‘ভিলা পার্ককে আমাদের দুর্গে পরিণত করার চেষ্টা করব’
Published: 15th, April 2025 GMT
অ্যাস্টন ভিলা সবশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল খেলেছিল ১৯৮২ সালে। এরপর আর ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের আসরের শেষ চারে উঠার সৌভাগ্য হয়নি লন্ডনের ক্লাবটির। চলমান চ্যাম্পিয়নস লিগে আবারো সেমিফাইনাল খেলার লক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে নিজেদের ডেরা ভিলা পার্কে পিএসজিকে আতিথ্য দিবে অ্যাস্টন ভিলা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে পার্ক দে প্রিন্সে লুইস এনরিকের পিএসজি ইংলিশ ক্লাব ভিলাকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল। ভিলাকে সেমিফাইনালে উঠতে হলে কমপক্ষে দুই গোলের ব্যবধানে জিততেই হবে।
পিএসজি ইতোমধ্যে তাদের লিগ ওঁয়ান শিরোপা নিশ্চিত করেছে। ফলে ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টেই পুরো মনোযোগ তাদের। গত মৌসুমে তারা সেমিফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে বাদ পড়েছিল। লুইস এনরিকে ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ফরাসি ক্লাবটির প্রথম ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০২০ সালের ফাইনালে টমাস টুখেলের পিএসজি হেরেছিল হান্সি ফ্লিকের বায়ার্ন মিউনিখের কাছে।
আরো পড়ুন:
ছয় ম্যাচ হাতে রেখেই পিএসজির শিরোপা জয়
অ্যানফিল্ডে রূপকথার গল্প লিখল পিএসজি
ভিলা কোচ উনাই এমেরি প্রথম লেগের ফলাফল সত্ত্বেও কোচ হিসেবে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। বাস্তবতা হচ্ছে দুই দলের মাঝে বিস্তর ফারাক। যা প্রথম লেগের খেলায় স্পষ্ট ছিল। ভিলা নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতে পারে এই ভেবে যে তারা আরো ২-৩টি গোল হজম করেনি বলে।
পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে এগিয়ে থাকার পরও ভিলাকে হালকাভাবে দেখছেন না, “লক্ষ্য খুব পরিষ্কার, ম্যাচের মধ্যে অ্যাস্টন ভিলা যেসব সমস্যা তৈরি করবে, তা সমাধান করা এবং ম্যাচ জেতা। ম্যাচ শেষে শুধুমাত্র একটি দল সেমিফাইনালে উঠবে। এটাই এই প্রতিযোগিতাকে এত রোমাঞ্চকর করে তোলে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নেই, বরং দৃঢ় সংকল্প আছে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার।”
অন্যদিকে ভিলা কোচ এমেরি বলেন, পিএসজির বিপক্ষে খেলাটা কতটা কঠিন হবে তা তারা জানেন, “আমাদের যতটা সম্ভব ভালোভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বুঝতে হবে মাঠে কীভাবে ব্যক্তিগত দ্বৈরথগুলো জেতা যায়। প্রথম লেগে ওরা তাদের শক্তির প্রমাণ দিয়েছে, তবে আমরাও আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সামর্থ্য দেখিয়েছি। এখন আমরা ঘরের মাঠে খেলব এবং ভিলা পার্ককে আমাদের দুর্গে পরিণত করার চেষ্টা করব। আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে, এবং সেই মানসিকতা দেখাতে হবে।”
অ্যাস্টন ভিলা ১৯৮২ ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে ১-০ গোলে হারিয়ে তাদের একমাত্র ইউরোপিয়ান শিরোপা জিতেছিল।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প এসজ চ য ম প য়নস ল গ অ য স টন ভ ল স ম ফ ইন ল ইউর প য় ন প রথম ল গ আম দ র প এসজ
এছাড়াও পড়ুন:
ইউনূস-তারেক সফল বৈঠকে স্বপ্নভঙ্গ হলো যাদের
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের বৈঠক দেশের রাজনীতির মোড় অনেকটাই ঘুরিয়ে দিয়েছে। নানা অনিশ্চয়তা, শঙ্কা, গুজব রাজনীতিকে ঘিরে ধরেছিল। একধরনের অনাস্থার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এ বৈঠক অনিশ্চয়তা, শঙ্কার কালো মেঘ সরিয়ে দিয়ে রাজনীতিতে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যায়।
পারস্পরিক যে কাদা ছোড়াছুড়ি, দুর্নাম করার রাজনীতি, সেখান থেকে বেরিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ তৈরিতে সহায়তা করবে অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক। নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির কিছুদিন ধরে টানাপোড়েন চললেও বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে হয়েছে। এটা আমাদের রাজনীতিতে উদাহরণ হয়ে থাকবে।
বৈঠকটি সারা দেশের মানুষের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। এখন মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। মানুষের ধারণাকে বাস্তবে রূপদান করার দায়িত্ব সরকারের।
বিএনপি এর আগে ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইলেও কিছুটা সরে এসে ফেব্রুয়ারির সময়সীমাকে মেনে নিয়েছে। সরকারও এপ্রিল থেকে সরে এসে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছে। উভয় পক্ষেরই কিছুটা সরে আসা, কিছুটা ছাড় দেওয়া—এটাই আমাদের রাজনীতি থেকে একদম হারিয়ে গিয়েছিল।
রাজনীতি মানেই প্রতিপক্ষের সঙ্গে শত্রুতা করতে হবে, এমন পরিস্থিতিতে আমাদের রাজনীতি পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু শুধু কথায় কথায় উদার হলে হবে না। কাজে-কর্মেও উদারতা দেখাতে হবে। লন্ডনের বৈঠকে সেই উদারতার কিছু নমুনা আমরা দেখতে পেলাম।
আরও পড়ুনলন্ডনে ইউনূস-তারেকের আলোচনায় বিএনপিরই কি জিত১৩ জুন ২০২৫বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে আলোচনার ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে। তা নিয়ে আপাতত আলোচনার কিছু নেই। আমরা বরং রাজনীতিতে এ বৈঠকের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করি। প্রথমত, এ বৈঠক সারা দেশের মানুষকে আশান্বিত করলেও রাজনীতির কোনো কোনো পক্ষ বা ব্যক্তি হতাশ হয়েছেন।
এসব গোষ্ঠীর মূল কাজ যেন বিএনপিকে যে কোনোভাবে ঠেকানো। ব্যক্তি পর্যায়ে যারা হতাশ হয়েছেন তাদের মধ্যে রাজনীতিবিদ ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা আছেন। তাঁদের মূল লক্ষ্যই ছিল, যেকোনো প্রকারে বিএনপির রাজনীতিকে প্রতিহত করা। এ অংশ চাইছে না বিএনপির রাজনীতি সামনের দিকে এগিয়ে যাক। বিএনপির নেতৃত্বে নতুন করে বাংলাদেশের বিনির্মাণ হোক।
কেউ যদি সহজ রাজনীতির পথ পরিহার করে অহেতুক কুটিল ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে, তবে তারা নিজেরাই রাজনীতি থেকে হারিয়ে যায়। আওয়ামী লীগ ও জাসদ আমাদের সামনে রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।বিএনপি যে শত ভাগ শুদ্ধ ও সঠিক রাজনীতি করছে, এটা বলা যাবে না। ভুল-ত্রুটি বিএনপিরও আছে। স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল, হত্যাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। বিএনপি নিজ দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এই পর্যন্ত চার হাজারের মতো নেতা-কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে এসব কর্মকাণ্ডের জন্য। দেশের ইতিহাসে কোনো দল নিজেদের এতসংখ্যক নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেনি। এ ধরনের অপরাধ শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীরাই করছেন না। বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরাও এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে এটা আমাদের রাজনৈতিক অপসংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।
এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা লাগবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে। এটা সময়সাপেক্ষ বিষয়। বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের রাজনীতি এই অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তাই রাজনৈতিক সরকার লাগবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে। কারণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।
এ ধরনের পরিস্থিতি শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এর সঙ্গে রাজনৈতিক শক্তিরও প্রয়োজন হয়। বিকল্প অর্থনৈতিক কর্মসূচিও লাগে। এ জন্যই বিএনপি বারবার নির্বাচনের কথা বলে আসছে। আমরা মনে করি, নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সার্বিক অবস্থান উন্নতি ঘটবে। বিএনপির বিকল্প অর্থনৈতিক পরিকল্পনা আছে।
বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণা