অ্যাস্টন ভিলা সবশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল খেলেছিল ১৯৮২ সালে। এরপর আর ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের আসরের শেষ চারে উঠার সৌভাগ্য হয়নি লন্ডনের ক্লাবটির। চলমান চ্যাম্পিয়নস লিগে আবারো সেমিফাইনাল খেলার লক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে নিজেদের ডেরা ভিলা পার্কে পিএসজিকে আতিথ্য দিবে অ্যাস্টন ভিলা।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে পার্ক দে প্রিন্সে লুইস এনরিকের পিএসজি ইংলিশ ক্লাব ভিলাকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল। ভিলাকে সেমিফাইনালে উঠতে হলে কমপক্ষে দুই গোলের ব্যবধানে জিততেই হবে।

পিএসজি ইতোমধ্যে তাদের লিগ ওঁয়ান শিরোপা নিশ্চিত করেছে। ফলে ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টেই পুরো মনোযোগ তাদের। গত মৌসুমে তারা সেমিফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে বাদ পড়েছিল। লুইস এনরিকে ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ফরাসি ক্লাবটির প্রথম ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০২০ সালের ফাইনালে টমাস টুখেলের পিএসজি হেরেছিল হান্সি ফ্লিকের বায়ার্ন মিউনিখের কাছে।

আরো পড়ুন:

ছয় ম্যাচ হাতে রেখেই পিএসজির শিরোপা জয়

অ্যানফিল্ডে রূপকথার গল্প লিখল পিএসজি

ভিলা কোচ উনাই এমেরি প্রথম লেগের ফলাফল সত্ত্বেও কোচ হিসেবে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। বাস্তবতা হচ্ছে দুই দলের মাঝে বিস্তর ফারাক। যা প্রথম লেগের খেলায় স্পষ্ট ছিল। ভিলা নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতে পারে এই ভেবে যে তারা আরো ২-৩টি গোল হজম করেনি বলে।

পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে এগিয়ে থাকার পরও ভিলাকে হালকাভাবে দেখছেন না, “লক্ষ্য খুব পরিষ্কার, ম্যাচের মধ্যে অ্যাস্টন ভিলা যেসব সমস্যা তৈরি করবে, তা সমাধান করা এবং ম্যাচ জেতা। ম্যাচ শেষে শুধুমাত্র একটি দল সেমিফাইনালে উঠবে। এটাই এই প্রতিযোগিতাকে এত রোমাঞ্চকর করে তোলে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নেই, বরং দৃঢ় সংকল্প আছে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার।”

অন্যদিকে ভিলা কোচ এমেরি বলেন, পিএসজির বিপক্ষে খেলাটা কতটা কঠিন হবে তা তারা জানেন, “আমাদের যতটা সম্ভব ভালোভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বুঝতে হবে মাঠে কীভাবে ব্যক্তিগত দ্বৈরথগুলো জেতা যায়। প্রথম লেগে ওরা তাদের শক্তির প্রমাণ দিয়েছে, তবে আমরাও আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সামর্থ্য দেখিয়েছি। এখন আমরা ঘরের মাঠে খেলব এবং ভিলা পার্ককে আমাদের দুর্গে পরিণত করার চেষ্টা করব। আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে, এবং সেই মানসিকতা দেখাতে হবে।”

অ্যাস্টন ভিলা ১৯৮২ ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে ১-০ গোলে হারিয়ে তাদের একমাত্র ইউরোপিয়ান শিরোপা জিতেছিল।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প এসজ চ য ম প য়নস ল গ অ য স টন ভ ল স ম ফ ইন ল ইউর প য় ন প রথম ল গ আম দ র প এসজ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হই হই অবস্থা, প্রস্তুতি না নেওয়া আত্মঘাতী

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও প্রস্তুতি নিয়ে রাখা দরকার বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হই হই অবস্থার মধ্যে রয়ে গেছে। সকালের খবরে দেখলাম, হয়তো গুজব, যে আজকেই শুরু হয়ে যাবে যুদ্ধ। প্রস্তুতি না নেওয়াটা আত্মঘাতী। আধাআধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই।’

গতকাল বুধবার রাজধানীর বীরউত্তম এ কে খন্দকার ঘাঁটিতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা। খবর বিবিসি বাংলা ও বাসসের।

নিজেকে ‘যুদ্ধবিরোধী মানুষ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক– এটা আমরা কামনা করি না।’ যুদ্ধের প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়– এ রকম ধারণার বিষয়ে ঘোরতর আপত্তির কথা জানান ড. ইউনূস।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রতি যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত আধুনিক বিমানবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্ব আগামী দিনের নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার মূল ভিত্তি উল্লেখ করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বিমানবাহিনীর সব সদস্যের প্রতি যুগোপযোগী ক্ষমতা ও দক্ষতা অর্জন এবং পেশাগত ও কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতি অব্যাহত মনোযোগ বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা একটা নিরাপদ, উন্নত ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার, রাডার সংযোজনের জন্য বিমানবাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে সরকার।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের গুরুত্ব অপরিসীম। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা নিয়মিতভাবে বহুমাত্রিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও অনুশীলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জ্ঞান-দক্ষতাকে যুগোপযোগী করতে সদা সচেষ্ট রয়েছেন।’

তিনি দেশের বিমানবন্দরগুলোর সুষ্ঠু পরিচালনা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বিমানবাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

মহড়া কেবল একটি সাময়িক অনুশীলনই নয় উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিমানবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার পরিচয় বহন করে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী সময়োপযোগী পরিকল্পনা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কার্যকর আকাশ প্রতিরক্ষার পাশাপাশি বিস্তীর্ণ সমুদ্র এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। 

এর আগে বিমানঘাঁটিতে এসে পৌঁছলে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান। অনুষ্ঠানস্থলে বিমানবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তাঁকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর বিতরণ প্রধান উপদেষ্টার

গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত ঘর বিতরণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এসব ঘর বিতরণ করেন।

ওই বন্যায় অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম। অসংখ্য বাড়িঘর সম্পূর্ণরূপে ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নির্মাণের সামর্থ্য নেই, এ রকম তিনশ পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘর পুনর্নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি ও চট্টগ্রামে ৩০টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। দুটি কক্ষ, কমন স্পেস, শৌচাগার, রান্নাঘরসহ বারান্দা রয়েছে। ৪৯২ বর্গফুট আয়তনের ঘরে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৯৪ টাকা এবং ৫০০ বর্গফুটের ঘরে প্রাক্কলিত ব্যয় ৭ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৮ টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেনাবাহিনী ঘরগুলো নির্মাণ করেছে।

অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান বক্তব্য দেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত ও বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বন্দর ব্যবস্থাপনায় এমন অপারেটরদের সম্পৃক্ত করতে হবে, যাতে এগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

বৈঠকে বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘দেশের নৌবন্দরগুলোর বর্তমান হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বছরে ১ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ইউনিট, যা সঠিক পরিকল্পনা ও কর্মপন্থার মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে ৭ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন ইউনিটে উন্নীত করা সম্ভব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ