মায়োর্কার বিপক্ষে জিতেও সতর্কবার্তা পেল বার্সা
Published: 23rd, April 2025 GMT
লা লিগায় রিয়াল মায়োর্কার বিপক্ষে কষ্টের জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। ঘরের মাঠে ৪৬ মিনিটে দানি অলমোর গোলে ১-০ গোলে জিতেছে কাতালানরা। এই জয়ে লা লিগা শিরোপার পথে আরও এগিয়ে গেছে হানসি ফ্লিকের দল। তবে এই জয়ের মধ্যেও বার্সার জন্য আছে সতর্কবার্তা।
বার্সা লিগে ঠিক আগের ম্যাচটায় সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে হারতে বসেছিল। যদিও রাফিনিয়ার যোগ করা সময়ে নেওয়া পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলে ৪-৩ গোলের জয় তুলে নিয়েছিল কাতালানরা। এরপর মায়োর্কার বিপক্ষে ছোট্ট জয়। তার আগে লিগে লেগানেসের বিপক্ষে আত্মঘাতী থেকে পাওয়া গোলে ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল বার্সা।
লিগে টানা তিন ম্যাচে এমন টেনে-টুনে পাওয়া জয়ই বার্সার জন্য সতর্কবার্তা হয়ে এসেছে। লিগ টেবিলে হানসি ফ্লিকের দল শীর্ষে থাকলেও শিরোপা ঘরে তোলা নিশ্চিত হয়নি। তাদের হাতে আছে ৫টি লিগ ম্যাচ। এর মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ১১ মে এর ক্লাসিকো রয়েছে। শেষ দুই লিগ ম্যাচে ভিয়ারিয়াল ও অ্যাথলেটিকো বিলবাওয়ের বিপক্ষে খেলবেন রাফিনিয়া, ইয়ামালরা।
বার্সা যদি শেষ ৫ লিগ ম্যাচের দুটিতে হেরে যায় কিংবা এক হারের সঙ্গে দুই ম্যাচে ড্র করে সেক্ষেত্রে রিয়াল মাদ্রিদের সামনে শিরোপা জয়ের সুযোগ চলে আসবে। ওদিকে ইনজুরির কারণে রর্বাট লেভানডভস্কি ছিটকে গেছেন। মায়োর্কার বিপক্ষে ম্যাচই তাই বার্সার জন্য সতর্কবার্তা।
যদিও বার্সা কোচ ফ্লিক মায়োর্কার বিপক্ষে দলের পারফরম্যান্সে খুশি। ম্যাচে ৪০টি শট নিয়ে কাতালানরা গোল পেয়েছে একটি। জার্মান কোচ ওই সুযোগ তৈরি করা ও দলের ভালো খেলার প্রশংসা করেছেন, ‘আমরা ভালো ম্যাচ কাটিয়েছে। অনেক সুযোগ তৈরি করেছি এবং ক্লিনশিট রেখেছি। সবাই কম-বেশি অবদান রেখেছে। এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
লা লিগা ও কোপা দেল রে’র শিরোপা রিয়ালের বিপক্ষে জয়ের ওপর নির্ভর করার বিষয়ে ফ্লিক বলেন, ‘দুই দলের মধ্যে (রিয়াল ও বার্সা) শিরোপা নির্ধারণী লড়াই হবে এটা অবাক হওয়ার মতো কোন ঘটনা নয়। রিয়াল মাদ্রিদ ও কার্লো আনচেলত্তির প্রতি আমার অগাধ সম্মান রয়েছে। বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচ তিনি।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্য কেন? আদিবাসী নারী শ্রমিকরা পাই না সমান মজুরি
‘‘সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’’
কাজী নজরুল ইসলাম ‘নারী’ কবিতায় নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলেছেন। কিন্তু, এ বৈষম্য সমাজের সর্বস্তরে এখনো রয়ে গেছে। দিনাজপুরের হাকিমপুরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেও সমান মজুরি পাচ্ছেন না তারা।
হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়া ঘুরে জানা যায়, বছরে আমন এবং ইরি মৌসুমে ধানের চারা রোপণ, ক্ষেত নিড়ানিসহ ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করেন নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে এসব কাজ করেন তারা। এ কাজে পুরুষ শ্রমিকেরা ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি পেলেও নারী শ্রমিকেরা পান ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। শুধু ধানের মৌসুমেই নয়, অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে কাজ করলেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পান না। এই বৈষম্য দূর হলে আরেকটু স্বচ্ছল জীবনযাপন করা যেত বলে তারা মনে করেন।
হাকিমপুর পৌর এলাকা চন্ডিপুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়ার নারী শ্রমিক লক্ষ্মী হাসদা ও শান্তি সরেন বলেন, ‘‘আমরা বছরে দুই সিজন ধানের চারা রোপণসহ কাটা-মাড়াই করি। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত কাজ করি। কিন্তু মজুরি কম পাই। পুরুষরা ৫০০ টাকা পেলে আমরা পাই সাড়ে ৩০০ টাকা। এটা কেমন নিয়ম?’’
অপর নারী শ্রমিক সুরুজ মনি হেম্ব্রন বলেন, ‘‘এখন তো হামরা তেমন কাম পাই না। আলু ও সরিষার মাঠে এখন মুসলমান বেটি ছোলরা কাম করে। আগে আমরাই করতাম, এখন অনেক কাম কমে গেছে। এরপর আবার পুরুষ মানুষের চেয়ে হামাক হাজিরাও কম দেয়। হারা (আমি) চলবো কি করে?’’
একই প্রশ্ন করেন হিলির তালতলার রানী হেম্ব্রন ও বিউটি হেম্ব্রন। শ্যামলী হাড্ডি বলেন, ‘‘এই বৈষম্যের কারণে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারছি না। বৈষম্য দূর হলে আরেকটু ভালো করে চলতে পারতাম।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেলার ১ নাম্বার খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, ‘‘আমরা জানি, নারী-পুরুষ সমান অধিকারী। কিন্তু, সমাজে নারী শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তারা সঠিক মজুরি পায় না। আমি শ্রমিক ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব- আপনারা এই বৈষম্য দূর করুন। নারীর ন্যায্য মজুরির ব্যবস্থা করুন।’’
খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি শাহানুর আলম শাহিন বলেন, ‘‘আমাদের এই অঞ্চলে অনেক আদিবাসী নারী শ্রমিক আছেন, যারা বৈষম্যের শিকার। আমি গৃহস্থ এবং কৃষকদের বলতে চাই, আপনারা বৈষম্য না করে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের সমান মজুরি দেবেন।’’
ঢাকা/তারা