বরগুনায় আগুনে পুড়ে ছাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ২৪ ঘর, ৫ কোটি টাকার ক্ষতি
Published: 14th, April 2025 GMT
বরগুনার তালতলী উপজেলার করাইবাড়িয়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতঘরসহ ২৪টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও ঘর মালিকরা।
রোববার রাত ১২টার দিকে করাইবাড়িয়া বাজারের বশির খানের পেট্রোলের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে মুহূর্তের মধ্যে তা আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় স্থানীয় বাসিন্দারা তালতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে খবর দেন। পরে তালতলী ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভাতে গেলে তাদের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রে ত্রুটি থাকায় তারা আগুন নিভাতে ব্যর্থ হয়। পরে খবর দেওয়া হয় পার্শ্ববর্তী উপজেলা আমতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে।
আমতলী ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আগুনে পুড়ে যায় মুদি-মনোহারি, হার্ডওয়্যার, ফার্মেসি ও তেলের দোকানসহ ১৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ৪টি বসতঘরসহ ২৪টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী মহিবুল্লাহ মোল্লা বলেন, আমি ৭ বছর ধরে এই বাজারে ব্যবসা করি। আমার প্রায় ৪০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। আমি সর্বস্ব হারিয়ে এখন রাস্তার ফকির হয়ে গেছি।
মুদি দোকানদার ফারুক মিয়া বলেন, আমার প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। আমি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছি। এখন কীভাবে আমার ঋণের টাকা শোধ করব জানি না। আমি সবকিছু হারিয়ে এখন সহায় সম্বলহীন।
করাইবাড়িয়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কবির আকন বলেন, বশির খানের তেলের দোকান থেকে আগুনে সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তের মধ্যেই সে আগুন পুরো বাজারে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় তালতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ম্যানেজারকে খবর দেওয়া হলে তারা বিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এছাড়াও তাদের যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় আগুন নিভাতে ব্যর্থ হয়। পরে আমতলী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার এসএম নুরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। কিন্তু পানি সংকট থাকায় আগুন নিভানোর কাজে বিঘ্ন ঘটে। পরে আমতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও আমাদের যৌথ প্রচেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, খবর পেয়ে রাত ১২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আলীকদমে নিখোঁজ আরেক পর্যটকের লাশ উদ্ধার
বান্দরবানের আলীকদমে নিখোঁজ হওয়া তিন পর্যটকের মধ্যে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা লাশটি স্মৃতি আক্তারের (২৪) বলে তাঁর সঙ্গী পর্যটকেরা শনাক্ত করেছেন।
আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আলীকদম উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে তৈনখালের আমতলি ঘাট এলাকায় ভাসমান অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এ নিয়ে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হলো।
আলীকদম ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা আবদুর রহিম জানিয়েছেন, সকালে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে লাশের সংবাদ পাওয়া যায়। আমতলি ঘাট থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বেঁচে ফিরে আসা ১৯ পর্যটককে আলীকদম থানায় রাখা হয়েছে।
পর্যটকদের মধ্যে রাহাত হোসেন নামের একজন জানান, আজকে উদ্ধার হওয়া লাশটি স্মৃতি আক্তারের। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায়। স্মৃতি আক্তার ও মো. হাসান পর্যটন ব্যবস্থাপনা সংস্থা ট্যুর এক্সপার্টের সহপরিচালক। তাঁদের ব্যবস্থাপনায় এই ভ্রমণ আয়োজিত হয়।
৮ জুন দুটি দলে ৩৩ জন পর্যটক আলীকদম ও থানচি উপজেলার মধ্যবর্তী দুর্গম ক্রিস্টং পাহাড়ে গিয়েছিলেন। পাঁচ দিনের ভ্রমণে এক দলে ১১ জন ও তিন দিনের ভ্রমণের আরেক দলে ২২ জন পর্যটক ছিলেন। গত বুধবার তিন দিনের ভ্রমণ শেষে ২২ জনের দলটি ফিরে আসার পথে প্রবল বৃষ্টিতে হঠাৎ শামুকঝিরি ঝরনায় পাহাড়ি ঢল নামে। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন ফিরে এলেও জুবাইরুল, হাসান ও স্মৃতি পেছনের দিকে থাকায় নিখোঁজ হন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজ তিন পর্যটকের মধ্যে আজ স্মৃতি আক্তার ও গতকাল জুবাইরুল ইসলামের লাশ পাওয়া গেছে। লাশ দুটি বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। মো. হাসানের লাশ এখনো পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিখোঁজ তিনজনকে শনাক্তের জন্য মানবিক কারণে ১৯ জন পর্যটককে থানায় রাখা হয়েছে। তাঁরা না হলে নিখোঁজ তিনজনকে শনাক্ত করার কেউ থাকবে না।