শ্রম আইনে অনেক পরিবর্তন আসছে, এখনো পোক্ত হয়নি: উপদেষ্টা
Published: 30th, April 2025 GMT
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রম আইনে অনেক পরিবর্তন আসছে। এখনো পাকাপোক্ত হয়নি, তবে অনেক পরিবর্তন আসছে। আমাদের আলোচনা হয়েছে। যেসব প্রস্তাব আমরা দিয়েছি, যেগুলো আমরা একসেপ্ট করেছি, সেগুলো আইএলও-কে (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) বলা হয়েছে। সেগুলো ফাইনালাইজ করতে হবে। আরো অনেক কিছু আছে।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কবে নাগাদ আইনটা আসবে, এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, কোনো জিনিসের টাইমলাইন দিতে হয় না বাংলাদেশে। এটা ডিফিকাল্ট। আমি বলব, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, আমার তো একটা ইচ্ছা আছে, আমি থাকতে থাকতে একটা শ্রম আইন পাকাপোক্ত করে দিই। পরে আর কেউ আইনটাতে হাত দেবে কি দেবে না, তা আমি জানি না। আমারও তো ইচ্ছা আছে, আমি একটু কন্ট্রিবিউট করে যাই।
শ্রমিকদের জন্য অনেক কিছুই করতে পারেননি, স্বীকার করে উপদেষ্টা বলেন, অল্প সময়ে করা সম্ভব না, যেমন: তাদের স্বাস্থ্যগত বিষয়, তাদের আবাসনের বিষয়। যেগুলো হওয়া উচিত, আমরা এখনো করতে পারিনি। আমরা প্রসেসে আছি। আপনারা জানেন, শ্রম সংস্কার কমিশন আমাদের কতগুলো প্রস্তাব দিয়েছে, আমরা এগুলো দেখব।
‘‘আমাদের সরকারের প্রচেষ্টা হচ্ছে, হিউম্যান রাইটস এবং ওয়ার্কার রাইটস যেন সমানভাবে থাকে। আমি নিজেও আইএলও-তে গিয়ে কথাগুলো বলে আসছি। শ্রমিক এবং শ্রম আইন নিয়ে আমরা প্রতিদিন কাজ করছি। কিছু কিছু ইমপ্রুভমেন্ট করার চেষ্টা করছি, তার জন্য সবার সহযোগিতা দরকার। শ্রমিকদের সহযোগিতা দরকার, মালিকদের সহযোগিতা দরকার। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু শ্রম মন্ত্রণালয়ের কাজ না এটা। বেশকিছু মিনিস্ট্রি আছে। সেখানে কমার্স মিনিস্ট্রি আছে, বিডা আছে; সবাই মিলে কন্ট্রিবিউট করলে শ্রমিকদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব’’ বলেন তিনি।
সরকার কর্মসংস্থান উইং তৈরি করার চেষ্টা করছে, জানিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কর্মসংস্থান উইং মানে অধিদপ্তর যদি হয়ে যায়, তাহলে আমরা কর্মসংস্থান অধিদপ্তর এস্টাব্লিশ করে কর্মসংস্থানের যে ক্ষেত্রগুলো আছে, সে ক্ষেত্রগুলোতে ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
উপদেষ্টা বলেন, এর আগে আমরা দেখেছি, মে দিবসে বাম দলগুলোকে (দলগুলোর আয়োজন) বড় করে দেখানো হতো। তার মানে, ওই সময় শ্রমিকদের সঙ্গে সরকার ও মালিকদের একটা গ্যাপ ছিল এবং আছে। এই গ্যাপ আমরা কমাতে চাচ্ছি। আপনারা জানেন, আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি মনে করি, ৯৯ শতাংশ শ্রমিকদের পক্ষেই গেছে। স্টেটমেন্টগুলা শ্রমিকদের পক্ষে গেছে।
তিনি বলেন, অনেক ভালো ভালো মালিক আছেন। তা না হলে আমাদের দেশের শিল্পগুলো এগোতে না। সবাই একরকম না। কিন্তু, আমি এখন দেখছি, কিছু কিছু জায়গা আছে, তাদের উদ্দেশ্যই হলো—একটা কিছু করে টাকা-পয়সা বাহির করা।
‘‘বড় প্রশ্ন আসছে, অপ্রচলিত ক্ষেত্রের শ্রমিক। অপ্রচলিত ক্ষেত্রে যেটা আছে, তার ম্যাক্সিমাম নির্মাণশ্রমিক। এর মধ্যে শিপবিল্ডিংও আছে, রিয়েল এস্টেটের লোকজন আছে। আমরা চাচ্ছি, এদেরকে আমাদের ফোল্ডের মধ্যে নিয়ে আসতে’’ যোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ন আসছ
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।