পরিত্যক্ত বাড়িতে পালিয়ে ছিল হোতা নান্টু ও খোকন, র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার
Published: 19th, April 2025 GMT
রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা আকরাম আলীকে হত্যার মূল হোতা মো. নান্টু ও তার সহযোগী খোকন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত শুক্রবার রাতে নওগাঁ সদর এলাকার রামরায়পুর আড়ারাপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাসুদ পারভেজ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে মো.
র্যাব অধিনায়ক জানান, গত বুধবার নগরীর তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় নান্টু ও তার সহযোগীরা মিলে এসএসসি পরীক্ষার্থী রাকিয়া আলফির বাবা আকরাম হোসেনকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তিনি মারা যান। ঘটনার পর গত বৃহস্পতিবার বোয়ালিয়া থানায় নান্টু ও তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের পরিবার। মামলার পর থেকে র্যাবের একটি আভিযানিক দল আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে অভিযান শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার রাতে নান্টু ও খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার পর থেকে নান্টু ও খোকন নওগাঁ পালিয়ে যায়। সেখানে রামরায়পুর আড়ারাপাড়া এলাকায় তারা একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে লুকিয়ে ছিল।
মাসুদ পারভেজ আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারদের বোয়ালিয়া মডেল থানার মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।
নিহত আকরাম আলী (৫২) পেশায় বাসচালক ছিলেন। তিনি তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় থাকতেন। তাঁর মেয়ে রাকিয়া আলফি নগরীর অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী। নান্টু দীর্ঘদিন ধরে আলফিকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। গত বুধবার বিকেলে আলফি কোচিং শেষে বাসায় ফেরার পথে নান্টু আবার তাকে উত্ত্যক্ত করে। বাসায় ফিরে আলফি বিষয়টি বাবাকে জানালে তিনি নান্টুর বাসায় অভিযোগ দেন। পরে রাতে নান্টু ও তার সহযোগীরা রড, লাঠি, লাকড়ি, ইট দিয়ে পিটিয়ে আলফির চাচা ইমান হাসানকে পিটিয়ে আহত করে। ভাইকে বাঁচাতে আকরাম আলী এগিয়ে এলে তাঁকেও মারধর এবং মাথার পেছনে ইট দিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইভট জ হত য র য ব র অভ য ন গ র প ত র কর সহয গ
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।