গাজায় নতুন করে ৪০ শতাংশ এলাকা খালি করার নির্দেশ ইসরায়েলের: জাতিসং
Published: 28th, May 2025 GMT
জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অব্যাহত বোমাবর্ষণ ও নতুন করে এলাকা খালি করার নির্দেশ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের জীবন ধ্বংস করছে।
গাজায় ইসরায়েলের নতুন বাস্তুচ্যুতির নির্দেশে ৪০ শতাংশেরও বেশি এলাকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
মঙ্গলবার (২৭ মে) মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওবিএইচএ) এর উদ্ধৃতি দিয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, “আমরা জোর দিয়ে বলছি যে, গাজায় দুর্ভিক্ষ রোধ করতে এবং যেখানেই থাকুক না কেন সকল বেসামরিক নাগরিকের চাহিদা মেটাতে মানবিক কার্যক্রমের একটি অর্থবহ স্কেল বৃদ্ধি অপরিহার্য।”
আরো পড়ুন:
গাজায় স্কুল ও আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা, নিহত ৪৯
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা মাল্টার
ইসরায়েলের আক্রমণ হাজার হাজার মানুষকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে বলে উল্লেখ করে ডুজারিক বলেন, “গতকাল, রাফা, খান ইউনিস এবং মধ্য গাজার প্রায় ১৫৫ বর্গকিলোমিটার (৬০ বর্গমাইল) এলাকা জুড়ে ইসরায়েল নতুন করে আরেকটি বাস্তুচ্যুতির আদেশ জারি করেছে। ৬০টিরও বেশি এলাকা খালি করতে বলা হয়েছে। এটি গাজা উপত্যকার ৪০ শতাংশেরও বেশি এলাকাকে প্রতিনিধিত্ব করে।"
জাতিসংঘের মুখপাত্র উল্লেখ করেন, বেইত হানুন, ইজবাত বেইত হানুন এবং বেইত লাহিয়ার বাস্তুচ্যুতি স্থানগুলো প্রায় খালি, অন্যদিকে খান ইউনিসের বাসিন্দারা এখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে রয়েছে এবং খাবার ছাড়াই দীর্ঘ দূরত্ব হেঁটে শারীরিকভাবে ক্লান্ত।
ডুজারিক বলেন, “মার্চ মাসে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, আমাদের অংশীদারদের অনুমান, ৬ লাখ ৩২ হাজারেও বেশি মানুষ আবারো পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।”
স্বাস্থ্যসেবার অবনতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “গত সোমবার থেকে যুদ্ধ, আক্রমণ বা বাস্তুচ্যুতি আদেশের কারণে দুই ডজনেরও বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং মোবাইল ক্লিনিক এবং একটি হাসপাতাল তাদের পরিষেবা স্থগিত করেছে।”
তিনি ইসরায়েলকে গাজায় মানবিক সাহায্যে প্রবেশের জন্য সব সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করতে হবে এবং আর বিলম্ব না করে মানবিক কার্যক্রম সক্রিয় করতে হবে।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।