ছাদ উড়ে যাওয়ার পরও চালিয়ে নেওয়া বাসের নিবন্ধন স্থগিত
Published: 19th, April 2025 GMT
দুর্ঘটনায় ছাদ উড়ে যাওয়ার পরও যাত্রীদের নিয়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার চালিয়ে নেওয়া বাসটির নিবন্ধন সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। একই সঙ্গে বাসটির মালিককে নিবন্ধন, ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স-টোকেন সনদ এবং চালকের লাইসেন্সসহ বিআরটিএর কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় বাসটির নিবন্ধন সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল এবং মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিআরটিএর উপপরিচালক সানাউল হকের সই করা এক চিঠিতে এই কথা বলা হয়।
বিআরটিএর মুন্সিগঞ্জ সার্কেলের সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, উল্লেখিত বাসটি ‘বরিশাল এক্সপ্রেস’ নামে চলাচল করে। এর নিবন্ধন নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৯৩৫০। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কামারখোলা এলাকায় একটি কারকে ধাক্কা দেয় বাসটি। এরপর সামনে থাকা আরেকটি কাভার্ডভ্যানকে ধাক্কা দেয়। বাসটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে চালক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পেছনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি দেখে বাসচালক আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এরপর সমষপুর এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ে লেগে বাসটির ছাদ উড়ে যায়। এতে বাসটির আটজন যাত্রী আহত হন।
প্রথম আলোর মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে বাসটি ছাড়ে। ঘণ্টাখানেক পর বাসটি ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠে। বাসটি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের কামারখোলা সেতুতে উঠলে একটি কাভার্ড ভ্যানের পেছনে জোরে ধাক্কা দেয়। এতে তখনই বাসের ছাদ সামনে থেকে ভেঙে পেছনে গিয়ে আটকে থাকে। চালক বাসটি না থামিয়ে আরও দ্রুতগতিতে চালাতে থাকেন। পরে বাসটি ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে সমষপুরে গেলে ছাদটি উড়ে পড়ে যায়। এ সময় একটি প্রাইভেট কারকেও ধাক্কা দেয় বাসটি। যাত্রীসহ ছাদবিহীন বাস চালিয়ে যেতে থাকেন চালক। সমষপুর অতিক্রম করে আরও একটি প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দেয় বাসটি।
বাসে থাকা যাত্রীরা তখন ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। চালক ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে লৌহজংয়ের কুমারভোগ এলাকার ভেতরের একটি সড়কে নিয়ে যান ছাদবিহীন বাসটিকে। রাত ১০টার দিকে যাত্রীদের চিৎকার শুনে বাসটি ঘেরাও করেন জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান হাইওয়ে পুলিশ ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর উপজেলার কামারখোলা সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাসটির অজ্ঞাতনামা চালক, চালকের সহকারী, মালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুনছাদবিহীন বাস চালিয়ে ছয় কিলোমিটার যাত্রা, যা বললেন চালক৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব আরট এ
এছাড়াও পড়ুন:
বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম
ভারতের উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে এক তরুণ তাঁর বোনকে খুন করে লাশ একটি বস্তায় ভরে রেখেছিলেন। ওই বস্তা নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকে ভেতরে কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘এর মধ্যে গম আছে।’
উত্তর প্রদেশের ৩২ বছর বয়সী রাম আশিস নিষাদ তাঁর ১৯ বছর বয়সী বোন নীলমকে খুন করেন।
ওই এলাকায় একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। আশিসের বাবা চিংকু নিষাদ সেখানে সরকারের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ছয় লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, ওই ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া অর্থের ভাগাভাগি নিয়েই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই রুপি বোনের বিয়েতে খরচ করা হবে জেনে রাম আশিস ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাম আশিস একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে বোন নীলমকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর নীলমের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙে ফেলে দেহটি একটি বস্তায় ভরেন। পরে বাইকের সঙ্গে বেঁধে তিনি গোরখপুর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে কুশীনগরের একটি আখখেতে বস্তাটি ফেলে আসেন।
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে অভিযুক্ত
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে রাম আশিসকে একটি বস্তা নিয়ে যেতে দেখা যায়। সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই বস্তার মধ্যে ছিল তাঁর বোনের লাশ। কুশীনগর যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁকে থামিয়ে বস্তায় কী আছে জানতে চেয়েছিল।
রাম আশিস পুলিশকে জানান, বস্তায় গম আছে। পরে আবার তিনি কুশীনগরের দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান। সেখানে তিনি আখখেতে নীলমের লাশ ফেলে দেন।
এরপর নীলমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর বাবা প্রথমে ধরে নেন, মেয়ে ছটপূজার জন্য কোথাও গেছে। তবে প্রতিবেশীরা যখন জানান, সোমবার রাম আশিস একটি বস্তা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তখন পরিবারের সন্দেহ হয় এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।
পুলিশ প্রথমে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ও তদন্ত শুরু করে। গত মঙ্গলবার নীলমের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়, রাম আশিসই নীলমকে খুন করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাম আশিস প্রথমে কিছু না জানার ভান করেন। তবে পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পরে বোনকে খুনের কথা স্বীকার করেন। গত বুধবার রাতে আখখেত থেকে নীলমের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
আগামী জানুয়ারি মাসেই নীলমের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের সবকিছু ঠিকঠাকও হয়ে গিয়েছিল।
রাম আশিসের বাবা চিংকু অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই ছয় লাখ রুপি মেয়ের বিয়েতে খরচ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ কারণে রাম ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। কারণ, তিনি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই রুপির ভাগ চেয়েছিলেন।