এবি ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান কাইজার এ চৌধুরী
Published: 16th, May 2025 GMT
এবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৮১৩তম বোর্ড সভায় কাইজার এ চৌধুরী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
কাইজার এ চৌধুরী দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে সিইও এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কাইজার চৌধুরী তার পেশাগত জীবন শুরু করেন ১৯৭৫ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে। এই ব্যাংকে তিনি টানা ২৪ বছর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ওয়ান ব্যাংকে এবং ২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এবি ব্যাংকে সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মেঘনা ব্যাংকেও সিইও হিসেবে কাজ করেছেন।
পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতার অংশ হিসেবে তিনি জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানি (বাংলাদেশ লিমিটেড) এবং বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিআইএসি)-এ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসির একজন স্বতন্ত্র পরিচালক এবং এবি ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যাংকিং খাতের বাইরেও কাইজার এ চৌধুরীর আলাদা পরিচিতি রয়েছে একজন শিশুসাহিত্য অনুরাগী হিসেবে। সাহিত্যের এই শাখায় তার ৫০টির বেশি প্রকাশনা রয়েছে। শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী কাইজার চৌধুরী একজন অভিজ্ঞ, দক্ষ ও পেশাদার ব্যাংকার। এবি ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ব্যাংকটির অগ্রযাত্রাকে আরো শক্তিশালী করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ঢাকা/সুমন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ইজ র এ চ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।
অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’
স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।
এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া