বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে সংঘটিত বেআইনি-সহিংস ঘটনায় জড়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় (২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে সংঘটিত বেআইনি, সহিংস ঘটনায় জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তথ্য চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়ার কাছে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ, অভিযুক্তের বিস্তারিত বিবরণ, স্বপক্ষে প্রমাণ জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সিলগালা খামে এই অভিযোগসহ তথ্য-প্রমাণ জমা দিতে হবে।

অভিযোগকারীর তথ্য ও পরিচয় কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে রক্ষা করা হবে বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, কিছু অভিযোগ এসেছে। সেগুলো তাঁরা দেখেছেন। তবে তাঁরা বৃহত্তর পরিসরে কাজ শুরু করেছেন, যাতে কেউ বলতে না পারেন যে, তাঁদের তথ্য নেওয়া হয়নি। তাঁরা সিলগালাকৃত খামে তথ্য আহ্বান করেছেন। তথ্য পেলে সে অনুযায়ী তাঁরা শুনানি, গণশুনানি বা সাক্ষাৎকার নেবেন। তারপর বাকি কাজগুলো করবেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের তথ্য তাঁরা তদন্ত কমিটির কাছে পাঠাবেন। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের বিরোধিতাকারী অনেক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। তাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ