বাংলাদেশ সফররত চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধিদল। বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার নিয়ে এনসিপির ভাবনা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

গত ২৫ এপ্রিল (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় এই বৈঠক হয়। এনসিপির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ ও তাহসীন রিয়াজ। বৈঠকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন দলের দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের পেং জিউবিন। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন চেন জুয়ানবো, চেন ইয়াংপেই ও ঝাং গুইউ।

আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি জানিয়েছে এনসিপি। এতে বলা হয়, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তাদের আলোচনার বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার নিয়ে এনসিপির ভাবনা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার সম্ভাবনা।’ বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের উত্তরণের সংকটময় পর্বের রূপরেখা তুলে ধরে। পাশাপাশি স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের জন্য নিজেদের অঙ্গীকারের কথাও উল্লেখ করে প্রতিনিধিদল।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিদলের সদস্যদের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। গত শুক্রবার ঢাকায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ