জেনারেল এরশাদের পতনের পর দেশে প্রথমবারের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সরকারের অধীনে দেশে প্রথমবারের মতো অবাধ ও কেন্দ্র দখলমুক্ত পরিবেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন জনমনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণার জন্ম দেয়। সেই সঙ্গে জন্ম দেয় নতুন প্রত্যাশা– নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি আস্থা। কিন্তু ১৯৯০-৯১ সালের এই ব্যবস্থা সংবিধানে স্থায়ী রূপ না পাওয়ায় জনগণ আশাহত। পরিষ্কার হয়ে ওঠে– পরবর্তী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়; হবে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে।

শুরু হয় বৈপরীত্যের টানাপোড়েন। সরকারে থাকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) অনড় অবস্থান নেয় রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচনের। অন্যদিকে বিরোধী আসনে থাকা পরস্পরবিরোধী দুই রাজনৈতিক শক্তি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী সমান্তরালভাবে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে। আন্দোলনকে অগ্রাহ্য করে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি হয়ে যায় একতরফা নির্বাচন। আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি ও তাদের সমর্থনে আরও অনেক দল নির্বাচন বয়কট করে। বিএনপি ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে শুধু ফ্রিডম পার্টি একটি মাত্র আসন পায়। নির্বাচনের পর আন্দোলন আরও তীব্র হয়। মাত্র ১২ দিন স্থায়ী ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে এবং বিএনপি সেই সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়।
এখনও প্রশ্ন ওঠে, তখন কি বিএনপির দলীয় দর্শন ভুল ছিল? জবাব একটিই– না। পাঁচ বছরের জন্য একটি রাজনৈতিক দলের হাতে শাসন ক্ষমতা তুলে দিয়ে নির্বাচনের সময় তাকে অবিশ্বাস রাজনীতির প্রতিই এক ধরনের অবিশ্বাস। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের টগর বোষ্টমী আর নন্দ মিস্ত্রীর সংসারের মতো; জাতসচেতন টগর বোষ্টমী বলতে পারে, ‘‍‍‌বিশ বচ্ছর ঘর করছি বটে, কিন্তু একদিনের তরে হেঁশেলে ঢুকতে দিয়েচি?’ অর্থাৎ সংসার করলে জাত যায় না। জাত যায় শুধু সূত্রধর স্বামীকে হেঁশেলে ঢুকতে দিলে! সরকার ব্যবস্থায় পুরো পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রের সব দায়দায়িত্ব দেওয়া যায়, শুধু আস্থায় রাখা যায় না নির্বাচনকালে!

২০০১ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শান্তিপূর্ণভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিয়েই সদ্য ক্ষমতা ছাড়া রাজনৈতিক দলকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলে। ক্ষমতা হারানো দল আওয়ামী লীগ অনুভব করে টগর বোষ্টমীর দর্শন– হেঁশেলে অন্য কাউকে ঢুকতে দিতে নেই। নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। শুরু হয় নবম জাতীয় সংসদের জন্য নিজেদের অনুকূল তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রস্তুতি। শেষে রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ড.

ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে প্রধান উপদেষ্টা করে সরকার গঠন হলেও শেষ রক্ষা হয় না। নাজেল হয় ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে এক-এগারোর সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। পরবর্তী নির্বাচনে বিজয়ী এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম প্রবক্তা আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে উধাও করে দেয় খোদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধ্যায়টি। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নামে চলে তামাশা। নির্বাচন নিয়ে তামাশার মাশুল দিতে ২০২৪ সালে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে নজিরবিহীন পতন ঘটে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের।

যে কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সরকার গঠন করে রাজনৈতিক দল। সরকারের আচরণ কেমন হবে-না হবে, তা ঠিক করার কথা রাজনৈতিক দলগুলোর। কিন্তু গত সাড়ে ১৫ বছর একটি দলের স্বৈরাচারী শাসনের ফলে অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা দায়িত্ব নিয়েছেন রাজনৈতিক খেলোয়াড়দের খেলার নিয়ম নির্ধারণ করে দিতে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন দেশে ভালো নির্বাচনের প্রত্যাশায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের সুপারিশ করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ তিন থেকে বেড়ে হবে চার মাস। এই চার মাসে জাতীয় ও স্থানীয় সব নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এখন যেহেতু সব রাজনৈতিক দলই রাজক্ষমতার বাইরে, তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রস্তাব হয়তো সবারই মনঃপূত। 

মজাদার বৈপরীত্য হচ্ছে, নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সুপারিশ করে একই প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা না করতে যুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন, ‘বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক সরকারের প্রতিনিধি হওয়ায় তাদের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলে প্রচ্ছন্নভাবে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমের ওপর সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।… বিশেষত সরকারকে অসন্তুষ্ট করতে পারে, নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে বাস্তবায়ন করা দুরূহ হয়ে পড়ে।’ তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন কি ধরেই নিয়েছে, প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন ভবিষ্যতে নির্বাচন অনুষ্ঠান বিষয়ে ভিন্ন তরিকায় চলতে পারে? ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশন এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যা সম্ভাব্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অসন্তুষ্ট করতে পারে? যদি ভবিষ্যতের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের এ আশঙ্কাই থাকে, তাহলে সে ক্ষেত্রে নির্বাচন আয়োজনের একমাত্র উপায় হতে পারে ‘গায়েবি সহায়তা’।
ভারতে ১৯৭৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও তাঁর পুত্র সঞ্জয় গান্ধী তাদের মৌরসি আসন রায়বেরিলি ও আমেথিতে পরাজিত হন। ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেস ক্ষমতাচ্যুত হয়। ২০২১ সালে পশ্চিম বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ভূমিধস বিজয় পেলেও তিনি নিজের রাজনৈতিক ভিত্তিভূমি নন্দীগ্রামে হেরে গেছেন। অথচ আমাদের নির্বাচনকালে অরাজনৈতিকদের হাতে ক্ষমতা সমর্পণ করেও নির্বাচনের পরে সূক্ষ্ম কারচুপি, স্থূল কারচুপি, ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং– নানাবিধ বিশেষণ ব্যবহারে সময়ক্ষেপণ করি না। সিস্টেম নয়, ব্যক্তিই নিজেকে নিয়ে যায় স্বৈরাচারের ভূমিকায়। হিটলার, মুসোলিনি বারবার হয় না; কেউ কেউ হয়ে যায়। উৎকৃষ্ট গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাতেও ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হতে পারেন।
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশের পথ সৃজনের সুযোগ এসেছে। আমরা গণতান্ত্রিক বিকাশের পথ খুঁজে পাচ্ছি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আড়ালে। হয়তো একদিন দাবি উঠবে– তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস না; ছয় মাস অথবা এক বছর হোক। এখনই কোনো কোনো প্রান্তে শোনা যাচ্ছে ধ্রুপদি সংগীতের টুংটাং। গণতন্ত্রের প্রকৃত বিকাশ না হলে কোনো একদিন আরও জোর গলায় আওয়াজ উঠতে পারে– ‘‍‌‌‌‍তার চেয়ে আমাদের ফিরে দাও রাজবংশ, রাজকীয়/ অলীক বিশ্বাস’।

আ ক ম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী: কলাম লেখক; অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত গণত ন ত র ক সরক র গঠন ক সরক র র র র মত ন র পর ক ষমত আওয় ম ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হই হই অবস্থা, প্রস্তুতি না নেওয়া আত্মঘাতী

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও প্রস্তুতি নিয়ে রাখা দরকার বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হই হই অবস্থার মধ্যে রয়ে গেছে। সকালের খবরে দেখলাম, হয়তো গুজব, যে আজকেই শুরু হয়ে যাবে যুদ্ধ। প্রস্তুতি না নেওয়াটা আত্মঘাতী। আধাআধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই।’

গতকাল বুধবার রাজধানীর বীরউত্তম এ কে খন্দকার ঘাঁটিতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা। খবর বিবিসি বাংলা ও বাসসের।

নিজেকে ‘যুদ্ধবিরোধী মানুষ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক– এটা আমরা কামনা করি না।’ যুদ্ধের প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়– এ রকম ধারণার বিষয়ে ঘোরতর আপত্তির কথা জানান ড. ইউনূস।

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রতি যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত আধুনিক বিমানবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্ব আগামী দিনের নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার মূল ভিত্তি উল্লেখ করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বিমানবাহিনীর সব সদস্যের প্রতি যুগোপযোগী ক্ষমতা ও দক্ষতা অর্জন এবং পেশাগত ও কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতি অব্যাহত মনোযোগ বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা একটা নিরাপদ, উন্নত ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’

তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, এয়ারক্রাফ্ট ক্যারিয়ার, রাডার সংযোজনের জন্য বিমানবাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে সরকার।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের গুরুত্ব অপরিসীম। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা নিয়মিতভাবে বহুমাত্রিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও অনুশীলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জ্ঞান-দক্ষতাকে যুগোপযোগী করতে সদা সচেষ্ট রয়েছেন।’

তিনি দেশের বিমানবন্দরগুলোর সুষ্ঠু পরিচালনা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বিমানবাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

মহড়া কেবল একটি সাময়িক অনুশীলনই নয় উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এটি আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিমানবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার পরিচয় বহন করে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনী সময়োপযোগী পরিকল্পনা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং কার্যকর আকাশ প্রতিরক্ষার পাশাপাশি বিস্তীর্ণ সমুদ্র এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। 

এর আগে বিমানঘাঁটিতে এসে পৌঁছলে প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান। অনুষ্ঠানস্থলে বিমানবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তাঁকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর বিতরণ প্রধান উপদেষ্টার

গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশেষ আবাসন প্রকল্পে নির্মিত ঘর বিতরণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এসব ঘর বিতরণ করেন।

ওই বন্যায় অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম। অসংখ্য বাড়িঘর সম্পূর্ণরূপে ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নির্মাণের সামর্থ্য নেই, এ রকম তিনশ পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘর পুনর্নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ফেনীতে ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি ও চট্টগ্রামে ৩০টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। দুটি কক্ষ, কমন স্পেস, শৌচাগার, রান্নাঘরসহ বারান্দা রয়েছে। ৪৯২ বর্গফুট আয়তনের ঘরে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৯৪ টাকা এবং ৫০০ বর্গফুটের ঘরে প্রাক্কলিত ব্যয় ৭ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৮ টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেনাবাহিনী ঘরগুলো নির্মাণ করেছে।

অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান বক্তব্য দেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত ও বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বন্দর ব্যবস্থাপনায় এমন অপারেটরদের সম্পৃক্ত করতে হবে, যাতে এগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

বৈঠকে বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘দেশের নৌবন্দরগুলোর বর্তমান হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বছরে ১ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ইউনিট, যা সঠিক পরিকল্পনা ও কর্মপন্থার মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে ৭ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন ইউনিটে উন্নীত করা সম্ভব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ