যানজট কমাতে সায়েদাবাদ টার্মিনাল সরানো নিয়ে ২৬ কোটি টাকা গচ্চা
Published: 2nd, May 2025 GMT
রাজধানীর যানজট নিরসনে দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনাল সরিয়ে নেওয়া হবে। নতুন জায়গা নির্ধারণ করা হয় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর সেতুর ওপারে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত বছরের জুনেই চালু হওয়ার কথা ছিল নতুন টার্মিনালটি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে প্রায় ২৬ কোটি টাকা খরচ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
তবে এখন প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ সায়েদাবাদ থেকে টার্মিনাল কাঁচপুরে সরানো হবে কি না। প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে সরকার পরিবর্তনের পর। ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে টার্মিনাল স্থানান্তরের কাজ থমকে আছে।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ইতিমধ্যে অকার্যকর হয়ে গেছে। যানজট নিরসনে এটি সরিয়ে নেওয়া সময়ের দাবি।ঢাকা দক্ষিণ সিটির ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রাজীব খাদেমচট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১৬ জেলার বাস যেন সায়েদাবাদ পর্যন্ত না আসে, এ লক্ষ্যেই কাঁচপুরে টার্মিনাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ‘বাস রুট র্যাশনালাইজেশন কমিটি’। পরিকল্পনা ছিল, দূরপাল্লার বাসযাত্রীরা কাঁচপুরে নামবেন এবং সেখান থেকে নগর পরিবহন বাসে গন্তব্যে পৌঁছাবেন। এতে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকা যানজটমুক্ত হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রাজীব খাদেম প্রথম আলোকে বলেন, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ইতিমধ্যে অকার্যকর হয়ে গেছে। যানজট নিরসনে এটি সরিয়ে নেওয়া সময়ের দাবি। তাঁর মতে, সরকারকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন সায়েদাবাদ টার্মিনালে ১৬ জেলার প্রায় ১১ হাজার বাস আসা-যাওয়া করে। এসব বাস যদি নগরীতে প্রবেশ না করে, তাহলে ঢাকার ৩০ শতাংশ যানজট কমানো সম্ভব।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সাড়ে ১২ একর জমিতে গত বছরের আগস্টে মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়, যা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। টার্মিনালের মাটি যাতে সরে না যায়, এ জন্য চারপাশে খুঁটি বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর থেকে কাজ প্রায় বন্ধ।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন সায়েদাবাদ টার্মিনালে ১৬ জেলার প্রায় ১১ হাজার বাস আসা-যাওয়া করে। এসব বাস যদি নগরীতে প্রবেশ না করে, তাহলে ঢাকার ৩০ শতাংশ যানজট কমানো সম্ভব।গত ২১ মার্চ কাঁচপুর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নির্ধারিত জমিতে মাটি ভরাটের কাজ শেষ হলেও সেখানে আর কোনো নির্মাণকাজ চলছে না। স্থানীয়দের ভাষ্য, সন্ধ্যার পর ওই এলাকায় বখাটেরা মাদক সেবনসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
এদিকে সায়েদাবাদ ছাড়াও ফকিরাপুল, মতিঝিল, কমলাপুর, মালিবাগ, মানিকনগরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চট্টগ্রাম-সিলেটমুখী বাস ছেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর বড় অংশজুড়ে যানজট তৈরি হয়। কাঁচপুর টার্মিনাল চালু হলে এ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতো বলে মনে করেন ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের কর্মকর্তারা।
তবে যোগাযোগবিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল কাঁচপুরে টার্মিনাল করলেই যানজট সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ, সেখান থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রা করার ব্যবস্থা কেমন হবে, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। যেহেতু ঢাকায় এখনো ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক গণপরিবহন নেই, যাত্রীরা বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেল, সিএনজি কিংবা অন্য মাধ্যমে ঢাকায় প্রবেশ করবেন। এতে বরং যানজট আরও বাড়তে পারে।
কাঁচপুরে টার্মিনাল স্থানান্তর প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে অনেক দুর্বলতা আছে। যানজট নিরসনে কেবল টার্মিনালভিত্তিক চিন্তা করলে হবে না। ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।যোগাযোগবিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো.হাদিউজ্জামান
তাঁরা বলছেন, টার্মিনাল এমন স্থানে করতে হবে, যেখানে মেট্রোরেলের সহজ সংযোগ থাকবে, যাতে যাত্রীরা সহজেই নগরীর ভেতরে প্রবেশ করতে পারেন। পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক বাসসেবার মতো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে না নিলে এ প্রকল্প কার্যকর হবে না। এসব দিক বিবেচনায় না রেখে কাঁচপুরে যে পরিমাণ টাকা খরচ করা হয়েছে, তা এখন ‘অপচয়’ হিসেবেই দেখছেন তাঁরা।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বাইরেও পদ্মা সেতুর ওপারের বিভিন্ন জেলার বাস এখনো সায়েদাবাদ ও আশপাশের এলাকা থেকে চলাচল করছে। এসব বাসের জন্য কেরানীগঞ্জের বাঘৈর এলাকায় আরেকটি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। তবে সেখানেও জমি অধিগ্রহণ ব্যয়বহুল হওয়ায় সেই প্রকল্পও থমকে আছে।
যেহেতু ঢাকায় এখনো ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক গণপরিবহন নেই, যাত্রীরা বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেল, সিএনজি কিংবা অন্য মাধ্যমে ঢাকায় প্রবেশ করবেন। এতে বরং যানজট আরও বাড়তে পারে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে টার্মিনাল সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি একটি সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা না থাকলে এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে না।
যোগাযোগবিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, কাঁচপুরে টার্মিনাল স্থানান্তর প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে অনেক দুর্বলতা আছে। যানজট নিরসনে কেবল টার্মিনালভিত্তিক চিন্তা করলে হবে না। ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য নজট ন রসন ঢ ক য় প রব শ প রকল প পর বহন র এল ক সমন ব
এছাড়াও পড়ুন:
বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট
অনেক দিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। যদিও তারা এ সম্পর্কের কথা কখনো স্বীকার করেননি। কয়েক দিন আগে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের কথিত প্রেমিক রচিতের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন হুমা কুরেশি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর বাগদান সম্পন্ন করেছেন তারা। যদিও এই খবরের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি হুমা।
আরো পড়ুন:
আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইনস্টাগ্রামে একটি রহস্যময় বার্তা শেয়ার করেছেন এই অভিনেত্রী। হুমা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে রামেন বাউলের ছবি শেয়ার করে লেখেন, “প্রত্যেকেরই শান্ত হওয়া প্রয়োজন… আর শান্তভাবে কাজ করা উচিত।” পাশাপাশি জানান, তিনি বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছেন।
এর আগে হুমা-রচিতের ঘনিষ্ঠজন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, “হুমা তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিক, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন।”
হুমা ও রচিতের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়, তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গায়িকা আকাসা সিংয়ের শেয়ার করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। এ ছবির ক্যাপশনে আকাসা লেখেন, “এক টুকরো এই স্বর্গের জন্য তোমাদের অভিনন্দন। দারুণ একটি রাত কেটেছে।”
এ ঘটনার কিছুদিন পর, হুমা ও রচিতকে একসঙ্গে দেখা যায় সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবালের বিয়েতে, দুজনেই সেদিন পরেছিলেন গোলাপী রঙের পোশাক। তাদের রসায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো এবং ভক্তরা দ্রুত অনলাইনে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন এই রহস্যময় ব্যক্তিটিকে (রচিত) নিয়ে।
সম্প্রতি, রচিতের ঘনিষ্ঠ একজনের জন্মদিন উদযাপনের সময় আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যায়, যা তাদের বাগদান নিয়ে জল্পনা আরো বাড়িয়ে তোলে। তবে বাগদান নিয়ে নানা চর্চা চললেও সরাসরি একটি কথাও বলেননি হুমা কিংবা রচিত।
রচিত সিংহ একজন নামকরা অভিনয় প্রশিক্ষক। রচিত সিং ওয়ার্কশপ নামে তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন রচিত। তার কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন—গুলশন দেবাইয়া, ইমাদ শাহ, কুণাল কাপুর, পূজা হেগডে, হর্ষবর্ধন রানে, অমৃতা সুবাস, সহানা গোস্বামী, অহনা কুমারা, রণবীর সিং, বরুণ ধাওয়ান, ভিকি কৌশল, অনুশকা শর্মা, অনীত পড্ডা, শানায়া কাপুরের মতো অভিনয়শিল্পীরা।
এর আগে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার মুদাসসার আজিজের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। দীর্ঘ ৩ বছর সম্পর্কে ছিলেন তারা। ২০২২ সালের শেষের দিকে জানা যায়, ভেঙে গেছে এই সম্পর্ক।
ঢাকা/শান্ত