বাণিজ্যযুদ্ধ সত্ত্বেও চাঁদ থেকে আনা বিরল পাথর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভাগ করবে চীন
Published: 25th, April 2025 GMT
ছয় দেশের বিজ্ঞানীদের চাঁদ থেকে আনা বিরল পাথর পরীক্ষার সুযোগ দেবে চীন, ওই দেশগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্র। চীন এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, যখন সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চরম রূপ নিয়েছে।
২০২০ সালে চীনের নভোযান চ্যাংই-৫ চাঁদের ভূপৃষ্ঠ থেকে কিছু পাথর নিয়ে আসে। গতকাল বৃহস্পতিবার চীনা ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ) বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তহবিলে পরিচালিত দুটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে ওই পাথর পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে।
স্থানীয় একটি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সিএনএসএর প্রধান শান জংদা বলেছেন, পাথরের ওই নমুনা মানবজাতির মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার মতো সম্পদ।
সিএনএসএ যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের সুযোগ দিলেও চীনা বিজ্ঞানীরা নাসার সংগ্রহ করা চাঁদের নমুনা দেখার অনুমতি পান না। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা নাসার ওপর চীনের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছেন।
২০১১ সালের আইন অনুযায়ী, নাসা চীন বা চীনা কোনো কোম্পানির সঙ্গে কোনো ধরনের সহযোগিতার সম্পর্ক গড়তে পারবে না, এ ধরনের কিছু করতে হলে কংগ্রেসের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে।
এ বিষয়ে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য স্পেস পলিসি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক জন লগসডন বিবিসিকে বলেছেন, চাঁদের পাথর বিনিময়ের সর্বশেষ ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক খুবই সামান্য। এর সামরিক গুরুত্বই নেই। আদর্শগতভাবে এটি বিজ্ঞানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চীন।
আরও পড়ুনচাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি এল পৃথিবীতে২৫ জুন ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।