ছয় দেশের বিজ্ঞানীদের চাঁদ থেকে আনা বিরল পাথর পরীক্ষার সুযোগ দেবে চীন, ওই দেশগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্র। চীন এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, যখন সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চরম রূপ নিয়েছে।

২০২০ সালে চীনের নভোযান চ্যাংই-৫ চাঁদের ভূপৃষ্ঠ থেকে কিছু পাথর নিয়ে আসে। গতকাল বৃহস্পতিবার চীনা ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ) বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তহবিলে পরিচালিত দুটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে ওই পাথর পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে।

স্থানীয় একটি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সিএনএসএর প্রধান শান জংদা বলেছেন, পাথরের ওই নমুনা মানবজাতির মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার মতো সম্পদ।

সিএনএসএ যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের সুযোগ দিলেও চীনা বিজ্ঞানীরা নাসার সংগ্রহ করা চাঁদের নমুনা দেখার অনুমতি পান না। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা নাসার ওপর চীনের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছেন।

২০১১ সালের আইন অনুযায়ী, নাসা চীন বা চীনা কোনো কোম্পানির সঙ্গে কোনো ধরনের সহযোগিতার সম্পর্ক গড়তে পারবে না, এ ধরনের কিছু করতে হলে কংগ্রেসের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে।

এ বিষয়ে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য স্পেস পলিসি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক জন লগসডন বিবিসিকে বলেছেন, চাঁদের পাথর বিনিময়ের সর্বশেষ ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক খুবই সামান্য। এর সামরিক গুরুত্বই নেই। আদর্শগতভাবে এটি বিজ্ঞানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চীন।

আরও পড়ুনচাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটি এল পৃথিবীতে২৫ জুন ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহয গ ত র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ