নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা: ফারুকী
Published: 19th, May 2025 GMT
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা হয়ে থাকলো বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সোমবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এমন মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণত চেষ্টা করি আমার মন্ত্রণালয়ের কাজের বাইরে কথা না বলতে। কিন্তু আমার তো একটা পরিচয় আছে। আমি এই ইন্ডাস্ট্রিরই মানুষ ছিলাম এবং দুইদিন পর সেখানেই ফিরে যাবো। নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা হয়ে থাকলো আমাদের জন্য।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সরকারের কাজ জুলাইয়ের প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা। ঢালাও মামলার ক্ষেত্রে আমাদের পরিষ্কার অবস্থান প্রাথমিক তদন্তে সংশ্লিষ্টতা না থাকলে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। এবং সেই নীতিই অনুসরণ করা হচ্ছিল।’
ফারিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলা অনেকদিন ধরেই ছিল উল্লেখ করে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে গ্রেপ্তার কোনো উদ্যোগ নেওয়ার বিষয় আমার নজরে আসেনি। কিন্তু এয়ারপোর্টে যাওয়ার পরেই এই ঘটনাটা ঘটে। আওয়ামী লীগের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনকে কেন্দ্র করে ক্ষোভের পর ওভার নার্ভাসনেস থেকেই হয়তোবা এইসব ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কয়দিন আগে ব্যারিস্টার আন্দালিব পার্থের স্ত্রীর সঙ্গেও এ রকম একটা ঘটনা ঘটেছে। এইসব ঘটনা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য না।’
স্ট্যাটাসে ফারুকী আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ফারিয়া আইনি প্রতিকার পাবে। এবং এই ধরনের ঢালাও মামলাকে আমরা আরও সংবেদনশীলভাবে হ্যান্ডেল করতে পারব- এই আশা। আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের প্রধান কাজ জুলাইয়ের প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে চেয়ারম্যান শূন্য জবির সিএসই বিভাগ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে গত ১৪ দিন ধরে চেয়ারম্যান নেই।
গত ২ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে বিভাগটি কার্যত নেতৃত্বশূন্য। এ কারণে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমে প্রভাব পড়ছে।
আরো পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
বিভাগে চেয়ারম্যান নিয়োগকে ঘিরে মূলত দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে দুই সিনিয়র অধ্যাপকের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরে বিভাগে মাত্র দুইজন অধ্যাপক পালাক্রমে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর মধ্যে অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন দুইবার এবং অপরজন তিনবার দায়িত্বে ছিলেন। বিভাগে নতুন করে আরো চারজন শিক্ষক অধ্যাপক পদে উন্নীত হয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তাদের মধ্য থেকেই নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়ার কথা। কিন্তু পুরোনো অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আবারো পদ দাবি করেন ড. নাসির উদ্দিন। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভাগের সব শিক্ষকদের নিয়ে একটি সভা করে। শিক্ষকদের সম্মতিতে অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালাকে অস্থায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনদিন পরই গত ১৪ সেপ্টেম্বর ড. নাসির উদ্দিন ড. পরিমল বালার কাছে একটি আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার পর বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে যান ডিন। শেষ পর্যন্ত তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রশাসনের কাছে অব্যাহতি চান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন জানান, তিনি ইতোমধ্যে দুইবার চেয়ারম্যান ছিলেন। বিভাগে এখন নতুন তিনজন অধ্যাপক আছেন ঠিকই, কিন্তু জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে চেয়ারম্যান হওয়ার অধিকার তারই রয়েছে। তাই তাকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান পদ ডিনকে দেওয়ায় তিনি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
চেয়ারম্যানবিহীন অবস্থায় প্রশাসনিক কার্যক্রম ও একাডেমিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। সিএসই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পলাশ বলেন, “আজ ১৪ দিন হয়ে গেলেও বিভাগে চেয়ারম্যান নেই। এতে আমরা একাডেমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। অন্য বিভাগ থেকে কেনো চেয়ারম্যান দেওয়া হবে? আমাদের ছয়জন অধ্যাপকের মধ্য থেকেই নিয়োগ দিতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, কোনো বিভাগে যদি অধ্যাপক না বাড়ে তবে বিদ্যমান অধ্যাপকরা পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু নতুন কেউ অধ্যাপক হলে তাকেই চেয়ারম্যান করার নজির রয়েছে। এমনকি বর্তমান উপাচার্যের বিভাগেও একইভাবে নতুন অধ্যাপককে চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। তবুও সিএসই বিভাগে সেই নিয়ম কার্যকর না হওয়ায় সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, “চেয়ারম্যান নিয়োগে স্থায়ী সমাধানের জন্য আইন উপদেষ্টাদের কাছে মতামত চেয়েছি। এজন্যই অস্থায়ী সমাধান হিসেবে ডিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নোটিশ পাঠানোয় পরিস্থিতি জটিল হয়ে গেছে, যা আমাদের জন্য বিব্রতকর।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী