পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মবিরতি পালন করছেন প্রাইম মুভার-ট্রেইলারচালক ও শ্রমিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ১২ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছেন তাঁরা। নগরের পাহাড়তলী থানায় ইউনিয়নের সভাপতি ও দুই শ্রমিককে মারধরের অভিযোগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কর্মবিরতির ডাক দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রাইম মুভার–ট্রেইলার, কংক্রিট মিক্সার, ফ্ল্যাট বেড, ডাম্প ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন।

ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা জানান, গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা  প্রাইম মুভার-ট্রেইলার, কংক্রিট মিক্সার, ফ্ল্যাট বেড, ডাম্প ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম খান ও দুই শ্রমিককে পাহাড়তলী থানায় নিয়ে মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদে নগরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়।

ইউনিয়নের সহসভাপতি হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘মঙ্গলবার অলংকার পুলিশ বক্সে এক চালকের লাইসেন্স জব্দ করলে সেখানে ইউনিয়নের সভাপতি যান। পুলিশ তাঁকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করে। পরে দুই শ্রমিকসহ তাঁকে থানায় নিয়ে মারধরও করা হয়। আজকের মধ্যে এর সমাধান না হলে আমাদের কর্মবিরতি চলবে।’

শ্রমিকদের অভিযোগের প্রসঙ্গে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আজাদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

প্রসঙ্গত, প্রাইম মুভার ও ট্রেইলার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ডিপোসহ বিভিন্ন স্থানে কনটেইনার ও পণ্য পরিবহন করে। কর্মবিরতির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে কনটেইনার ওঠানো–নামানো ব্যাহত হয়েছে বলে জানা গেছে। কনটেইনার ডিপোগুলোতেও পণ্য পরিবহন বন্ধ বলে জানান মালিকেরা।

জানতে চাইলে বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বলেন, ধর্মঘটের প্রভাবে ডিপো থেকে বন্দরে রপ্তানি কনটেইনার পরিবহন বন্ধ রয়েছে। আবার বন্দর থেকে ডিপোতে কনটেইনার পরিবহন বন্ধ রয়েছে।

কাস্টম হাউসে কলমবিরতি

এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা—এই দুই ভাগে ভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। মধ্যরাতে জারি করা এই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সারা দেশে একযোগে কলমবিরতি পালন করছেন এনবিআরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে এই কর্মসূচি পালন করেছেন কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, বাজেট ও রপ্তানি–সংক্রান্ত কার্যক্রম এ কলমবিরতি কর্মসূচির বাইরে বলে জানা গেছে। কলমবিরতির কারণে দেশের সবচেয়ে বড় কাস্টম হাউস চট্টগ্রামে আজ সকাল ১০টা থেকে আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন, পরীক্ষণ ও খালাস কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

আজ বেলা ৩টা পর্যন্ত কলমবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তারা। এর আগে গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন, পরীক্ষণ ও খালাস কার্যক্রম বন্ধ ছিল। দেশের সবচেয়ে বড় এই কাস্টম হাউসে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার আমদানি চালান খালাস হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ইউন য ন পর বহন ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

জাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে।

এর আগে গত ১০ আগস্ট রাতে খসড়া ভোটার তালিকা ও খসড়া আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে যেসব শিক্ষার্থীর নাম তালিকায় আসেনি তাঁদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়। যাচাই–বাছাই শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ও চূড়ান্ত আচরণবিধি প্রকাশ করেছে কমিশন।

কোন হলে কত ভোটার

চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী ২১টি আবাসিক হলে মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ৫ হাজার ৮৬০, আর ছাত্রী ভোটার ৬ হাজার ০৫৯।

ছাত্র হল

আলবেরুনী হলে ২১১, আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে ৩৪১, শহীদ সালাম–বরকত হলে ২৯৯, মওলানা ভাসানী হলে ৫২১, ১০ নম্বর হলে ৫৪০, শহীদ রফিক–জব্বার হলে ৬৫৬, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫৭, ২১ নম্বর হলে ৭৫২, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ৯৯৪, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে ৯৫৪, মীর মশাররফ হোসেন হলে ৪৭৭ জন।

ছাত্রী হল

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৮২, জাহানারা ইমাম হলে ৪০০, প্রীতিলতা হলে ৪০২, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪১৭, সুফিয়া কামাল হলে ৪৬০, ১৩ নম্বর হলে ৫৩২, ১৫ নম্বর হলে ৫৭৬, রোকেয়া হলে ৯৫৭, ফজিলাতুন্নেছা হলে ৮০৮, বীর প্রতীক তারামন বিবি হলে ৯৮৩ জন।

আজ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এবং আগামীকাল মঙ্গলবার একই সময়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। তবে প্রার্থীকে নিজে উপস্থিত হয়ে মনোনয়ন জমা দিতে হবে।

মনোনয়নপত্রের নির্দেশনা

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সাত দফা নির্দেশনা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে রয়েছে—

১. একজন প্রার্থী একাধিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

২. প্রতিটি মনোনয়নপত্রে একজন প্রস্তাবক ও একজন সমর্থকের স্বাক্ষর, শিক্ষাবর্ষ ও বিভাগ উল্লেখ করতে হবে।

৩. একই ব্যক্তি একাধিক প্রার্থীর প্রস্তাবক বা সমর্থক হতে পারবেন না (কার্যকরী সদস্য পদ ছাড়া)। কার্যকরী সদস্য পদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছয়জনের (তিন নারী, তিন পুরুষ) প্রস্তাবক বা সমর্থক হওয়া যাবে।

৪. মনোনয়ন জমার সময় শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র বা ছবিযুক্ত লাইব্রেরি কার্ড/ইনডেক্স কার্ড প্রদর্শন করতে হবে।

৫. প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে সব পাওনা পরিশোধের প্রমাণ দিতে হবে।

৬. মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি জমা দিতে হবে (দুই মাসের বেশি পুরোনো ছবি গ্রহণযোগ্য নয়)।

৭. প্রতিটি হলে মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমাদানের জন্য পৃথক রেজিস্ট্রার খাতা সংরক্ষণ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ