মানব পাচারে জড়িত অভিযোগে ২ চীনা নাগরিকসহ গ্রেপ্তার ৩
Published: 28th, May 2025 GMT
মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে দুই চীনা নাগরিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গত সোমবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুই চিনা নাগরিক হু জুন জুন (৩০) ও ঝাং লেইজি (৫৪)। অন্যজন বাংলাদেশি মো. নয়ন আলী (৩০)।
আজ বুধবার এবিপিএনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এক তরুণীর (১৯) মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি প্রথমে বিমানবন্দর এপিবিএনের নজরে আসে। সোমবার রাতে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পাচারকালে তিনি বিমানবন্দরের মূল প্রবেশপথ গোলচত্বর এলাকায় এপিবিএনের কাছে অভিযোগ করেন, চিনা নাগরিক হু জুন জুন ও ঝাং লেইজি তাঁকে চীনে পাচারের চেষ্টা করছেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বিমানবন্দর এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার ফাউজুল কবীর মঈন ফোর্সের সহযোগিতায় দুই চীনা নাগরিককে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বিমানবন্দর এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তির তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে আরও দেশি–বিদেশি পাচারকারী ও নারী ভুক্তভোগী আছেন। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর এপিবিএনের একটি দল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সেই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে নয়ন আলীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যরা পালিয়ে যান। এ সময় পুলিশ পাচারকারী চক্রের গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করেছে। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ মিলেছে। চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানব পাচারে যুক্ত চীনা নাগরিকেরা এক বছর আগে বাংলাদেশে আসেন। তাঁরা উভয়ই বসুন্ধরা এলাকায় থাকতেন। আর দেশের বিভিন্ন দালালের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে নয়ন আলীর (৩০) সহযোগিতায় ভুক্তভোগী তরুণীকে বিয়ে করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখান। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পরস্পর যোগসাজসে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে শ্রাবন্তীকে বিয়ে করার জন্য রাজি করান। তাঁরা ওই তরুণীর নামে ভুয়া ঠিকানায় পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করেন। গত মার্চে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে চীনা নাগরিক হু জুন জুনের সঙ্গে তরুণীর বিয়ে হয়। এতে ঝাং লেইজি ও নয়ন আলী সহযোগিতা করেন। তরুণীকে না জানিয়ে তাঁকে চীনে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঝাং লেইজি তরুণীর নামে বিমান টিকিট কেনেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা তরুণীকে বাসা থেকে জোর করে চীনে পাচারের জন্য হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যান। এ সময় তরুণী ঘটনাটি বিমানবন্দর এপিবিএনকে জানান।
আজ তরুণীর মা (৪৩) বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২–এর ৬(১)/৬(২)/৭/৮/১০ ধারায় মামলা করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিমানবন্দর এবিপিএনের পুলিশ সুপার (অপারেশন্স) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মানব পাচারের অপরাধে চীনা নাগরিক আটকের এটি দ্বিতীয় ঘটনা। কিছু মানব পাচারকারী চক্র স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় নারী পাচারের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা মূলত গ্রামের সহজ-সরল ও দরিদ্র পরিবারের নারীদের নিশানা করে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করার চেষ্টা করছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সহয গ ত র জন য প চ রক
এছাড়াও পড়ুন:
মদিনার প্রাণকেন্দ্র মসজিদে নববি
তিনটি মসজিদ ভ্রমণ করলে ফজিলত পাওয়া যায়। এর প্রথমটি হলো মক্কা মুকাররমা বা কাবা শরিফ (সৌদি আরব), দ্বিতীয়টি মসজিদুল আকসা বা বায়তুল মোকাদ্দাস—ইসলামের প্রথম কিবলা মসজিদ (ফিলিস্তিন), তৃতীয়টি মদিনা আল মুনাওয়ারার মসজিদে নববি। মদিনা নবী করিম (সা.)-এর শহর, একে আরবিতে বলা হয় মদিনাতুন নবী। আর মদিনার প্রাণকেন্দ্র হলো ‘মসজিদে নববি’। রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার বরকতের জন্য দোয়া করেছেন এবং একে সম্মানিত ঘোষণা করেছেন। মসজিদে নববিতে নামাজ পড়ায় ফজিলত বেশি।
মসজিদে নববিতে নামাজ
আদায় ও দোয়া করার উদ্দেশ্যে মদিনায় গমন এবং সালাত আদায় করে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারত করা ও সালাম পৌঁছানোর ইচ্ছা থাকে প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানের। জিয়ারত ও নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে মদিনায় যাওয়া সুন্নত। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ঘর থেকে অজু করে মসজিদে কুবায় গিয়ে নামাজ পড়লে একটি ওমরাহর সওয়াব পাওয়া যায়।
মসজিদে নববিতে নারীদের জন্য নামাজ পড়ার আলাদা জায়গা আছে। ভেতরে কিছু দূর পরপর কোরআন শরিফ রাখা আছে। আর পাশে আছে জমজমের পানি খাওয়ার ব্যবস্থা। এখানে জিয়ারতের জন্য ইহরাম করতে বা তালবিয়া পড়তে হয় না। তবে মদিনা থেকে যদি মক্কায় আসতে হয়, তাহলে মিকাত আবিয়ারে আলী পার হলে ইহরাম করে আসতে হবে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার বরকতের জন্য দোয়া করেছেন এবং একে সম্মানিত ঘোষণা করেছেন।আরও পড়ুনহজযাত্রীদের জন্য বিনা মূল্যে প্রথম আলোর হজ গাইড১০ মে ২০২৫রিয়াজুল জান্নাহ
হুজরায়ে মোবারক ও মিম্বার শরিফের পাশের জায়গাটি ‘রওজায়ে জান্নাত’ বা ‘রিয়াজুল জান্নাহ’ বা ‘বেহেশতের বাগান’ নামে পরিচিত। স্থানটির বিশেষ ফজিলত রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর তৈরি করা মসজিদে খেজুরগাছের খুঁটিগুলোর স্থলে ওসমানি সুলতান আবদুল মাজিদ পাকা স্তম্ভ নির্মাণ করেন। এগুলোর গায়ে মর্মর পাথর বসানো এবং স্বর্ণের কারুকাজ করা। প্রথম কাতারে চারটি স্তম্ভ লাল পাথরের এবং এগুলোকে পার্থক্য করার সুবিধার জন্য সেগুলোর গায়ে নাম লেখা রয়েছে। মসজিদে নববির ভেতরে কয়েকটি উস্তুওয়ানা বা স্তম্ভ রয়েছে, সেগুলোকে রহমতের স্তম্ভ বা খুঁটি বলা হয়। রিয়াজুল জান্নাহতে প্রবেশের জন্য নুসুক অ্যাপে নিবন্ধন করতে হয়। নারীদের প্রবেশের সময়সূচি: সকাল ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা, বেলা ১টা থেকে বেলা ৩টা, রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত।
জান্নাতুল বাকি
মসজিদে নববির পাশেই বাকিউল গরকাদ (জান্নাতুল বাকি) কবরস্থান। এখানে হজরত ফাতেমা (রা.), হজরত ওসমান (রা.)–সহ অগণিত সাহাবায়ে কিরামের কবর রয়েছে। এর এক পাশে নতুন নতুন কবর হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
আরও পড়ুন মদিনা যাত্রায় মনের কোণে যত কথা২১ জুন ২০২৪ওহুদ যুদ্ধের ময়দান
ইসলামের ইতিহাসে দ্বিতীয় যুদ্ধ এটি। দুই মাথাওয়ালা একটি পাহাড়, দুই মাথার মাঝখানে একটু নিচু—এটাই ওহুদের পাহাড়। তৃতীয় হিজরির শাওয়াল মাসে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
মসজিদে কুবা
হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় আগমন করে প্রথম শহরের প্রবেশদ্বারে কুবা নামক স্থানে নামাজ পড়েন। পরে এখানে মসজিদ গড়ে ওঠে।
কিবলাতাইন মসজিদ
এই মসজিদে একই নামাজ দুই কিবলামুখী হয়ে সম্পন্ন হয়েছিল।
এ ছাড়া মসজিদে কুবা, মসজিদে কিবলাতাইন, ওহুদ পাহাড়, খন্দকের পাহাড় প্রভৃতি দেখার জন্য মসজিদে নববির বাইরে প্রবেশপথের কাছে ট্যাক্সিচালকেরা প্যাকেজের ব্যবস্থা করে থাকেন। খরচ ১০–২০ রিয়াল।
আরও পড়ুনমক্কা-মদিনা এখন বিশ্বমানবের শহর৩১ জুলাই ২০১৮