চাকরি ও অনলাইন কেনাকাটায় এআই প্রতারণা নিয়ে মাইক্রোসফট যে সতর্কবার্তা দিচ্ছে
Published: 20th, April 2025 GMT
চাকরি ও অনলাইন কেনাকাটার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে প্রতারক চক্র বিভিন্নভাবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করছে। সম্প্রতি মাইক্রোসফটের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেনারেটিভ এআইয়ের সহায়তায় প্রতারকেরা এখন আগের চেয়ে অনেক দ্রুত ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতারণা করতে পারছে।
মাইক্রোসফটের ‘সাইবার সিগন্যালস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৪০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ প্রতারণার চেষ্টা রুখে দিয়েছে। পাশাপাশি প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ১৬ লাখের বেশি বটচালিত ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি রোধ করা হয়েছে। এসব প্রতারণা ঠেকাতে প্রতিষ্ঠানটি এআই ও মেশিন লার্নিংনির্ভর নিরাপত্তা মডেল ব্যবহার করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চাকরিপ্রার্থীদের লক্ষ্য করে এখন যেসব জালিয়াতি করা হচ্ছে, তার বড় একটি অংশ পরিচালিত হচ্ছে জেনারেটিভ এআইয়ের মাধ্যমে। ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন তৈরি, চুরি করা পরিচয় দিয়ে নকল প্রোফাইল খোলা, এমনকি এআইনির্ভর ই–মেইল ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে নিয়োগপ্রক্রিয়ার নাটক সাজানো হচ্ছে। এতে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আসল-নকল বুঝে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ছে। এ ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে মাইক্রোসফট তিনটি বিষয় খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হলে সাবধান হওয়া
অচেনা নম্বর থেকে হঠাৎ এসএমএস বা ই–মেইলে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রস্তাব এলে সেটি সন্দেহজনক বলেই ধরে নিতে হবে। এমন ক্ষেত্রে ব্যাংক তথ্য বা পাসওয়ার্ড কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়।
চাকরির নামে টাকা চাওয়া হলে তা এড়িয়ে চলা
চাকরি পেতে কোনো ধরনের অর্থ দিতে হয় না। কোনো নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যদি অর্থ দাবি করা হয় কিংবা পুরো যোগাযোগটাই যদি অনানুষ্ঠানিকভাবে চলে, তাহলে তা প্রতারণার আশঙ্কাই বেশি।
অপ্রাতিষ্ঠানিক মাধ্যমে যোগাযোগ হলে সতর্ক হওয়া
প্রকৃত প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অফিশিয়াল ই–মেইল বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিয়োগসংক্রান্ত যোগাযোগ করে থাকে। হোয়াটসঅ্যাপ, টেক্সট বার্তা কিংবা ব্যক্তিগত ই–মেইল আইডি থেকে কোনো প্রস্তাব এলে, তা যাচাই না করে বিশ্বাস করা উচিত নয়।
চাকরির পাশাপাশি অনলাইন কেনাকাটায়ও প্রতারণা বাড়ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন প্রযুক্তিতে দক্ষতা না থাকলেও বিভিন্ন এআই টুলের মাধ্যমে যে কেউ অত্যন্ত বাস্তবধর্মী ভুয়া ই-কমার্স সাইট তৈরি করতে পারছে। এআই ব্যবহারে এসব ওয়েবসাইটে থাকছে নিখুঁত পণ্যের ছবি, মিথ্যা রিভিউ, এমনকি কৃত্রিমভাবে তৈরি ‘গ্রাহকসেবা’ও। প্রতারণার উদ্দেশ্যে তৈরি এসব ওয়েবসাইটে ‘সীমিত সময়ের অফার’ বা কাউন্টডাউন টাইমার দিয়ে ক্রেতাদের তাড়াহুড়া করতে বাধ্য করা হয়। অনেকে এসব সাইটে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখে ক্লিক করেন, যার মধ্যে অনেক বিজ্ঞাপনই এআই অপ্টিমাইজড এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য মাইক্রোসফট আরও তিনটি পরামর্শ দিয়েছে।
চটকদার অফারে সহজে বিশ্বাস না করা
‘মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে অফার শেষ’, ‘স্টকে শেষ পাঁচটি পণ্য’—এমন বার্তা দিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হয়। এমন চটকদার অফার দেখলে সতর্ক হতে হবে।
বিজ্ঞাপনের উৎস যাচাই করা
অ্যাকটিভ বিজ্ঞাপন বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাওয়া ওয়েবসাইটে পণ্য কেনার আগে তার ঠিকানা, রিভিউ ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করে নেওয়া জরুরি।
রিভিউ ও রেটিং দেখা
অনেক সময় পণ্যের নিচে থাকা প্রশংসাসূচক রিভিউ, ইনফ্লুয়েন্সারদের পোস্ট বা ব্যবহারকারীর মতামত এআই দিয়ে তৈরি হয়। যাচাই না করে এসব দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’