সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে দ্রুত হাসপাতালের কার্যক্রম চালু, প্রয়োজনীয় ক্লিনিক্যাল ক্লাস নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ সোমবার সকালে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। আগে শুধু ক্লাস বর্জন করলেও আজ থেকে তাঁরা অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ সকালে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। গতকাল রোববার সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে লাঠিপেটার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন। তাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা গতকালের ঘটনায় যুক্ত সেনাবাহিনীর সদস্যদের ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। পরে তাঁরা প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা দেন।

পিয়াস চন্দ্র দাস নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। ১৫ এপ্রিল থেকে আমাদের কর্মসূচি চল়ছে। শিক্ষা অধিদপ্তরে আমরা কথা বলেছি, কিন্তু সন্তোষজনক জবাব পাইনি। শুধু আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।’
আরেক শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল আমাদের কর্মসূচি চলাকালে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসেন। তখন আমরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য পাঁচ মিনিট সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা সেই সময়টুকু আমাদের দেননি। বেধড়ক লাঠিপেটা করে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। আমাদের অনেকে আহত হয়েছেন। সেনাসদস্যরা আমাদের ক্যাম্পাসের ভেতরেও চলে আসেন। এই আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।’

আরও পড়ুনদ্রুত হাসপাতাল চালুর দাবিতে সুনামগঞ্জে মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের দেড় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ২০ এপ্রিল ২০২৫

ওই দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গতকাল সকালে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ চেষ্টা করেও সড়ক থেকে তাঁদের সরাতে পারেনি। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে বেলা সাড়ে ১১টার সময় তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করার অভিযোগ উঠে। তবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

২০২১ সালে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০২৩ সালে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়। ২০২৪ সালে ক্যাম্পাসে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হওয়ার পরও এখনো হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়নি।

আরও পড়ুনচার ঘণ্টা পর সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করলেন সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা১৬ এপ্রিল ২০২৫

সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার মদনপুর এলাকায় সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের পাশে এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অবস্থিত। বর্তমানে কলেজের ৫টি ব্যাচে ২৮০ জন শিক্ষার্থী আছেন। কলেজে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংকট রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ কল জ র আম দ র গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
  • সাতরাস্তা মোড়ে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার কারিগরি শিক্ষার্থীদের, তবে অবস্থান চলবে