লা লিগায় রিয়াল মায়োর্কার বিপক্ষে কষ্টের জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। ঘরের মাঠে ৪৬ মিনিটে দানি অলমোর গোলে ১-০ গোলে জিতেছে কাতালানরা। এই জয়ে লা লিগা শিরোপার পথে আরও এগিয়ে গেছে হানসি ফ্লিকের দল। তবে এই জয়ের মধ্যেও বার্সার জন্য আছে সতর্কবার্তা।

বার্সা লিগে ঠিক আগের ম্যাচটায় সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে হারতে বসেছিল। যদিও রাফিনিয়ার যোগ করা সময়ে নেওয়া পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলে ৪-৩ গোলের জয় তুলে নিয়েছিল কাতালানরা। এরপর মায়োর্কার বিপক্ষে ছোট্ট জয়। তার আগে লিগে লেগানেসের বিপক্ষে আত্মঘাতী থেকে পাওয়া গোলে ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল বার্সা।

লিগে টানা তিন ম্যাচে এমন টেনে-টুনে পাওয়া জয়ই বার্সার জন্য সতর্কবার্তা হয়ে এসেছে। লিগ টেবিলে হানসি ফ্লিকের দল শীর্ষে থাকলেও শিরোপা ঘরে তোলা নিশ্চিত হয়নি। তাদের হাতে আছে ৫টি লিগ ম্যাচ। এর মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ১১ মে এর ক্লাসিকো রয়েছে। শেষ দুই লিগ ম্যাচে ভিয়ারিয়াল ও অ্যাথলেটিকো বিলবাওয়ের বিপক্ষে খেলবেন রাফিনিয়া, ইয়ামালরা।

বার্সা যদি শেষ ৫ লিগ ম্যাচের দুটিতে হেরে যায় কিংবা এক হারের সঙ্গে দুই ম্যাচে ড্র করে সেক্ষেত্রে রিয়াল মাদ্রিদের সামনে শিরোপা জয়ের সুযোগ চলে আসবে। ওদিকে ইনজুরির কারণে রর্বাট লেভানডভস্কি ছিটকে গেছেন। মায়োর্কার বিপক্ষে ম্যাচই তাই বার্সার জন্য সতর্কবার্তা।

যদিও বার্সা কোচ ফ্লিক মায়োর্কার বিপক্ষে দলের পারফরম্যান্সে খুশি। ম্যাচে ৪০টি শট নিয়ে কাতালানরা গোল পেয়েছে একটি। জার্মান কোচ ওই সুযোগ তৈরি করা ও দলের ভালো খেলার প্রশংসা করেছেন, ‘আমরা ভালো ম্যাচ কাটিয়েছে। অনেক সুযোগ তৈরি করেছি এবং ক্লিনশিট রেখেছি। সবাই কম-বেশি অবদান রেখেছে। এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’

লা লিগা ও কোপা দেল রে’র শিরোপা রিয়ালের বিপক্ষে জয়ের ওপর নির্ভর করার বিষয়ে ফ্লিক বলেন, ‘দুই দলের মধ্যে (রিয়াল ও বার্সা) শিরোপা নির্ধারণী লড়াই হবে এটা অবাক হওয়ার মতো কোন ঘটনা নয়। রিয়াল মাদ্রিদ ও কার্লো আনচেলত্তির প্রতি আমার অগাধ সম্মান রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচ তিনি।’ 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ