ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাহাঙ্গীর হোসেনের নামে থাকা একটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা আরও তিনটি প্লট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

দুদক লিখিতভাবে আদালতকে জানিয়েছে, হারুন ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। জাহাঙ্গীর হারুনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি থাকেন উত্তরা এলাকাতে। তাঁর নামে–বেনামে অনেক সম্পদ রয়েছে, এগুলো হারুনের বেনামি সম্পদ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জাহাঙ্গীরের নামে থাকা সম্পদ জব্দের আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হারুন ও তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দেন আদালত। এর মধ্যে রয়েছে হারুন অর রশীদের নামে থাকা প্রায় ১০০ বিঘা জমি, ৫টি ভবন ও ২টি ফ্ল্যাট। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে হারুন অর রশীদ, তাঁর স্ত্রী এবং হারুনের ভাইয়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর মামলা করে দুদক। মামলায় হারুনের বিরুদ্ধে ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৮০৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।

অন্যদিকে হারুনের ছোট ভাই এ বি এম শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর হারুনের স্ত্রী শিরিন আক্তারের বিরুদ্ধে ১০ কোটি ৭৬ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।

২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
  • অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা