানি না। আমি সবকিছু হারিয়ে এখন সহায় সম্বলহীন।

করাইবাড়িয়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কবির আকন বলেন, বশির খানের তেলের দোকান থেকে আগুনে সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তের মধ্যেই সে আগুন পুরো বাজারে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় তালতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ম্যানেজারকে খবর দেওয়া হলে তারা বিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এছাড়াও তাদের যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় আগুন নিভাতে ব্যর্থ হয়। পরে আমতলী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার এসএম নুরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। কিন্তু পানি সংকট থাকায় আগুন নিভানোর কাজে বিঘ্ন ঘটে। পরে আমতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও আমাদের যৌথ প্রচেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। 

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, খবর পেয়ে রাত ১২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত লতল উপজ ল ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ত্র দিয়ে ডাকাত তকমা, উদ্ধার করল নৌবাহিনী 

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ডাকাত তকমা দিয়ে দু’জনকে পিটিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় দেশীয় অস্ত্র। ছবি তুলে ও ভিডিও করে ছেড়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। উত্তেজিত জনতা তাদের ঘিরে রাখে। যদিও অনেকেই জানতেন না, ঘটনাটি সাজানো। খবর পেয়ে নৌবাহিনীর একটি দল আহত দু’জনকে উদ্ধার করে। সোমবার রাতে উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের আমতলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই তাদের হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। 

উদ্ধার দু’জন হলেন জাহাজমারা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড চরহেয়ার এলাকার মজিবুল হকের ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের মোল্লাবাজার এলাকার মো. আশরাফের ছেলে মো. আসিফ। এদের মধ্যে আরিফ পেশায় রিকশাচালক। 

স্থানীয়রা জানান, জাহাজমারা আমতলী বাজারের পশ্চিম পাশে রাস্তার চর দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন জহির চেরাং, অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দেন কাউসার। কাউসারপক্ষ অনেক দিন থেকে চরটির দখল নিয়ে আছে। ঘটনার দিন সোমবার বিকেলে জহির চেরাংয়ের লোকজন চরটির দখল নেওয়ার জন্য সংঘবদ্ধ হয়। পরে প্রতিপক্ষের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গেলেও দু’জনকে ধরে তারা বাজারে নিয়ে আসে। পরে ওই দু’জনকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পরিকল্পিতভাবে ডাকাত নাটক সাজানো হয়। 

ছবি তুলে ও ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ায় সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় করে। খবর পেয়ে নৌবাহিনীর একটি দল অবরুদ্ধ দু’জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে নৌবাহিনী ও পুলিশের দুটি গোয়েন্দা দলের তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে। 

আসিফের বাবা আশরাফ জানান, তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি পর্যন্ত নেই। অথচ তাঁকে ডাকাত বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর ছেলে নিরপরাধ দাবি করেন তিনি। 

আমতলী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. লিটন জানান, চরের আধিপত্য নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়। পরে নৌবাহিনী এসে তাদের নিয়ে যায়। তারা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত কিনা, তাঁর জানা নেই। 

হাতিয়া থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন, উদ্ধার দু’জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অস্ত্র দিয়ে ডাকাত তকমা, উদ্ধার করল নৌবাহিনী