গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ দুর্বৃত্তদের সঙ্গে আপস করে নাই, ভবিষ্যতেও কোনো দুর্বৃত্তদের সঙ্গে আপস করবে না। অনতিবিলম্বে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এখনও রাজপথে শহীদদের রক্ত শুকায়নি, শহীদ ও আহত পরিবারের কান্না থামেনি। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। 

শামীম ওসমানদের আমলে নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসের নগরী হিসেবে পরিচিত ছিল। সেই শামীম ওসমানরা ফ্যাসিবাদী ক্ষমতার পরিবর্তনের পর পালিয়ে যায়। কিন্তু আবার নব্য শামীম ওসমানরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। নারায়ণগঞ্জে আর কোনো মাফিয়ার জন্ম চাই না।

শুক্রবার (২ মে) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের বিসিকে যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুব অধিকার পরিষদের উদ্যোগে এ সমাবেশ হয়।

নুরুল হক নুর বলেন, যে গণঅভ্যুত্থানে দুই সহস্রাধিক মানুষ জীবন দিয়েছে, ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছে, ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা ঘটিয়েছে সেই আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ প্রশ্নে ও গণহত্যার বিচারের প্রশ্নে বিগত ৮ মাসে আমরা কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করিনি। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, এ বিষয়ে কোনো টালবাহানা চলবে না।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৬ বছরে লড়াই সংগ্রাম করলেও জনগণ সেভাবে সে লড়াইয়ে শামিল হয়নি। কারণ রাজনৈতিক নেতৃত্বের কর্মকাণ্ডের প্রতি অবিশ্বাস। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি মানুষের সন্দেহ সংশয় রয়েছে।

তাই গণঅধিকার পরিষদ প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে রাজনীতিতে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে মানুষকে রাজনীতিতে ফেরার আহ্বান করেছে। অল্পসময়ের মধ্যে গণঅধিকারের গণজোয়ার তৈরি হয়েছে।

আওয়ামী লীগের পতন থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পরেও আমাদের রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের মাঝে পুরোনো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করছি। বাংলাদেশের কোথাও চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের প্রভাব বিস্তার বন্ধ হয়নি।

এগুলো চললে কেন এতগুলো মানুষ জীবন দিলো, সেই জবাব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দিতে হবে। কোনো কোনো দল যদি ভাবেন আমরা একাই একশ, আমরা সব নিয়ন্ত্রণ করবো, আমরাই সব হর্তাকর্তা, তাদের বলবো আওয়ামী লীগের পতন থেকে শিক্ষা নিন।

এসময় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো.

রাশেদ খান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: শ ম ম ওসম ন ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ন র য়ণগঞ জ র জন ত ক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফুল স্টপ মারেন’—মানবিক করিডর প্রসঙ্গে সরকারকে নুরুল হক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহায়তা পৌঁছানোর জন্য মানবিক করিডর নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তাতে ‘ফুল স্টপ’ মারতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, ‘আর এক পাও আগাবেন না। আপনাদের প্রতি আমাদের সমর্থন আছে, ভালোবাসা আছে। তার মানে এটা নয় যা ইচ্ছা তাই করবেন, আমরা মেনে নেব।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদ আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে এসব কথা বলেন নুরুল হক।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আমরা একটি কথা বলতে চাই, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর ঝুঁকি তৈরি হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা কোনো সরকারকেই নিতে দেওয়া হবে না।’

জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে নুরুল হক বলেন, ‘নির্বাচন কবে হবে আমরা কিন্তু জানি না। আমরা রাষ্ট্র সংস্কার চাই। অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা-ভালোবাসা রয়েছে। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমার কাছে বেশি সুবিধার মনে হচ্ছে না। নির্বাচনের তাল ঠিক নেই। নির্বাচন কবে হবে কেউ জানে না। আমরা সবাই বলছি, সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। কিন্তু আপনাদের বুঝতে হবে এই দাবি মাঠে কেন এসেছে। এর পেছনে ঘটনা রয়েছে।’

নুরুল হক বলেন, ‘যে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা ঘটাল, এত মানুষকে পঙ্গু করল, এখন পর্যন্ত তাদের নিষিদ্ধের বিষয়ে আমরা কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত দেখি নাই। আমরা পরিষ্কারভাবে সরকারকে বলতে চাই, অনতিবিলম্বে এই গণহত্যাকারী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’

কোনো কোনো উপদেষ্টার মধ্যে আপসকামী মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘কথা সত্য, কোনো কোনো উপদেষ্টার মধ্যে আপসকামী মনোভাব আমরা লক্ষ করছি। তাঁরা ওই প্রশাসনের সঙ্গে মিলে রি-ফাইন্ড আওয়ামী লীগ নামে একটি আওয়ামী লীগ আনতে চাচ্ছেন। আমরা বলতে চাই, আগুন নিয়ে খেলবেন না। একটি বিষয় পরিষ্কার, আওয়ামী লীগের প্রশ্নে গণ অধিকার পরিষদ বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি তৈরি হয়েছে। সেটি বিনষ্ট হলে ওই ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ঝুঁকিতে পড়বে। আবার এখানে একটা ভারতীয় তাঁবেদার শ্রেণি তৈরি হবে।’

বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে শ্রমিক সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, আইনবিষয়ক সম্পাদক শেখ শওকত হোসেন ফরহাদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণহত্যার বিচারে আরও একটি ট্রাইব্যুনাল হচ্ছে
  • জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে সেই দেশ শাসন করবে: নুরুল হক
  • আ. লীগ নিষিদ্ধের জন্য পাড়ায়-মহল্লায় জনতার আদালত তৈরি করব: নাহিদ ইসলাম
  • রাখাইন করিডোর নিয়ে সিদ্ধান্তে এখনই ফুলস্টপ দেন: নুর
  • আওয়ামী লীগের সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে হবে: নাহিদ
  • ফরিদপুরের ঈশান গোপালপুর গণহত্যার ৫৪তম বার্ষিকী পালিত
  • নারীবিষয়ক কমিশন বাতিলসহ সব দাবি না মানলে দেশ অচলের হুঁশিয়ারি হেফাজতের
  • গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: হাসনাত আবদুল্লাহ
  • ‘ফুল স্টপ মারেন’—মানবিক করিডর প্রসঙ্গে সরকারকে নুরুল হক