সবকিছুই যখন খুব অনুমেয় হয়ে যায়, তখন সেটাকে আর চমক বলা যায় না।
সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম দেশের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান হচ্ছেন, সেটা অনুমান করা যাচ্ছিল গত দুই দিনে নাটকীয় পটপরিবর্তনের পরই। সেই নাটকের পর গতকাল বিকেলে একেবারে অনুমিত ব্যাপারটাই ঘটল। জরুরি এক সভায় বিসিবির ষোড়শ সভাপতি নির্বাচিত হলেন আমিনুল।
সভার শুরুতেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনয়নে বোর্ড পরিচালক ঘোষণা করা হয় আমিনুলকে। এরপর পরিচালকদের ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন ৫৭ বছর বয়সী আমিনুল। যাঁর নেতৃত্বে ১৯৯৯ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলেছিল বাংলাদেশ। স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের পর ক্রিকেট–বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল পাকিস্তানকে হারিয়ে। পরের বছর বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টেও আমিনুল করেন স্মরণীয় এক সেঞ্চুরি। মাত্র ৯ মাসেই আগের সভাপতি ফারুক আহমেদের অধ্যায় শেষ হয়ে যাওয়ার পর জাতীয় দলের দ্বিতীয় সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে বিসিবি সভাপতি হলেন আমিনুল।
আরও পড়ুনবিসিবি সভাপতি হওয়ার প্রস্তাব কখন কীভাবে পেয়েছেন, জানালেন আমিনুল৪ ঘণ্টা আগেতবে যে প্রক্রিয়ায় আর যেভাবে মাত্র দুই দিনে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পটপরিবর্তন হলো এবং এর জের ধরে আমিনুল সভাপতি হলেন, সেটা চমকপ্রদ। গত বুধবার রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাসভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করে এসে সাবেক সভাপতি ফারুক জানান, সরকার বিসিবির শীর্ষ পদে পরিবর্তন আনতে চাইছে। তবে কেন পরিবর্তন আনতে চাইছে, সেই ব্যাখ্যা পাননি ফারুক। আর পাননি বলে তিনি পদত্যাগ করতেও আগ্রহী ছিলেন না।
তবে সভাপতি হওয়ার আগে ফারুক বিসিবির পরিচালক হয়েছিলেন এনএসসির মনোনয়নে। তিনি পদত্যাগ করবেন না, এটা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে অনাস্থা জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন বিসিবির আট পরিচালক। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতেই বিসিবি পরিচালক হিসেবে ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করে এনএসসি। আর বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, পরিচালকদের মধ্য থেকেই একজন বোর্ড সভাপতি নির্বাচিত হয়ে থাকেন। যেহেতু ফারুক আহমেদ আর পরিচালকই নন, সেহেতু তিনি সভাপতি পদেও থাকার যোগ্য নন।
বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন আম ন ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিসিবি পরিচালক হলেন রুবাবা দৌলা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদের পরিচালক হয়েছেন করপোরেট ব্যক্তিত্ব ও নারী ক্রীড়া সংগঠক রুবাবা দৌলা। তাঁকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাউন্সিলর মনোনীত করে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রুবাবা দৌলার অন্তর্ভুক্তিতে ২৫ সদস্যের বিসিবি পরিচালনা পর্ষদ পূর্ণতা পেয়েছে।
দেশীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থায় এনএসসি মনোনীত কাউন্সিলর থাকেন দুজন। গত ৬ অক্টোবর বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের পর এনএসসি যে দুজনকে মনোনয়ন দেয়, তাদের একজন ইসফাক আহসানকে নিয়ে সেদিনই বিতর্ক দেখা দেয়। আজ এনএসসির চিঠিতে ইসফাক আহসান ‘পদত্যাগ করেছেন’ বলে উল্লেখ করা হয়।
ব্যবসায়ী ইসফাকের আওয়ামী লীগের পদে থাকা এবং ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে প্রার্থিতার বিষয়টি আলোচনায় এলে এনএসসি তাঁর জায়গায় রুবাবাকে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তিনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেখানে কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকায় রুবাবা তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব নেননি।
রুবাবা বর্তমানে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ওরাকলের বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টরের দায়িত্বে আছেন। এর আগে তিনি টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন ও এয়ারটেলের শীর্ষ পর্যায়ে কাজ করেছেন।
রুবাবা দৌলা দীর্ঘদিন ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং একই সময়ে বাংলাদেশ স্পেশাল অলিম্পিকসের বোর্ড সদস্য হিসেবেও যুক্ত ছিলেন।
গ্রামীণফোনে ১৯৯৮ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা ও প্রধান বিপণন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ছিলেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিত মুখ। সেই সময় গ্রামীণফোন ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসর (২০০৩-২০১১), আর ২০০৭ সালে বিসিবির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মিরপুরে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি স্থাপনেও ভূমিকা ছিল রুবাবার।
আজ বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের একটি সভা রয়েছে। রুবাবা দৌলা সভায় যোগ দিতে পারেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে তিনি ছাড়া মনোনীত অন্য কাউন্সিল ইয়াসির মোহাম্মদ ফয়সাল আশিক।