বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় ঢাকা ইপিজেডে অবস্থিত ইউনাইটেড গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে কোম্পানির ৯০টি কারখানা। এসব কারখানায় অন্তত ৯০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এ ঘটনায় শ্রমিক অসন্তোষের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

২০১৮ সাল থেকে কোম্পানিটির কাছে তিতাস গ্যাসের বকেয়া ৪৭৮ কোটি টাকা। তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ জানান, বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও বিল না দেওয়ায় গতকাল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

তিতাস গ্যাস সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিটি ২০২২ সালের দিকে একবার বকেয়া কিস্তিতে দেওয়ার বিষয়ে আবেদন করেছিল। আদালত বকেয়া কিস্তিতে বিল পরিশোধ করার আদেশ দেন। এর পরও তারা টাকা পরিশোধ করেনি।

ইউনাইটেড গ্রুপের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাসের দাম নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেন্দ্র দুটি হলো ঢাকা ইপিজেড এলাকায় ৮৬ মেগাওয়াট ও চট্টগ্রাম ইপিজেডে অবস্থিত ৭২ মেগাওয়াট কেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি বাণিজ্যিক। তারা সরকারের কাছে নয়, গ্রাহকের কাছে সরাসরি বিদ্যুৎ বিক্রি করে। তাই কেন্দ্র দুটিকে ক্যাপটিভ বিবেচনায় গ্যাসের দাম ঘনমিটারপ্রতি ৩১.

৫০ টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

একই সময়ে আইপিপির (বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র) জন্য গ্যাসের দর ছিল ১৬ টাকা। দাম কম হওয়ায় আইপিপি রেটে গ্যাস পেতে তদবির শুরু করে ইউনাইটেড। রেগুলেটরি কমিশন সেই দাবি নাকচ করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিইআরসির মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়। বিইআরসির তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জানিয়ে দেন, বিইআরসি আইনে কোনোভাবেই ইউনাইটেডের বিদ্যুৎকেন্দ্র আইপিপি হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।

তাই ক্যাপটিভের দরেই তাদের গ্যাস কিনতে হবে। পরে কোম্পানিটি আদালতের শরণাপন্ন হয়। সুপ্রিম কোর্টেও তাদের দাবি নাকচ হয়। এরপর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে নিজেদের ঘনিষ্ঠ এই ব্যবসায়ীর চাওয়া পূরণ করে। অন্তর্বর্তী সরকার গত ৭ মার্চ নির্বাহী আদেশে দেওয়া সুবিধা বাতিল করে। জ্বালানি বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, ইউনাইটেড গ্রুপকে ক্যাপটিভ রেটেই গ্যাসের দাম দিতে হবে।

তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ গতকাল সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, বকেয়া আদায়ে দফায় দফায় যোগাযোগ করলেও ইউনাইটেড গ্রুপ সাড়া দেয়নি। তবে ইউনাইটেড পাওয়ারের হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স শামীম মিয়া সমকালকে বলেন, তিতাসের দাবি অযৌক্তিক। নিয়ম অনুসারেই আইপিপি দরেই গ্যাস বিল হওয়া উচিত। তাই আমাদের কোনো বকেয়া নেই। পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই গ্যাসলাইন কেটে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক শরিফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, না জানিয়েই গ্যাসলাইন কেটে দিয়েছে তিতাস। এখানে ৯০টি কারখানায় প্রায় ৯০ হাজার শ্রমিক রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় সব কারখানাই বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ না পেলে পণ্য রপ্তানিতে সমস্যা হবে। শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ইআরস সরক র আইপ প

এছাড়াও পড়ুন:

রামেক হাসপাতালে ইআরসিপি স্যুট, জটিল রোগের চিকিৎসা মিলবে সহজেই

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে এন্ডোস্কোপিক রেট্রোগ্রেড কোলাঞ্জিও প্যানক্রিয়াটিকোগ্রাফি (ইআরসিপি) স্যুট চালু করা হয়েছে। ফলে, এখানে সহজেই অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব হবে। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ ইআরসিপি স্যুট উদ্বোধন করেন।

ইআরসিপি স্যুট একটি অত্যাধুনিক ও বিশেষায়িত ইউনিট, যেখানে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট, হেপাটোলজিস্ট, হেপাটোবাইলিয়ারি সার্জন ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোসার্জনরা চিকিৎসা কার্যক্রম চালাবেন। খাদ্যনালী, পিত্তথলি ও অগ্ন্যাশয়ের জটিল রোগের ক্ষেত্রে পেট না কেটে এখন থেকে শুধু এন্ডোস্কোপি প্রযুক্তির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা যাবে।হাস

পাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ জানিয়েছেন, এতদিন এই বিশেষায়িত ইউনিটটি অসম্পূর্ণ অবস্থায় ছিল। সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর পর দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি চলে আসে।

তিনি বলেন, “খাদ্যনালী চিকন হয়ে যাওয়া এবং পিত্তথলি ও অগ্ন্যাশয়ের পাথরের চিকিৎসাগুলো এখন থেকে সহজেই করা যাবে। বেসরকারি হাসপাতালে এসব চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আমরা চেষ্টা করব, এ সেবা যেন সাধারণ মানুষ স্বল্প খরচে পেতে পারেন।”

উদ্বোধনের দিনেই এক রোগীকে সফলভাবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রামেক হাসপাতালের পরিচালক।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রামেক হাসপাতালে ইআরসিপি স্যুট, জটিল রোগের চিকিৎসা মিলবে সহজেই