নিজের ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে কথা বলার সময় এখনো ক্ষোভে ফেটে পড়েন ফারুক আহমেদ। তাঁর ভাই ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুঞ্চ শহরের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইকবাল।

৭ মে সকালে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) সীমান্তে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির সময় মোহাম্মদ ইকবাল নিহত হন। আগের রাতেই পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। ভারতের ওই হামলার পরপরই সীমান্তজুড়ে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়েছিল।

ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল সশস্ত্র গোষ্ঠীর গুলিতে ২৬ পর্যটক নিহত হন। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তানের মদদে ওই হামলা হয়েছে। পাকিস্তান অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ নিয়ে দুই দেশের নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।

ফারুক বলেন, তাঁর ভাই সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন, সেই জিয়া-উল-উলুম মাদ্রাসায় তিনি দুই দশকের বেশি সময় ধরে শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছিলেন।

মোহাম্মদ ইকবালের মৃত্যু তাঁর পরিবারের জন্য শুধু ভয়াবহ শোকেরই নয়, বরং ভয়ংকর সংকটের সূচনাও ছিল।

ইকবালের মৃত্যু নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ে, যেগুলোতে তাঁকে একজন সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়। পরে পুলিশ একটি বিবৃতি দিয়ে ওই সব সংবাদমাধ্যমের দাবি অস্বীকার করে।

ফারুক বলেন, ‘আমার ভাই একজন শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু তাঁরা শুধু তাঁর দাড়ি আর মাথার টুপি দেখেছে এবং তাঁকে একজন সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছে।’

ক্ষোভের সঙ্গে ফারুক আরও বলেন, ‘এটা অনেকটা আমাদের ক্ষতে লবণ ঘষে দেওয়ার মতো। আমরা ইকবালকে হারিয়েছি এবং তারপর গণমাধ্যম তাঁর বদনাম করেছে। মৃত মানুষ তো নিজের পক্ষে কিছু বলতে পারে না।’

পেহেলগামে হামলা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শুধু সামরিক উত্তেজনাই বৃদ্ধি পায়নি, বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমগুলোতে আরও একটি যুদ্ধ চলেছে, সেটি হলো বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়ানোর যুদ্ধ। অনলাইন ও টেলিভিশনগুলোতে ওই সব বিভ্রান্তিকর দাবি ও পাল্টা দাবি ক্রমাগত প্রচার করা হয়েছে।

ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই বিমান হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘাতে চার দিনে সীমান্তে গোলাবর্ষণে মোট ১৬ ভারতীয় নিহত হয়েছেন, যাঁদের একজন ইকবাল।

পাকিস্তান ৪০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে তাঁদের কতজন সীমান্তে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন, তা বলা হয়নি।

পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের ইতিহাস দীর্ঘ। উভয় দেশ আংশিকভাবে কাশ্মীর নিয়ন্ত্রণ করে এবং পুরো অঞ্চলটি নিজেদের বলে দাবি করে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর কাশ্মীর নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশ তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে। এ মাসের শুরুতে আরেকটি সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে তারা পৌঁছে গিয়েছিল। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।

এবার পেহেলগামে হামলা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শুধু সামরিক উত্তেজনাই বৃদ্ধি পায়নি, বরং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমগুলোতে দুই দেশের মধ্যে আরও একটি যুদ্ধ চলেছে, সেটি হলো বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়ানোর যুদ্ধ। অনলাইন ও টিভি চ্যানেলগুলোতে ওই সব বিভ্রান্তিকর দাবি ও পাল্টা দাবি ক্রমাগত প্রচার করা হয়েছে।

‘দর্শক আকর্ষণের প্রতিযোগিতা থাকায় চ্যানেলগুলোতে কিছুটা নাটকীয়তা থাকবেই। তবে এই (ভারত-পাকিস্তান) সংঘাতের সময় অতিরিক্ত দেশপ্রেম দেখাতে গিয়ে অন্ধ হয়ে যে রকম আগ্রাসী, যুদ্ধোন্মুখ বা হিংসাত্মক মনোভাবের প্রকাশ এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রচার চালানো হয়েছে, তার তীব্রতা ছিল নজিরবিহীন—এমন কিছু আমি আগে কখনো দেখিনি।’মনীষা পান্ডে, নিউজলন্ড্রির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক

যেমন করে ইকবালের পরিচয় নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে, তেমনি বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্য কিছু মূলধারার সংবাদমাধ্যম ও ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।

এমন দাবিও করা হয়েছিল যে ভারত পাকিস্তানের করাচি বন্দর ধ্বংস করে দিয়েছে। পরে ভারত সরকারই এই দাবি ভুয়া বলে জানায়।

এ বিষয়ে নিউজলন্ড্রি নামে স্বাধীন সংবাদ প্ল্যাটফর্মের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মনীষা পান্ডে বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রচারিত ভুল তথ্য ও ভিত্তিহীন দাবির এত ছড়াছড়ি তাঁকে অবাক করছে।

মনীষা আরও উল্লেখ করেন, দর্শক আকর্ষণের প্রতিযোগিতা থাকায় চ্যানেলগুলোতে কিছুটা নাটকীয়তা থাকবেই। তবে এই (ভারত-পাকিস্তান) সংঘাতের সময় অতিরিক্ত দেশপ্রেম দেখাতে গিয়ে অন্ধ হয়ে যে রকম আগ্রাসী, যুদ্ধোন্মুখ বা হিংসাত্মক মনোভাবের প্রকাশ এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রচার চালানো হয়েছে, তার তীব্রতা ছিল নজিরবিহীন। এমন কিছু তিনি আগে কখনো দেখেননি।

ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়া কতটা যন্ত্রণাদায়ক, তা ফারুকের চেয়ে ভালো কেউ জানে না। তাঁর জিজ্ঞাসা, ‘আমি জানি না সংবাদ চ্যানেলগুলো কোথা থেকে আমার ভাইয়ের ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে। কার সঙ্গে তারা কথা বলেছে? আমার ভাইকে একজন সন্ত্রাসী দাবি করার পক্ষে কী ধরনের প্রমাণ তাদের হাতে আছে?’

অন্যান্য দিনের মতো ৭ মে সকালে তাঁর ভাই মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন, কিন্তু বাড়িতে ভাইয়ের মৃতদেহ ফেরত আসে। দুপুরে কাছের একটি কবরস্থানে তাঁর ভাইকে কবর দেওয়া হয়। সে সময় নিহত ইকবালের পরিবারের ধারণাই ছিল না কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ইকবালের মৃত্যু নিয়ে কী কী মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। তাঁরা ইকবালের দাফন-কাফন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

ভারত-পাকিস্তান সর্বশেষ সংঘাতের পর কয়েক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে, ইকবালের পরিবার এখনো শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

ফারুক বলেন, অন্যান্য দিনের মতো ৭ মে সকালে তাঁর ভাই মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িতে ভাইয়ের মৃতদেহ ফেরত আসে। দুপুরের দিকে কাছের একটি কবরস্থানে তাঁর ভাইকে কবর দেওয়া হয়। সে সময় নিহত ইকবালের পরিবারের ধারণাই ছিল না, কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ইকবালের মৃত্যু নিয়ে কী কী মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। তাঁরা ইকবালের দাফন-কাফন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

কয়েক ঘণ্টা পর ইকবালের একজন স্বজন বার্তা আদান–প্রদানের মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভিডিও পান। ভিডিওটি একটি সুপরিচিত নিউজ চ্যানেলের, যেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী একজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে বলা হচ্ছে এবং স্ক্রিনে ইকবালের ছবি দেখানো হচ্ছে।

ফারুক বলেন, ‘আমরা চমকে উঠেছিলাম। তারপর শিগগিরই আমাদের কাছে আরও অনেক মানুষ ফোন করতে শুরু করল, তাঁরা জানতে চাচ্ছিল কী ঘটেছে এবং কেন গণমাধ্যম ইকবালকে সন্ত্রাসী বলছে।’

ভারতের আরও কয়েকটি বড় নিউজ চ্যানেল খবরটি প্রচার করেছিল বলেও দাবি করা হয়। বিবিসি তাদের কয়েকটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল।

একটি নিউজ চ্যানেলের খবরে বলা হয়েছিল, পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের একটি ঘাঁটিতে ভারতের হামলায় ইকবাল নিহত হয়েছেন। তাঁকে পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তইয়্যেবার একজন সন্ত্রাসী বলা হচ্ছিল।

‘আমাদের পরিবারের সদস্যরা বহু প্রজন্ম ধরে পুঞ্চে বসবাস করছে। তারা কী করে বলতে পারে আমার ভাই পাকিস্তানে বসবাস করতেন? তাদের (গণমাধ্যমকে) লজ্জিত হওয়া উচিত।’ফারুক আহমেদ, নিহত মোহাম্মদ ইকবালের ভাই

ফারুক বলেন, ‘আমাদের পরিবারের সদস্যরা বহু প্রজন্ম ধরে পুঞ্চে বসবাস করছে। তারা কী করে বলতে পারে, আমার ভাই পাকিস্তানে বসবাস করত? তাদের (গণমাধ্যম) লজ্জিত হওয়া উচিত।’

ইকবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ এত দ্রুত এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল যে ৮ মে পুঞ্চ পুলিশ একটি বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করে। পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্তবর্তী একটি মাদ্রাসায় গোলাবর্ষণে ইকবাল মারা গেছেন।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির মধ্যেও ভারতের হুমকি, পাকিস্তানের ক্ষোভ২৩ মে ২০২৫

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পুঞ্চ পুলিশ এমন ভিত্তিহীন প্রচার দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করছে। নিহত মাওলানা মোহাম্মদ ইকবাল স্থানীয় সমাজে একজন সম্মানিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং তাঁর কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল না।

তাঁর মৃত ভাইয়ের এবং তাঁদের পরিবারের সম্মানহানি যেভাবে করা হয়েছে, তার তুলনায় পুলিশের ওই বিবৃতি খুবই সামান্য এবং অনেক দেরিতে দেওয়া বলে মনে করেন ফারুক।

ফারুক বলেন, ‘ততক্ষণে সেই মিথ্যা দাবি ভারতের লাখ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে।’

একটিমাত্র চ্যানেল ছাড়া আর কোনো সংবাদ চ্যানেল এ জন্য তাঁর পরিবার বা নিজেদের দর্শকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা পর্যন্ত করেনি বলে জানান ফারুক।

ফারুক বলেন, তিনি ওই চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে চান, কিন্তু পরিবারের আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে এখনই তাঁর পক্ষে সেই প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

পুরো পরিবারে ইকবাল একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন বলেও জানান ফারুক। তিনি বলেন, ‘তিনি একজন শান্ত এবং ভদ্র মানুষ ছিলেন, যিনি শিশুদের পড়াতে ভালোবাসতেন। কিন্তু বিশ্বকে এখন কে এই কথা জানাবে। অনেক মানুষের কাছে আমার ভাই এখনো একজন সন্ত্রাসী। তারা মনে করে, তাঁকে হত্যা করা ঠিকই ছিল। কীভাবে তারা আমাদের যন্ত্রণা বুঝবে।’

আরও পড়ুনভারত কেন যুদ্ধ করে পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী বিরোধের সমাধান করতে পারবে না২০ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইকব ল র ম ত য ইকব ল র পর ফ র ক বল ন র পর ব র র আম র ভ ই একজন স ক র কর হয় ছ ল আম দ র ব স কর ন ত কর য় ন হত র সময় বসব স

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে অধ্যাদেশের খসড়াটি সচিব কমিটির মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি প্রস্তাবিত পুলিশ কমিশনের কাঠামো ও কার্যক্রমের খসড়া তৈরি করেছে।

খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এই কমিশনের চেয়ারপারসন হবেন। সদস্য থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ; গ্রেড-২ পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা; অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা; পুলিশ একাডেমির একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ; আইন, অপরাধবিজ্ঞান বিষয়ের একজন কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক; ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন একজন মানবাধিকারকর্মী।

আরও পড়ুনপুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে স্বাধীন কমিশন অপরিহার্য৮ ঘণ্টা আগেকমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন।

কমিশনের চেয়ারপারসন আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমপদমর্যাদার হবেন। সদস্যরা যোগদানের দিন থেকে চার বছর নিজ নিজ পদে থাকবেন। মেয়াদ শেষে কোনো সদস্য আবার নিয়োগের যোগ্য হবেন না।

অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ প্রতিপালনে বাধ্যবাধকতার বিষয়ে বলা হয়েছে—এই কমিশন যেকোনো কর্তৃপক্ষ বা সত্তাকে কোনো নির্দেশ দিলে উক্ত কর্তৃপক্ষ বা সত্তা অনধিক তিন মাসের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। তবে কমিশনের নির্দেশ বা সুপারিশ বাস্তবায়নে কোনো অসুবিধা হলে সে ক্ষেত্রে নির্দেশ বা সুপারিশ পাওয়ার অনধিক তিন মাসের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। কমিশন বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে যে নির্দেশ বা সুপারিশ পাঠাবে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ বা সুপারিশ কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করে কমিশনকে জানাতে হবে।

আরও পড়ুনকোনো দল নয়, পুলিশের আনুগত্য থাকবে আইন ও দেশের প্রতি৯ ঘণ্টা আগেপুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

এই কমিশনের সদস্য পদে নিয়োগের সুপারিশ প্রদানের জন্য সাত সদস্যের সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠন করা হবে। খসড়া অধ্যাদেশে প্রধান বিচারপতির মনোনীত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির মনোনীত একজন সরকারদলীয় এবং একজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যকে বাছাই কমিটিতে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের উপস্থিতিতে বাছাই কমিটির কোরাম হওয়া ও বাছাই কমিটির বাছাই প্রক্রিয়া শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে।

আরও পড়ুন‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা১৭ ঘণ্টা আগে

পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ খসড়ায় কমিশন প্রতিষ্ঠা, কার্যালয়, সদস্যদের নিয়োগ, মেয়াদ, কমিশনের সদস্য হওয়ার জন্য কারা অযোগ্য, সদস্যদের পদত্যাগ, অপসারণ, পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা বৃদ্ধি, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, নাগরিকের অভিযোগ অনুসন্ধান-নিষ্পত্তি, পুলিশ সদস্যদের সংক্ষোভ নিরসন, পুলিশপ্রধান নিয়োগ, আইন-বিধি, নীতিমালা প্রণয়ন ও গবেষণা বিষয়েও প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের পর জুলাই জাতীয় সনদেও এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

আরও পড়ুনমাঝেমধ্যে শুনতে হয়, ‘উনি কি আমাদের লোক’: আইজিপি১৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
  • নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ৩১ বিভাগকে প্রস্তুতির নির্দেশ ইসির