৩৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেছেন। গড়েছেন ছক্কার রেকর্ড। আইপিএলে নিজের অভিষেক মৌসুমেই ২৪টি ছক্কা মেরেছেন বৈভব সূর্যবংশী, যা এক মৌসুমে ২০ বছরের কম বয়সী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। কাল সূর্যবংশী ম্যাচ শেষেও ক্রিকেট সমর্থকদের মুগ্ধ করেছেন।

কীভাবে? ম্যাচ শেষে দুই দলের ক্রিকেটাররা হাত মেলানোর সময়ে চেন্নাই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছেন সূর্যবংশী। এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আর তাতে প্রশংসায় ভাসছেন ১৪ বছর বয়সী সূর্যবংশী।

সেই সময়ে ধারাভাষ্যকক্ষে ছিলেন কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার। তিনি বাঁহাতি এই ওপেনারের প্রশংসা করেছেন, ‘ছেলেটি সম্মান দেখিয়ে সিনিয়র আরেকজন ক্রিকেটারের পা ছুঁল। দারুণ আচরণ।’

আরও পড়ুনবাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান দলে একের পর এক চমক, আছেন রেকর্ড গড়া এক ছক্কা মেশিন১ ঘণ্টা আগে

ধোনি যেমন এবারের আইপিএলে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড়, তেমনি সূর্যবংশী এবারের তো বটেই, আইপিএল ইতিহাসেই সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড়। কাল দুজনের লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছেন ‘পুঁচকে’ সূর্যবংশীই। চেন্নাইয়ের ১৮৯ রানের লক্ষ্যে সূর্যবংশীর রাজস্থান ১৭.

১ ওভারেই তাড়া করেছে।

যদিও রাজস্থান টুর্নামেন্ট থেকে আগেই ছিটকে পড়েছে। কাল শেষ ম্যাচের জয়ের মধ্যে দিয়ে লিগ পর্বের ১৪ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে মৌসুম শেষ করল রাজস্থান। পয়েন্ট তালিকায় দলটির অবস্থান নয় নম্বরে। রাজস্থানের মতো চেন্নাইও প্লে-অফের দৌড় থেকে অনেক আগেই ছিটকে পড়েছে। দশ দলের টুর্নামেন্টে ধোনির দল আছে দশ নম্বরে।

কাল চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে প্রথম আইপিএল যাত্রা শেষ হয়েছে সূর্যবংশীর। প্রথম মৌসুমে ৭ ম্যাচ ২৫২ রান করেছেন এই ক্রিকেটার। স্ট্রাইক রেট ছিল ২০৬.৫৫।

আরও পড়ুনপিএসএল প্লে–অফে সাকিব–মিরাজদের প্রতিপক্ষ কারা৩ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ