‘অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার দমনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ইতালি’
Published: 24th, April 2025 GMT
অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনসহ বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইতালি সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।
সাক্ষাতে আসন্ন ৫-৬ মে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফর, অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ, নিরাপত্তা খাতে পারস্পরিক সহায়তা; পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষা ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ইতালি বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু।” তিনি উল্লেখ করেন, ইতালিতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী কর্মরত আছেন, যারা রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে এই সংখ্যাটি আরো বাড়বে এবং দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।
রাষ্ট্রদূত জানান, সফরকালে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হবে এবং একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে উভয় দেশের সম্মতিক্রমে অবৈধ অভিবাসন রোধ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন এবং পুলিশ বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে ঘোষণা, সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সব সময় আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বৈধ চ্যানেলে জনশক্তি রপ্তানিতে আগ্রহী। আমরা অবৈধ অভিবাসনের বিপক্ষে এবং যারা দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) মো. শামীম খান, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জসীম উদ্দিন খান এবং ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসের অভিবাসন সংযুক্ত কর্মকর্তা জিউসেপ্পে দি জিওভান্নি উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ষ ট র উপদ ষ ট স বর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।