নারায়ণগঞ্জে আর কোনো মাফিয়ার জন্ম চাই না : নুর
Published: 2nd, May 2025 GMT
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ দুর্বৃত্তদের সঙ্গে আপস করে নাই, ভবিষ্যতেও কোনো দুর্বৃত্তদের সঙ্গে আপস করবে না। অনতিবিলম্বে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এখনও রাজপথে শহীদদের রক্ত শুকায়নি, শহীদ ও আহত পরিবারের কান্না থামেনি। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না।
শামীম ওসমানদের আমলে নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসের নগরী হিসেবে পরিচিত ছিল। সেই শামীম ওসমানরা ফ্যাসিবাদী ক্ষমতার পরিবর্তনের পর পালিয়ে যায়। কিন্তু আবার নব্য শামীম ওসমানরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। নারায়ণগঞ্জে আর কোনো মাফিয়ার জন্ম চাই না।
শুক্রবার (২ মে) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের বিসিকে যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুব অধিকার পরিষদের উদ্যোগে এ সমাবেশ হয়।
নুরুল হক নুর বলেন, যে গণঅভ্যুত্থানে দুই সহস্রাধিক মানুষ জীবন দিয়েছে, ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছে, ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা ঘটিয়েছে সেই আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ প্রশ্নে ও গণহত্যার বিচারের প্রশ্নে বিগত ৮ মাসে আমরা কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করিনি। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, এ বিষয়ে কোনো টালবাহানা চলবে না।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৬ বছরে লড়াই সংগ্রাম করলেও জনগণ সেভাবে সে লড়াইয়ে শামিল হয়নি। কারণ রাজনৈতিক নেতৃত্বের কর্মকাণ্ডের প্রতি অবিশ্বাস। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি মানুষের সন্দেহ সংশয় রয়েছে।
তাই গণঅধিকার পরিষদ প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে রাজনীতিতে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে মানুষকে রাজনীতিতে ফেরার আহ্বান করেছে। অল্পসময়ের মধ্যে গণঅধিকারের গণজোয়ার তৈরি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের পতন থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পরেও আমাদের রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের মাঝে পুরোনো বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করছি। বাংলাদেশের কোথাও চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের প্রভাব বিস্তার বন্ধ হয়নি।
এগুলো চললে কেন এতগুলো মানুষ জীবন দিলো, সেই জবাব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দিতে হবে। কোনো কোনো দল যদি ভাবেন আমরা একাই একশ, আমরা সব নিয়ন্ত্রণ করবো, আমরাই সব হর্তাকর্তা, তাদের বলবো আওয়ামী লীগের পতন থেকে শিক্ষা নিন।
এসময় গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: শ ম ম ওসম ন ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ন র য়ণগঞ জ র জন ত ক আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বর্বরোচিত বোমা হামলার রায় ১ আগষ্ট
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বর্বরোচিত বোমা হামলার রায় আগামী ১ আগষ্ট। দীর্ঘ ২৪ বছর পরে অবশেষে আলোচিত এই মামলাটির বিচার কাজ শেষ হতে যাচ্ছে।
২০০১ সালের ১৬ জুন চাষাঢ়া আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় ২০ জন নেতাকর্মী নিহত হয়। সেদিন নিহত হয়েছিল শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল হাসান বাপ্পী, সরকারী তোলারাম কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের সাবেক জিএস আকতার হোসেন ও তার ভাই সঙ্গীত শিল্পী মোশাররফ হোসেন মশু, সঙ্গীত শিল্পী নজরুল ইসলাম বাচ্চু, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভাসানী, নারায়ণগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ বি এম নজরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাইদুর রহমান সবুজ মোল্লা, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী পলি বেগম, ছাত্রলীগ কর্মী স্বপন দাসসহ ২০ জন।
নৃশংস এ বোমা হামলার ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। এক যুগ পরে ২০১৩ সালে ৬জনকে অভিযুক্ত ও ৩১জনকে অব্যাহতি প্রদান করে চার্জশীটটি দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি।
অভিযুক্ত ৬জন হলেন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান (ইতোমধ্যে অপর এক মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর), জঙ্গী নেতা ওবায়দুল্লাহ রহমান, ভারতের দিল্লী কারাগারে আটক সহোদর আনিসুল মোরসালিন, মুহিবুল মুত্তাকিন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এর ১২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু।
দু’টি মামলায় ১৩৮ জনকে সাক্ষী করা হলেও গত ১২ বছরে সাক্ষ্যগ্রহণের কাজও চলেছে অনেক ঢিমেতালে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকলেও চাঞ্চল্যকর এই মামলার বিচার করা নিয়ে সদিচ্ছার অভাব ছিল। সাক্ষ্যগ্রহণ অত্যন্ত ধীরগতিতে হওয়ায় নিহত ও আহতদের স্বজনরাও ছিলেন চরম হতাশ।
মামলাটির বিচার কার্যক্রম প্রসঙ্গে আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন জানান, বিগত সরকারের আমলে মামলাটির বিচার কাজে দীর্ঘসূত্রিতা ছিল।
আলোচিত এই মামলায় ১৯ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি দ্রুত নিস্পত্তির চেষ্টা করেছি। আশা করছি আগামী ১ আগস্ট মামলাটির রায় ঘোষণা করবেন আদালত।