উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে অবৈধভাবে পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরো জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘের সাউথ-সাউথ কোঅপারেশনের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির ২২তম অধিবেশনে এ আহ্বান জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী।

বুধবার (২৮ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সামাজিক উদ্যোগ বা সোশ্যাল বিজনেসের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, “স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা ও নবায়নযোগ্য শক্তির মতো খাতে এই ধরনের উদ্যোগ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ইতিবাচক ও গুণগত পরিবর্তন আনতে পারে।”

তিনি উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে যুবসমাজের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, “তরুণদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে হবে। তাদের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে শিক্ষা ও উদীয়মান প্রযুক্তি খাতে, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো খাতে, দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।”

রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী বলেন, “বিশ্বব্যাপী ন্যায়বিচার ও পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনার লক্ষ্যে সম্মিলিত রাজনৈতিক সদিচ্ছা গড়ে তোলা জরুরি।”

তিনি আরো বলেন, “স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় থাকা দেশগুলোর জন্য বর্তমান বিশেষ সুবিধাগুলি ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া উচিত, যেন উত্তরণ প্রক্রিয়া টেকসই হয়।”

উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি ন্যায়সংগত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ‘তিন শূন্যের’ (দারিদ্র্য শূন্য, কার্বন নিঃসরণ শূন্য এবং বৈষম্য শূন্য) বিশ্ব গঠনের প্রতি বাংলাদেশের অটল সমর্থনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ