শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন ব‌লে‌ছেন, শ্রম আইনে অনেক পরিবর্তন আসছে। এখনো পাকাপোক্ত হয়নি, তবে অনেক পরিবর্তন আসছে। আমাদের আলোচনা হয়েছে। যেসব প্রস্তাব আমরা দিয়েছি, যেগুলো আমরা একসেপ্ট করেছি, সেগুলো আইএলও-কে (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) বলা হয়েছে। সেগুলো ফাইনালাইজ করতে হবে। আরো অনেক কিছু আছে।

মহান মে দিবস উপলক্ষে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

কবে নাগাদ আইনটা আস‌বে, এ প্রশ্নের জবা‌বে উপ‌দেষ্টা বলেন, কোনো জিনিসের টাইমলাইন দিতে হয় না বাংলাদেশে। এটা ডিফিকাল্ট। আমি বলব, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, আমার তো একটা ইচ্ছা আছে, আমি থাকতে থাকতে একটা শ্রম আইন পাকাপোক্ত করে দিই। পরে আর কেউ আইনটাতে হাত দেবে কি দেবে না, তা আমি জানি না। আমারও তো ইচ্ছা আছে, আমি একটু কন্ট্রিবিউট করে যাই।

শ্রমিকদের জন্য অনেক কিছুই করতে পারেন‌নি, স্বীকার ক‌রে উপ‌দেষ্টা ব‌লেন, অল্প সময়ে করা সম্ভব না, যেমন: তাদের স্বাস্থ্যগত বিষয়, তাদের আবাসনের বিষয়। যেগুলো হওয়া উচিত, আমরা এখনো করতে পারিনি। আমরা প্রসেসে আছি। আপনারা জানেন, শ্রম সংস্কার কমিশন আমাদের কতগুলো প্রস্তাব দিয়েছে, আমরা এগুলো দেখব।

‘‘আমাদের সরকারের প্রচেষ্টা হচ্ছে, হিউম্যান রাইটস এবং ওয়ার্কার রাইটস যেন সমানভাবে থাকে। আমি নিজেও আইএলও-তে গিয়ে কথাগুলো বলে আসছি। শ্রমিক এবং শ্রম আইন নিয়ে আমরা প্রতিদিন কাজ করছি। কিছু কিছু ইমপ্রুভমেন্ট করার চেষ্টা করছি, তার জন্য সবার সহযোগিতা দরকার। শ্রমিকদের সহযোগিতা দরকার, মালিকদের সহযোগিতা দরকার। সরকারের পক্ষ থেকে শুধু শ্রম মন্ত্রণালয়ের কাজ না এটা। বেশকিছু মিনিস্ট্রি আছে। সেখানে কমার্স মিনিস্ট্রি আছে, বিডা আছে; সবাই মিলে কন্ট্রিবিউট করলে শ্রমিকদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব’’ বলেন তি‌নি।

স‌রকার কর্মসংস্থান উইং তৈরি করার চেষ্টা করছে, জা‌নি‌য়ে এম সাখাওয়াত হোসেন ব‌লেন, কর্মসংস্থান উইং মানে অধিদপ্তর যদি হয়ে যায়, তাহলে আমরা কর্মসংস্থান অধিদপ্তর এস্টাব্লিশ করে কর্মসংস্থানের যে ক্ষেত্রগুলো আছে, সে ক্ষেত্রগুলোতে ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করব।

উপদেষ্টা বলেন, এর আগে আমরা দেখেছি, মে দিবসে বাম দলগুলোকে (দলগুলোর আয়োজন) বড় করে দেখানো হতো। তার মানে, ওই সময় শ্রমিকদের সঙ্গে সরকার ও মালিকদের একটা গ্যাপ ছিল এবং আছে। এই গ্যাপ আমরা কমাতে চাচ্ছি। আপনারা জানেন, আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি মনে করি, ৯৯ শতাংশ শ্রমিকদের পক্ষেই গেছে। স্টেটমেন্টগুলা শ্রমিকদের পক্ষে গেছে।

তিনি বলেন, অনেক ভালো ভালো মালিক আছেন। তা না হলে আমাদের দেশের শিল্পগুলো এগোতে না। সবাই একরকম না। কিন্তু, আমি এখন দেখছি, কিছু কিছু জায়গা আছে, তাদের উদ্দেশ্যই হলো—একটা কিছু করে টাকা-পয়সা বাহির করা।

‘‘বড় প্রশ্ন আসছে, অপ্রচলিত ক্ষেত্রের শ্রমিক। অপ্রচলিত ক্ষেত্রে যেটা আছে, তার ম্যাক্সিমাম নির্মাণশ্রমিক। এর মধ্যে শিপবিল্ডিংও আছে, রিয়েল এস্টেটের লোকজন আছে। আমরা চাচ্ছি, এদেরকে আমাদের ফোল্ডের মধ্যে নিয়ে আসতে’’ যোগ ক‌রেন তি‌নি।

সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ন আসছ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত: বিবিসি

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ফলে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জনে পৌঁছেছে। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা বিবিসি।

অন্যদিকে আল জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ