চাইলেই তো আর সব সময় রূপকথার প্রত্যাবর্তন লিখা যায় না। ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে  রিয়াল মাদ্রিদের চেষ্টার কমতি ছিল না। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগে এই মৌসুমটা লস ব্ল্যাঙ্কসদের না। তাই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখা হলো না কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগে আর্সেনালের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরে যায় রিয়াল। অথচ সেমিফানালে পৌঁছাতে হলে ৪-০ ব্যবধানে ম্যাচ জিততে হতো মাদ্রিদের সাদাদের। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ অগ্রগামিতায় শেষ চারে উঠে গেল আর্সেনাল।

সবশেষ ১৬ বছর আগে (২০০৯ সালে) আর্সেনাল চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল খেলতে পেরেছিল। অন্যদিকে রিয়াল সবশেষ এই টুর্নামেন্টের শেষ চারে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল ২০২০ সালের কোভিড-১৯ এর সময়ে।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ভিনিসিয়ুস–বেলিংহ্যামরা গোল করার চেষ্টার কমতি রাখলেন না। তবে তাদের আক্রমণ রুখে দিয়েছে আর্সেনালের জমাট রক্ষণ। পাল্টা আক্রমণে আর্সেনালও রিয়ালের রক্ষণভাগকে বেশ ভুগিয়েছিল।
ম্যাচের শুরুতেই ভিনির ক্রস থেকে গানার্সদের জালে বল পাঠান কিলিয়ান এমবাপে। অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর রিয়ালের রাউল আসেনসিও নিজেদের বক্সে মিকেল মেরিনোকে ফেলে দেন। ভিএআরের কল্যাণে পেনাল্টি পায় আর্সেনাল। তবে বুয়াকো সাকার নেওয়া পানেনকা শট ঠেকিয়ে স্বাগতিকদের জাগিয়ে তোলেন গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া।

ম্যাচের ২৩ মিনিটে ডেকলান রাইস নিজেদের বক্সে এমবাপের জার্সি টেনে ধরলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান ফরাসি রেফারি লেতেক্সিয়ে। রাইসকে হলুদ কার্ডও দেখান। তবে ভিএআর দেখে আবার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন রেফারি।

প্রথমার্ধ গোল শূন্য যায়, বিরতির পরও জালের সন্ধান পাচ্ছিল না রিয়াল। আনচেলত্তি ৬১ মিনিটে তিন বদলি নামালেও, উল্টো ৬৫ মিনিটে গোল করে বসেন সফরকারী দলের উইঙ্গার সাকা। মিনিট দুয়েকের মাঝেই অবশ্য গোল শোধ করেন ভিনি।

রিয়ালের সমতাসূচক গোলের পরও দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ অগ্রগামিতায় এগিয়ে ছিল আর্সেনাল। একাদশের সবাই প্রায় আক্রমণাত্বক খেলা শুরু করে। সেই সুযোগে যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে মার্তিনেল্লি একা পেয়ে যান কোর্তোয়াকে। সেই সুযোগে গোল করতে ভুল করেননি এই ব্রাজিলিয়ান।

সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ২৯ এপ্রিল ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে পিএসজিকে আতিথ্য দিবে আর্সেনাল। পার্ক দে প্রিন্সে ফিরতি লেগ অনুষ্ঠিত হবে ৭ মে।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর স ন ল

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ