চার বছরের ছোট্ট একটা ছেলে, বাবার হাতে ধরা ব্যাট, আর বাড়ির পেছনের ছোট্ট একফালি জমি- এভাবেই শুরু হয়েছিল বৈভব সূর্যবংশীর ক্রিকেটের গল্প। বিহারের তাজপুর গ্রামের কৃষক সঞ্জীব সূর্যবংশী হয়তো কখনো ভাবেননি, তার ছেলের হাতে ধরা ব্যাট একদিন আইপিএলের মতো মঞ্চে ঝড় তুলবে। আর সেই দিনটা এলোও ঠিক ১৪ বছর পূর্ণ হওয়ার পরপরই, যেদিন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই ছক্কা হাঁকালেন বৈভব।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে আইপিএলের মেগা নিলামে নাম ওঠা মানেই ছিল আলোচনার শীর্ষে থাকা। রাজস্থান রয়্যালসের ঝুলিতে ১ কোটি ১০ লাখ রুপিতে যোগ দেওয়া এই কিশোর প্রথম বলেই চোখে লাগার মতো এক ছক্কা হাঁকালেন কভারের ওপর দিয়ে। বিপরীতে ছিলেন শার্দূল ঠাকুরের মতো অভিজ্ঞ বোলার। তাতেই চোখ জুড়ানো নেটিজেনরা বলে বসলেন ‘অ্যা স্টার ইজ বর্ন’! বৈভবের জন্ম ২০১১ সালের ২৭ মার্চ, ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের বছরেই। তখন ধোনির নেতৃত্বে উল্লাসে ভাসছিল গোটা দেশ, আর আজ সেই দলের উত্তরসূরিদের মধ্যে জায়গা করে নিচ্ছেন ছোট্ট বৈভব।

ক্রিকেট জীবনের শুরুটা হয়েছিল ঘরের পেছনের সেই খোলা জায়গা থেকেই। ছোট্ট বৈভবের কোচ ছিলেন তার বাবাই। পরে ভর্তি হন সমস্তিপুর ক্রিকেট একাডেমিতে। ৯ বছর বয়সে সেই একাডেমিতে আড়াই বছরের প্রশিক্ষণ শেষে ট্রায়াল দেন বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে। বয়স কম বলে তাকে স্ট্যান্ডবাই রাখেন বিহারের অনূর্ধ্ব ১৬ দলের নির্বাচকেরা। সেখানেই নজর কাড়েন সাবেক রঞ্জি ক্রিকেটার মণীশ ওঝার। তার পর থেকে তিনিই বৈভবের কোচ।

১২ বছর ২৮৪ দিনে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক, আর সেখানেও আলোচনায়। এরপর মাত্র ১৩ বছর বয়সে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ৫৮ বলে সেঞ্চুরি। আর এখন আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেক, সবচেয়ে কম বয়সে ছক্কা, প্রথম বলেই ছক্কার রেকর্ড… একের পর এক ইতিহাস গড়ছেন বৈভব।

লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে রাজস্থানের হয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম চার বলেই দুটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ২০ বলে ৩৪ করে আউট হয়েছেন, তবে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন অনেক আগেই। ম্যাচে রাজস্থান হেরেছে মাত্র ২ রানে। তবে জয়-পরাজয়ের গল্পকে ছাপিয়ে গেছে বৈভবের অনবদ্য অভিষেক।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

স্টিভ জবসের পথেই রয়েছেন টিম কুক

অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের পর ২০১১ সাল থেকে অ্যাপলকে বেশ ভালোভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল বর্তমানে প্রায় চার লাখ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তি দুনিয়ার শীর্ষ তিন প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে পরিচিত অ্যাপল নিত্যনতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনেও পিছিয়ে নেই।

টিম কুকের জন্ম ১৯৬০ সালের ১ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যের মোবাইল শহরে। অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করার পর তিনি প্রযুক্তিশিল্পে কর্মজীবন শুরু করেন। অ্যাপলে যোগদানের আগে তিনি আইবিএমের পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবসায় ১২ বছর কাজ করেন। পরবর্তী সময়ে ইন্টেলিজেন্ট ইলেকট্রনিকস ও কম্প্যাকের মতো প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৮ সালে স্টিভ জবসের আমন্ত্রণে অ্যাপলে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অব ওয়ার্ল্ডওয়াইড অপারেশনস পদে যোগ দেন টিম কুক। দ্রুতই অ্যাপলের সরবরাহ শৃঙ্খল ও  উৎপাদনব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি অ্যাপলের কারখানা বন্ধ করে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য তৈরি শুরু করেন তিনি। ফলে অ্যাপলের উৎপাদন খরচও কমে আসে। ২০০৫ সালে তিনি অ্যাপলের চিফ অপারেটিং অফিসার পদে পদোন্নতি পান। স্টিভ জবসের অসুস্থতার সময় তিনি একাধিকবার অ্যাপলের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন টিম কুক।

জবসের মৃত্যুর কয়েক মাস আগে ২০১১ সালের আগস্ট মাসে টিম কুক আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর পর থেকেই স্টিভ জবসের উদ্ভাবনী জাদুকরের ভাবমূর্তি থেকে বেরিয়ে এসে টিম কুক অ্যাপলকে দক্ষভাবে পরিচালনা করছেন। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি মার্কিন ডলারের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

অ্যাপল ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করার জন্যও আলোচিত টিম কুক। তাঁর নেতৃত্বেই অ্যাপল ওয়াচ ও এয়ারপডসের মতো সফল পণ্য বাজারে আসে এবং ইন্টেলের পরিবর্তে নিজস্ব চিপ এম১ প্রসেসর ব্যবহার শুরু করে অ্যাপল, যা অ্যাপলের অন্যতম সাহসী ও সফল কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হয়। বর্তমানে প্রযুক্তিশিল্পের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পেলেও স্টিভ জবসের গড়ে তোলা আইফোন আর ম্যাকের মতো প্রযুক্তিপণ্যের উদ্ভাবনের ধারাকে অব্যাহত রেখেছেন টিম কুক।

সূত্র: অ্যাপল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্টিভ জবসের পথেই রয়েছেন টিম কুক