আর্সেনালের বিপক্ষে রিয়ালের রূপকথার গল্প লেখা হলো না
Published: 17th, April 2025 GMT
চাইলেই তো আর সব সময় রূপকথার প্রত্যাবর্তন লিখা যায় না। ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদের চেষ্টার কমতি ছিল না। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগে এই মৌসুমটা লস ব্ল্যাঙ্কসদের না। তাই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখা হলো না কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগে আর্সেনালের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরে যায় রিয়াল। অথচ সেমিফানালে পৌঁছাতে হলে ৪-০ ব্যবধানে ম্যাচ জিততে হতো মাদ্রিদের সাদাদের। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ অগ্রগামিতায় শেষ চারে উঠে গেল আর্সেনাল।
সবশেষ ১৬ বছর আগে (২০০৯ সালে) আর্সেনাল চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল খেলতে পেরেছিল। অন্যদিকে রিয়াল সবশেষ এই টুর্নামেন্টের শেষ চারে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল ২০২০ সালের কোভিড-১৯ এর সময়ে।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ভিনিসিয়ুস–বেলিংহ্যামরা গোল করার চেষ্টার কমতি রাখলেন না। তবে তাদের আক্রমণ রুখে দিয়েছে আর্সেনালের জমাট রক্ষণ। পাল্টা আক্রমণে আর্সেনালও রিয়ালের রক্ষণভাগকে বেশ ভুগিয়েছিল।
ম্যাচের শুরুতেই ভিনির ক্রস থেকে গানার্সদের জালে বল পাঠান কিলিয়ান এমবাপে। অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর রিয়ালের রাউল আসেনসিও নিজেদের বক্সে মিকেল মেরিনোকে ফেলে দেন। ভিএআরের কল্যাণে পেনাল্টি পায় আর্সেনাল। তবে বুয়াকো সাকার নেওয়া পানেনকা শট ঠেকিয়ে স্বাগতিকদের জাগিয়ে তোলেন গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া।
ম্যাচের ২৩ মিনিটে ডেকলান রাইস নিজেদের বক্সে এমবাপের জার্সি টেনে ধরলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান ফরাসি রেফারি লেতেক্সিয়ে। রাইসকে হলুদ কার্ডও দেখান। তবে ভিএআর দেখে আবার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন রেফারি।
প্রথমার্ধ গোল শূন্য যায়, বিরতির পরও জালের সন্ধান পাচ্ছিল না রিয়াল। আনচেলত্তি ৬১ মিনিটে তিন বদলি নামালেও, উল্টো ৬৫ মিনিটে গোল করে বসেন সফরকারী দলের উইঙ্গার সাকা। মিনিট দুয়েকের মাঝেই অবশ্য গোল শোধ করেন ভিনি।
রিয়ালের সমতাসূচক গোলের পরও দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ অগ্রগামিতায় এগিয়ে ছিল আর্সেনাল। একাদশের সবাই প্রায় আক্রমণাত্বক খেলা শুরু করে। সেই সুযোগে যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে মার্তিনেল্লি একা পেয়ে যান কোর্তোয়াকে। সেই সুযোগে গোল করতে ভুল করেননি এই ব্রাজিলিয়ান।
সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ২৯ এপ্রিল ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে পিএসজিকে আতিথ্য দিবে আর্সেনাল। পার্ক দে প্রিন্সে ফিরতি লেগ অনুষ্ঠিত হবে ৭ মে।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি
দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?
আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।
২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।
গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।
নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।
৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।