প্রশান্তির সঙ্গে কিছু কঠিন বাস্তবতা
Published: 28th, April 2025 GMT
সমুদ্রের তীরে দুই পায়ের পাতায় ভর দিয়ে বসে আছেন এক ব্যক্তি। গভীর মনোযোগ দিয়ে তাঁর চুল-দাড়ি কাটছেন আরেকজন। কিছুক্ষণ পর পর ঢেউ এসে দু’জনের পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। পাশে চোখ ফেরালেই আরেক দৃশ্যে নজর আটকায়। পরিত্যক্ত এক জোড়া জুতা পায়ে ময়লার বিশাল স্তূপ থেকে লাফিয়ে নামছেন এক মধ্যবয়সী নারী। তাঁর হাতে নোংরা প্লাস্টিকের বস্তা। আরেকটু দূরের ফ্রেমে নজর রাখলে দেখা মেলে নিখাদ আনন্দের। রেলপথের পাশের দুটি খুঁটিতে দড়ি বেঁধে দোলনা বানিয়ে একে অপরের মুখোমুখি বসে দুলছে দুই পথশিশু। তাদের চোখেমুখে উচ্ছ্বাস।
এমনই বিচিত্র সব দৃশ্যের প্রদর্শনী চলছে রাজধানীর পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে। জুলাই আন্দোলন থেকে শুরু করে নিত্যজীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা, যেগুলো সহজেই চোখ এড়িয়ে যায়, সেই সব দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে দর্শকদের সামনে তুলে এনেছেন আলোকচিত্রীরা। এর মধ্যে কিছু ছবি যেমন প্রশান্তির, কিছু ছবি আবার মন খারাপ করিয়ে দেয়, টেনে দাঁড় করায় কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। সেখানে একটি ছবি দেখে থেমে যান দর্শনার্থী আল-আমিন সজীব। নির্মাণাধীন ভবনের কার্নিশে ঝুলছেন ভীতসন্ত্রস্ত এক তরুণ। ছাদ থেকে তাঁর দিকে পিস্তল তাক করে আছে পুলিশ।
সজীব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এ ঘটনার ভিডিওটি দেখে আঁতকে উঠেছিলাম। একজন নিরস্ত্র মানুষকে কীভাবে গুলি করতে পারে! পরে অবশ্য গণমাধ্যমে খবর হয়, কার্নিশে ঝুলে থাকা ওই তরুণ বেঁচে আছেন। বিষয়টি জানার পর স্বস্তি পেয়েছিলাম।’
গত ১৯ এপ্রিল দৃকপাঠ ভবনে বাংলাদেশ প্রেস ফটো কনটেস্ট-২০২৫-এর পুরস্কার বিতরণ এবং প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। এ বছর ২৫২ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে সাতজন বিজয়ী হয়েছেন। ৯ ফেব্রুয়ারি উন্মুক্ত ছবি আহ্বানের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতার যাত্রা শুরু হয়। ২৫২ আলোকচিত্র সাংবাদিক গত বছর নিজেদের তোলা ছবি জমা দেন। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও তথ্যচিত্রনির্ভর ১ হাজার ৩১০টি ছবি জমা পড়ে। এর মধ্যে নির্বাচিত ৩১টি ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে এই প্রদর্শনী।
বর্ষসেরা আলোকচিত্রের (২০২৪) জন্য পুরস্কার পেয়েছেন আশরাফুল আলম।
প্রদর্শনীর কিউরেটর ও দৃকের মহাব্যবস্থাপক এ এস এম রেজাউর রহমান বলেন, ‘প্রদর্শনীটি কিউরেট করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, আলোচনায় থাকা ছবিগুলো তো বটেই, এর বাইরের ছবি নিয়েও মানুষ আলাপচারিতা করুক। যেমন, জনমুখী সাংবাদিকতা বিভাগের একটা ছবিতে উঠে এসেছে, এক নারী শিশুসন্তানসহ বাসে উঠতে চাচ্ছেন। কিন্তু বাসচালকের হেল্পার গলায় ধাক্কা দিয়ে তাঁকে সরিয়ে দিচ্ছেন। এই ছবি আমাদের বুঝিয়ে দেয়, দেশের গণপরিবহন নারীবান্ধব নয় এবং এ জায়গায় আমাদের কাজ করা উচিত।’
সবার জন্য উন্মুক্ত ১২ দিনব্যাপী প্রদর্শনীটি আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দরজার ক্যামেরায় ‘এলিয়েন’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক নারীর বাড়ির দরজায় লাগানো ক্যামেরায় (ডোরবেল ক্যামেরা) ধরা পড়েছে এক ‘রহস্যময়’ অবয়ব, যা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী নিয়ে নানা জল্পনা।
ঘটনাটি ঘটেছে ক্যালিফোর্নিয়ার কম্পটন এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা জেসিকা ওর্তিজ তাঁর বাড়ির বাইরের দিকের দরজায় লাগানো ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওর একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। এতে দেখা যায়, রাতে বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি ছায়ামূর্তি।
ভিডিও দেখে তাঁর ছেলে তাঁরই মতো হতভম্ব হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন এই নারী। সংবাদমাধ্যম এনবিসি লস অ্যাঞ্জেলেসকে ওর্তিজ বলেন, ‘আমার ছেলে বিছানা থেকে উঠে পরপর তিনবার ভিডিওটা চালায়। শেষবার দেখে বলে ওঠে, “মা, এটা একটা এলিয়েন। পুলিশে ফোন করো।”’ জবাবে তিনি বলেন, ‘এলিয়েনের জন্য পুলিশ ডাকব? লোকে তো আমাকে পাগল ভাববে!’
ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটি ১০ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমেও ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওর নিচে মন্তব্যের ঘরে কেউ কেউ বলেছেন, এটি এলিয়েন বা অন্য কোনো রহস্যময় প্রাণী হতে পারে। কেউ আবার এমন ধারণাও প্রকাশ করেছেন, এটি হয়তো কোনো মানুষ, যাঁর মাথায় টুপি ছিল বা তিনি হালকা রঙের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। দূর থেকে ক্যামেরায় তা এলিয়েনসদৃশ ছায়া তৈরি করেছে।
তবে এ পর্যন্ত কেউই নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি যে এই ছায়ামূর্তির প্রকৃত উৎস কী। এখনো ভিডিওর রহস্যময় অবয়বের বিষয়টি অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। ওর্তিজ বলেন, ‘আমার ধারণা, এটা এলিয়েনই। আমি বিশ্বাস করি, সৃষ্টিকর্তা এতটাই সৃজনশীল যে শুধু আমাদের দিয়েই জীবন সৃষ্টি থেমে যেতে পারে না।’
পৃথিবীর বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের বিশ্বাস আছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে পৃথিবীর বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব আছে। তারা মাঝেমধ্যে পৃথিবীতে আসে। তাদের এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী বলা হয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে এই এলিয়েন দেখতে পাওয়ার দাবি করা হয়েছে। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা হয়নি।