বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সহিংস ঘটনায় জড়িতদের তথ্য চেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণবিজ্ঞপ্তি
Published: 29th, April 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে সংঘটিত বেআইনি-সহিংস ঘটনায় জড়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় (২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে সংঘটিত বেআইনি, সহিংস ঘটনায় জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তথ্য চাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়ার কাছে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগ, অভিযুক্তের বিস্তারিত বিবরণ, স্বপক্ষে প্রমাণ জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সিলগালা খামে এই অভিযোগসহ তথ্য-প্রমাণ জমা দিতে হবে।
অভিযোগকারীর তথ্য ও পরিচয় কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে রক্ষা করা হবে বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, কিছু অভিযোগ এসেছে। সেগুলো তাঁরা দেখেছেন। তবে তাঁরা বৃহত্তর পরিসরে কাজ শুরু করেছেন, যাতে কেউ বলতে না পারেন যে, তাঁদের তথ্য নেওয়া হয়নি। তাঁরা সিলগালাকৃত খামে তথ্য আহ্বান করেছেন। তথ্য পেলে সে অনুযায়ী তাঁরা শুনানি, গণশুনানি বা সাক্ষাৎকার নেবেন। তারপর বাকি কাজগুলো করবেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের তথ্য তাঁরা তদন্ত কমিটির কাছে পাঠাবেন। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের বিরোধিতাকারী অনেক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। তাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি