শরীরের যেমন সীমা আছে, তেমনি মনেরও ক্লান্তি আছে: সোহেল রানা
Published: 19th, April 2025 GMT
সোহেল রানা। কিংবদন্তি অভিনেতা ও প্রযোজক। রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। দুই মাধ্যমেই বর্ণিল ক্যারিয়ার তাঁর। কিন্তু সম্প্রতি অভিনয় ও রাজনীতি দুই মাধ্যম থেকেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কেন এ অবসরের ঘোষণা। তা নিয়েই কথা হয় সমকালের সঙ্গে।
সমকাল: অভিনয় ও রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত কেন?
সোহেল রানা: হঠাৎ কিছু না। সময় অনেক কিছুই শিখিয়ে দেয়। আমি প্রায় পাঁচ দশক ধরে কাজ করে আসছি– সিনেমা, প্রযোজনা, রাজনীতি সব মিলিয়ে জীবনের সিংহভাগ সময় ব্যস্ত থেকেছি। এখন বয়স হয়েছে। শরীরের যেমন সীমা আছে, তেমনি মনেরও ক্লান্তি আছে। এ বয়সে এসে মনে হচ্ছে, এখন থামার সময়। তাই থামলাম।
সমকাল: শারীরিক সমস্যার কারণেই এ সিদ্ধান্ত?
সোহেল রানা : বয়সই তো একটা বড় ফ্যাক্টর। আগের মতো তো এখন আর ১৬-১৮ ঘণ্টা শুটিং করার শক্তি নেই। ডাক পেলেই ছুটে যেতে পারব না। অনেক দিন ধরে অভিনয়েও নেই। নিয়মিত ডাক্তারদের পরামর্শে চলতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে পরিবারের চোখে চোখে থাকতে হয়। তারা কেউ চায় না আমি আর অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকি। এ ছাড়া আমি মনে করি, শরীর আর মন একসঙ্গে না থাকলে অভিনয়টা পরিপূর্ণ হয় না। কখনোই চাইনি দর্শক আমাকে দুর্বল দেখে মনে করুক, ‘উনি তো আগের মতো নেই।’ আমি চাই, সবাই যেন আমাকে মনে রাখে সেই সোহেল রানা হিসেবেই– যিনি আত্মবিশ্বাস নিয়ে চরিত্রে ডুবে যেতেন।
সমকাল: রাজনীতিও কি একই কারণে ছাড়লেন?
সোহেল রানা : আমি মূলত রাজনীতিরই লোক। ভালোবেসেই রাজনীতি করেছিলাম। মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি। কিন্তু রাজনীতি মানে শুধু ভালোবাসা নয়, এটা দায়িত্ব আর সিদ্ধান্তের জায়গা। এখন যেভাবে রাজনীতির গতিপথ বদলেছে, সেখানে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বয়সও সায় দিচ্ছে না। আমিও বেশ ক্লান্ত, তাই সরে দাঁড়ানোই শ্রেয় মনে করছি।
সমকাল: এই বিদায় কি স্থায়ী?
সোহেল রানা : আমি বলব– হ্যাঁ, স্থায়ী। তবে শিল্পী হিসেবে যদি কখনও এমন কোনো কিছুর জন্য ডাক আসে, যেটা আমার হৃদয়ের খুব কাছের, যেটা দিয়ে কিছু বলার থাকে, তাহলে ভেবে দেখব।
সমকাল: সবকিছু এভাবে ছেড়ে থাকতে কষ্ট হবে না?
সোহেল রানা : মানুষকে তো কষ্টের ওপর দিয়েই জীবনযাপন করতে হয়। পৃথিবীতে কেউ আছে যে, তার কষ্ট নেই। এখন যদি রাজনীতি ও অভিনয় দুটিই করি, তাহলেও তো কষ্ট হবে। জীবনের জন্য ঝুঁকিও থাকবে। আবার ছেড়ে থাকতেও কষ্ট হবে। তবে এখন যে বয়স, তাতে বিশ্রামে থাকাটাই আমার জন্য শ্রেয়। পরিবারও উৎকণ্ঠায় থাকবে না। কষ্ট আর ভালো থাকা মিলিয়েই থাকা হবে।
সমকাল: ক্যামেরার পেছনে বা অন্য কোনো ভূমিকায় থাকতে চান?
সোহেল রানা : এখন ইচ্ছে করছে নিজের মতো করে বাঁচতে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে, পুরোনো সিনেমা দেখতে, বই পড়তে। তবে হ্যাঁ, তরুণদের যদি কিছু শেখাতে পারি, গাইড করতে পারি– তাতে ভালো লাগবে। ইন্ডাস্ট্রি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ হলে অবশ্যই সেটা করতে চেষ্টা করব।
সমকাল: দর্শকদের উদ্দেশে কিছু বলার আছে?
সোহেল রানা : দর্শকই একজন শিল্পীর জীবনের মূলশক্তি। আপনারাই আমাকে ‘সোহেল রানা’ বানিয়েছেন। ভালোবাসা দিয়েছেন, সম্মান দিয়েছেন। আমার অভিনয় বা সিদ্ধান্তে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ। আমার অভিনীত সিনেমাগুলো যদি আপনাদের মনে এতটুকু জায়গা করে নিতে পারে, তবেই আমি সার্থক।
-
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত র জন ত সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।