ইউক্রেনে যাত্রীবাহী বাসে রাশিয়ার ড্রোন হামলা, নিহত ৯
Published: 23rd, April 2025 GMT
ইউক্রেনে শ্রমিক পরিবহনকারী একটি বাসে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় নয়জন নিহত হয়েছেন। দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার সকালে দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলীয় শহর মারহানেতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির।
ডনিপ্রোপেট্রোভস্কের আঞ্চলিক প্রধান সের্হি লিসাক বলেছেন, হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, “নিহতদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে”।
আরো পড়ুন:
ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত পুতিন
রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে গিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণের নিহতের খবর
যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের কর্মকর্তারা সংঘাতের যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লন্ডনে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এর মধ্যে হামলার ঘটনাটি ঘটলো।
রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করে। দীর্ঘ এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের কয়েক লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত সপ্তাহে ‘ইস্টার সানডে’ উপলক্ষে ৩০ ঘণ্টার সামরিয়ক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিলেন। তবে এসময়ে উভয় পক্ষই একে অপরকে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের জন্য অভিযুক্ত করেছে।
যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সাথে এবং ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সাথে আলাদাভাবে আলোচনা করছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্য কেন? আদিবাসী নারী শ্রমিকরা পাই না সমান মজুরি
‘‘সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’’
কাজী নজরুল ইসলাম ‘নারী’ কবিতায় নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলেছেন। কিন্তু, এ বৈষম্য সমাজের সর্বস্তরে এখনো রয়ে গেছে। দিনাজপুরের হাকিমপুরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেও সমান মজুরি পাচ্ছেন না তারা।
হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়া ঘুরে জানা যায়, বছরে আমন এবং ইরি মৌসুমে ধানের চারা রোপণ, ক্ষেত নিড়ানিসহ ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করেন নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে এসব কাজ করেন তারা। এ কাজে পুরুষ শ্রমিকেরা ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি পেলেও নারী শ্রমিকেরা পান ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। শুধু ধানের মৌসুমেই নয়, অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে কাজ করলেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পান না। এই বৈষম্য দূর হলে আরেকটু স্বচ্ছল জীবনযাপন করা যেত বলে তারা মনে করেন।
হাকিমপুর পৌর এলাকা চন্ডিপুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়ার নারী শ্রমিক লক্ষ্মী হাসদা ও শান্তি সরেন বলেন, ‘‘আমরা বছরে দুই সিজন ধানের চারা রোপণসহ কাটা-মাড়াই করি। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত কাজ করি। কিন্তু মজুরি কম পাই। পুরুষরা ৫০০ টাকা পেলে আমরা পাই সাড়ে ৩০০ টাকা। এটা কেমন নিয়ম?’’
অপর নারী শ্রমিক সুরুজ মনি হেম্ব্রন বলেন, ‘‘এখন তো হামরা তেমন কাম পাই না। আলু ও সরিষার মাঠে এখন মুসলমান বেটি ছোলরা কাম করে। আগে আমরাই করতাম, এখন অনেক কাম কমে গেছে। এরপর আবার পুরুষ মানুষের চেয়ে হামাক হাজিরাও কম দেয়। হারা (আমি) চলবো কি করে?’’
একই প্রশ্ন করেন হিলির তালতলার রানী হেম্ব্রন ও বিউটি হেম্ব্রন। শ্যামলী হাড্ডি বলেন, ‘‘এই বৈষম্যের কারণে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারছি না। বৈষম্য দূর হলে আরেকটু ভালো করে চলতে পারতাম।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেলার ১ নাম্বার খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, ‘‘আমরা জানি, নারী-পুরুষ সমান অধিকারী। কিন্তু, সমাজে নারী শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তারা সঠিক মজুরি পায় না। আমি শ্রমিক ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব- আপনারা এই বৈষম্য দূর করুন। নারীর ন্যায্য মজুরির ব্যবস্থা করুন।’’
খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি শাহানুর আলম শাহিন বলেন, ‘‘আমাদের এই অঞ্চলে অনেক আদিবাসী নারী শ্রমিক আছেন, যারা বৈষম্যের শিকার। আমি গৃহস্থ এবং কৃষকদের বলতে চাই, আপনারা বৈষম্য না করে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের সমান মজুরি দেবেন।’’
ঢাকা/তারা