ময়মনসিংহে সেপটিক ট্যাংকে নেমে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
Published: 5th, May 2025 GMT
ময়মনসিংহে সেপটিক ট্যাংক থেকে কাঠ তুলতে নেমে মামুন মিয়া (১৯) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
শ্রমিক মামুন মিয়া সদর উপজেলার আলালপুর নামাপাড়া এলাকার কাছু মিয়ার ছেলে।
রবিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় মহানগরীর ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড শম্ভুগঞ্জ নলুয়াপাড়া এলাকার আব্দুল হকের নির্মাণাধীন বাসায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে আব্দুল হকের বাড়ির নির্মাণ কাজ চলছিল। মামুন মিয়া নির্মাণ শ্রমিকদের সাথে কাজ করে আসছিলেন। রবিবার সদ্য নির্মাণ করা সেপটিক ট্যাংক থেকে কাঠ তুলতে নামেন মামুন মিয়া। নামার কিছুক্ষণ পরে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে ভিতরে তাকালে তাকে পড়ে থাকতে দেখে থানায় জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মামুনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
জেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার জুলহাস উদ্দিন বলেন, “পুলিশের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেপটিক ট্যাংক ভিতর থেকে মামুনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।”
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
ঢাকা/মিলন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসা পেয়ে বনে ফিরল দলছুট হাতি
পায়ে একাধিক গভীর ক্ষত নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় পাহাড়ে পড়েছিল একটি বন্যহাতি। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে হাতিটির চিকিৎসায় এগিয়ে আসে বন বিভাগ এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। গাজীপুর সাফারি পার্ক ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসকদের যৌথ সহযোগিতায় চিকিৎসা দেওয়া হয় হাতিটিকে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের কাটাবাড়ি এলাকায় অসুস্থ হাতিটির চিকিৎসা দেওয়ার পর বনে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বন বিভাগ জানায়, একটি বন্যহাতি পায়ে গভীর কয়েকটি ক্ষত নিয়ে কাটাবাড়ি পাহাড়ে খুঁড়িয়ে চলছিল। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে এলে বন বিভাগকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ শেরপুরের তত্ত্বাবধানে হাতির সুস্থতায় উদ্যোগ নেওয়া হয়। গাজীপুর সাফারি পার্ক ও স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় প্রথমে ইনজেকশন দিয়ে হাতিটিকে অজ্ঞান করা হয়। পরে ক্ষতস্থানে প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রয়োগ করে আরেকটি ইনজেকশনের মাধ্যমে হাতিটির জ্ঞান ফেরানো হয়। চিকিৎসা শেষ হলে হাতিটি ধীরে ধীরে পাহাড়ের গহিনে দলের কাছে ফিরে যায়।
অসুস্থ বন্যহাতিটির চিকিৎসায় অংশ নেন গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন
ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, নালিতাবাড়ী প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সাকিব হোসেন সাগর, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা শাহীন কবির, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার, ওয়াইল্ড লাইফ রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল আমিন, মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী।
মেডিকেল টিমের প্রধান চিকিৎসক গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রায় ৩-৪ মাস আগে বল্লমজাতীয় অস্ত্র দিয়ে হাতিটিকে আঘাত করা হয়। ৩-৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ওই আঘাতের গভীরতা প্রায় ৬ ইঞ্চির মতো। আঘাতের কারণে হাতিটি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার দেহের মেজর টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাতিটির আঘাতপ্রাপ্ত স্থান ড্রেসিং করে তার দেহে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাতিটি দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবে
বলে আশা তাঁর।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, হাতিটি অসুস্থ থাকায় দলছুট ছিল। খুঁডিয়ে খুঁডিয়ে জঙ্গলে একাই চলাফেরা করত। আমরা হাতিটির গতিবিধি কয়েকদিন ধরে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। এখন থেকে হাতিটির ওপর নজরদারি থাকবে এবং প্রয়োজনে আবারও চিকিৎসা দেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ে বেশ কিছু দিন ধরে বন্যহাতির পাল বিচরণ করছে। এসব হাতি মাঝে মধ্যেই লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। হয়তো স্থানীয় কারও আস্ত্রের আঘাতেই দলছুট হাতিটির পায়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে।