ছোট্ট উঠোন থেকে আইপিএলের রূপালি আলোয় বৈভব
Published: 20th, April 2025 GMT
চার বছরের ছোট্ট একটা ছেলে, বাবার হাতে ধরা ব্যাট, আর বাড়ির পেছনের ছোট্ট একফালি জমি- এভাবেই শুরু হয়েছিল বৈভব সূর্যবংশীর ক্রিকেটের গল্প। বিহারের তাজপুর গ্রামের কৃষক সঞ্জীব সূর্যবংশী হয়তো কখনো ভাবেননি, তার ছেলের হাতে ধরা ব্যাট একদিন আইপিএলের মতো মঞ্চে ঝড় তুলবে। আর সেই দিনটা এলোও ঠিক ১৪ বছর পূর্ণ হওয়ার পরপরই, যেদিন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই ছক্কা হাঁকালেন বৈভব।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে আইপিএলের মেগা নিলামে নাম ওঠা মানেই ছিল আলোচনার শীর্ষে থাকা। রাজস্থান রয়্যালসের ঝুলিতে ১ কোটি ১০ লাখ রুপিতে যোগ দেওয়া এই কিশোর প্রথম বলেই চোখে লাগার মতো এক ছক্কা হাঁকালেন কভারের ওপর দিয়ে। বিপরীতে ছিলেন শার্দূল ঠাকুরের মতো অভিজ্ঞ বোলার। তাতেই চোখ জুড়ানো নেটিজেনরা বলে বসলেন ‘অ্যা স্টার ইজ বর্ন’! বৈভবের জন্ম ২০১১ সালের ২৭ মার্চ, ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের বছরেই। তখন ধোনির নেতৃত্বে উল্লাসে ভাসছিল গোটা দেশ, আর আজ সেই দলের উত্তরসূরিদের মধ্যে জায়গা করে নিচ্ছেন ছোট্ট বৈভব।
ক্রিকেট জীবনের শুরুটা হয়েছিল ঘরের পেছনের সেই খোলা জায়গা থেকেই। ছোট্ট বৈভবের কোচ ছিলেন তার বাবাই। পরে ভর্তি হন সমস্তিপুর ক্রিকেট একাডেমিতে। ৯ বছর বয়সে সেই একাডেমিতে আড়াই বছরের প্রশিক্ষণ শেষে ট্রায়াল দেন বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে। বয়স কম বলে তাকে স্ট্যান্ডবাই রাখেন বিহারের অনূর্ধ্ব ১৬ দলের নির্বাচকেরা। সেখানেই নজর কাড়েন সাবেক রঞ্জি ক্রিকেটার মণীশ ওঝার। তার পর থেকে তিনিই বৈভবের কোচ।
১২ বছর ২৮৪ দিনে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক, আর সেখানেও আলোচনায়। এরপর মাত্র ১৩ বছর বয়সে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ৫৮ বলে সেঞ্চুরি। আর এখন আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে অভিষেক, সবচেয়ে কম বয়সে ছক্কা, প্রথম বলেই ছক্কার রেকর্ড… একের পর এক ইতিহাস গড়ছেন বৈভব।
লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে রাজস্থানের হয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম চার বলেই দুটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ২০ বলে ৩৪ করে আউট হয়েছেন, তবে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন অনেক আগেই। ম্যাচে রাজস্থান হেরেছে মাত্র ২ রানে। তবে জয়-পরাজয়ের গল্পকে ছাপিয়ে গেছে বৈভবের অনবদ্য অভিষেক।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২০২৪ সালের ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
গত ২৪ জুলাই সকালে ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।
খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। ওই রায়ের পর দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।
বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।
২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’
ঢাকা/কেএন/ইভা