দীর্ঘমেয়াদি ঋণমানে ‘এএএ’ শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে দেশের বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি ঋণমানের ক্ষেত্রে ‘এএএ’ সর্বোচ্চ মান। প্রথমবারের মতো প্রাইম ব্যাংক এই ঋণমান অর্জন করেছে। ব্যাংকটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ঋণমান যাচাইকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠান প্রাইম ব্যাংকের গত কয়েক বছরের আর্থিক বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনা করে ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ বা সিআরএবি ব্যাংকটিকে এই ঋণমান দিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি ঋণমানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মানে উন্নীত হওয়ার পাশাপাশি স্বল্পমেয়াদি ঋণমানেও আগের বছরের মতো সর্বোচ্চ মান এসটি–১ ধরে রেখেছে প্রাইম ব্যাংক। অর্থাৎ স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি উভয় ক্ষেত্রেই প্রাইম ব্যাংক এখন সর্বোচ্চ ঋণমানের একটি ব্যাংক। 

ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী একটি ব্যাংক দীর্ঘমেয়াদি ঋণমানে ‘এএএ’ মানে উন্নীত হতে হলে ওই ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকতে হয়। আর মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত বা সিএআর থাকতে হয় সাড়ে ১২ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া আমানত ও মুনাফায় ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি থাকতে হয়। আমানত ও মুনাফার প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে পুরো খাতের প্রবৃদ্ধিকেও বিবেচনায় নেওয়া হয় ঋণমান যাচাইয়ে। 

ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান সিআরএবির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি ঋণমানে প্রাইম ব্যাংকের ‘এএএ’ মানে উন্নীত হওয়ার অর্থ হচ্ছে—দীর্ঘ মেয়াদে এই ব্যাংকে বিনিয়োগ বা অর্থ জমা রাখা নিরাপদ। ব্যাংকের বর্তমান অবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি এই ব্যাংকে অর্থ জমা রাখলে তা সময়মতো ফেরত পাওয়া যাবে। একইভাবে স্বল্পমেয়াদি ঋণমানে সর্বোচ্চ মান বজায় রাখায় প্রাইম ব্যাংকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ অনেকটাই নিরাপদ। 

প্রাইম ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে প্রাইম ব্যাংকের সর্বোচ্চ ঋণমান প্রাপ্তি মূলত তিন দশক ধরে ব্যাংকটির আর্থিক সক্ষমতা, দায়িত্বশীল ব্যাংকিং এবং বিশ্বস্ততারই প্রতিফলন। প্রাইম ব্যাংকের শক্তিশালী মূলধন–কাঠামো, বহুমাত্রিক ঋণ পোর্টফোলিও, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিং এবং স্বল্প ব্যয়ে স্থিতিশীল আমানত–কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে এই ঋণমান অর্জিত হয়েছে। 

এ বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা  (সিইও) হাসান ও.

রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন দশক ধরে আর্থিক দায়িত্বশীলতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার কারণে প্রাইম ব্যাংকের প্রতি গ্রাহক এখন বেশ আস্থাশীল। তারই প্রতিফলন এই ঋণমানে প্রকাশ পেয়েছে। ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে প্রাইম ব্যাংক শৃঙ্খলা, সুশাসন ও গ্রাহকসেবার প্রতীক হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। আগামী দিনগুলোতেও আমরা এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ 

প্রাইম ব্যাংক দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একটি ব্যাংক। এটি ২০০০ সালে দেশের প্রধান শেয়রবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে সমাপ্ত আর্থিক বছর শেষে ব্যাংকটি প্রকৃত মুনাফা করেছে ৭৪৫ কোটি টাকা। আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে ব্যাংকটির মুনাফার পরিমাণ ছিল ৪৮৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রাইম ব্যাংকের মুনাফা ২৬১ কোটি টাকা বা ৫৪ শতাংশ বেড়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঋণম ন য চ আর থ ক স বল প উন ন ত বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ