রিয়াল ছেড়ে ব্রাজিলের দায়িত্বে আনচেলত্তি, ঘোষণার অপেক্ষা
Published: 29th, April 2025 GMT
দীর্ঘদিনের গুঞ্জন এবার বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। রিয়াল মাদ্রিদের বর্তমান কোচ কার্লো আনচেলত্তি ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে একাধিক স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম। ইতোমধ্যেই ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) সঙ্গে মৌখিক সমঝোতায় পৌঁছেছেন এই ইতালিয়ান কোচ। এখন অপেক্ষা শুধুই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও চুক্তির।
স্প্যানিশ দৈনিক মার্কা জানিয়েছে, চলতি মে মাসেই রিয়াল ছাড়তে পারেন আনচেলত্তি। ফলে ক্লাব বিশ্বকাপে ডাগআউটে দেখা নাও যেতে পারে তাকে। রিয়ালের লিগ মৌসুম শেষ হবে ২৫ মে। ধারণা করা হচ্ছে, তার পরেই সমঝোতার ভিত্তিতে বিদায় নেবেন তিনি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী জুনে শুরু হওয়া ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব থেকেই ব্রাজিল দলের দায়িত্ব নেবেন আনচেলত্তি। সে অনুযায়ী, গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় ক্লাব বিশ্বকাপের আগেই রিয়াল ছাড়ার পরিকল্পনা তার।
বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে বছরে ১১ মিলিয়ন ইউরো বেতন পান আনচেলত্তি। মৌসুমের শেষ আগেই চুক্তি শেষ করলেও, পুরো মৌসুমের বেতন দেওয়া হবে তাকে। এমনকি আনচেলত্তি চলে গেলেও চুক্তি ভাঙার ক্ষতিপূরণ দাবি করবে না রিয়াল। ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ আনচেলত্তিকে শুভেচ্ছাদূতের মর্যাদা দিয়ে সম্মানজনকভাবে বিদায় জানানোর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন।
ব্রাজিলের আসন্ন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের স্কোয়াড ঘোষণা করতে হবে ১৮ মে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আনচেলত্তি তখনও আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বে না থাকলেও দল গঠনের বিষয়ে তার মতামত থাকছে। এদিকে স্কাই স্পোর্টস দাবি করেছে, আসন্ন এল ক্লাসিকোর পরই আনচেলত্তি মাদ্রিদ অধ্যায়ের ইতি টানবেন।
উল্লেখ্য, এসি মিলান, চেলসি, পিএসজি ও বায়ার্ন মিউনিখের মতো ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে আনচেলত্তির। এবার তিনি ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
বিগ-বির মাধ্যমে জাপানের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ
এক দশক আগে বঙ্গোপসাগর ঘিরে বাংলাদেশের জন্য বিগ-বি নামে পরিচিত বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট গ্রহণ করেছিল জাপান। বঙ্গোপসাগরীয় শিল্প প্রবৃদ্ধির ওই উদ্যোগে রয়েছে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ প্রকল্প আর আধুনিক পরিবহনব্যবস্থার বিকাশ। মে মাসের শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরে বিগ–বির মাধ্যমে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। তাঁর জাপান সফরের আগে টোকিওতে ১৫ মে অনুষ্ঠেয় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে জাপানের আলোচনায় কোন কোন বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
১৫ মে টোকিওতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং জাপানের জ্যেষ্ঠ উপমন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি তাঁর দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে কোন কোন বিষয়গুলো ১৫ মের আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পাবে, তা নিয়ে মতামত নেওয়া হয়। পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফরসহ সচিব পর্যায়ের সফর নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিগ–বিতে সহযোগিতা জোরদারের পাশাপাশি ব্যবসা, বিনিয়োগ, নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ খাতভিত্তিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন সফর নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, টোকিওতে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকটি দুই ভাগে বিভক্ত থাকবে। প্রথম ভাগে থাকবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয়। আর দ্বিতীয় ভাগে থাকবে আঞ্চলিক ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি।
আঞ্চলিক বিষয়াদিতে জাপানের বিগ–বি নিয়ে আলোচনা হবে। এ সময় ঢাকার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের বাস্তবতা তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে এ প্রকল্প সামনে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও বলা হবে। পরে ভারত যদি এর সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, তবে তার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হবে।
বিগ–বির সঙ্গে ২০২৩ সালে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলকে যুক্ত করে জাপান। কিন্তু ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে চরম টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিগ–বিকে বিশেষ করে সংযুক্তিকে বাংলাদেশের পরিমণ্ডলে নেওয়ার পরিকল্পনায় আপাতত একটা ধাক্কা এসেছে। এ নিয়ে জাপান নানাভাবে নিজেদের অস্বস্তির বিষয়টি বাংলাদেশকে জানিয়েছে। বিগ–বি জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের অগ্রাধিকার প্রস্তাব হওয়ায় এটিতে বিশেষ গুরুত্ব আছে টোকিওর। তাই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আগ্রহী জাপান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টার টোকিও সফরে জাপান প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কাছ থেকে সমরাস্ত্র বিক্রির ওপর কয়েক বছর ধরে আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে জাপান।
বাংলাদেশকে ২০২৩ সালে জাপানের সরকারি নিরাপত্তা সহায়তায় (ওএসএ) যুক্ত করা হয়েছে। মূলত জাপান নিজের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে এই কাঠামো তৈরি করেছে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করার এবং ওই দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা দিয়ে থাকে। ওএসএর মাধ্যমে জাপান একটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ঋণের পরিবর্তে অনুদান দিয়ে থাকে।