টোকিও থেকে দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
Published: 31st, May 2025 GMT
চার দিনের সরকারি সফর শেষে আজ শনিবার জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
স্থানীয় সময় শনিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে অধ্যাপক ইউনূস ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট টোকিওর নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।
প্রধান উপদেষ্টার উপ–প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ইউএনবিকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, আজ রাত ১০টা ৪০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সফরের তৃতীয় দিন গতকাল শুক্রবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন অধ্যাপক ইউনূস। বৈঠকে দুই নেতা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি চূড়ান্ত করার অঙ্গীকার করেন, যাতে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর হয়।
এ সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জন্য বাজেট–সহায়তা ও রেল খাতের উন্নয়নে ১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলারের সহায়তা ঘোষণা করেন। এ ঋণসহায়তার অর্থের ৬৪ কোটি ১০ লাখ ডলার দেশের রেলওয়ে খাতের উন্নয়ন ও সংস্কারে ব্যয় করা হবে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু পরিবর্তন স্থিতিশীলতার জন্য ৪১ কোটি ৮০ লাখ ডলার ও মানব উন্নয়ন বৃত্তির জন্য অনুদান ৪২ লাখ ডলার ব্যয় করা হবে।
পরে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অধ্যাপক ইউনূস। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনীতি, বিনিয়োগসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার ছয়টি সমঝোতা স্মারকে সই হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার জাপানে বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানো ও সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে দুই দেশের মধ্যে আরও দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে টোকিওর হিরাকাওয়াচো চিওদা সিটিতে অনুষ্ঠিত মানবসম্পদ-বিষয়ক সেমিনারে এসব চুক্তিতে সই হয়। সেখানেও অধ্যাপক ইউনূস উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা জানান, দেশটিতে ক্রমবর্ধমান শ্রমিকসংকট মোকাবিলায় আগামী পাঁচ বছরে অন্তত এক লাখ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ওই দিনই টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘৩০তম নিক্কেই ফোরাম: ফিউচার অব এশিয়ায়’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধান উপদেষ্টা।
নিক্কেই ফোরামের ফাঁকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন অধ্যাপক ইউনূস। এ সময় তিনি আসিয়ান জোটে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করতে মাহাথিরের সহযোগিতা চান।
গত শুক্রবার সামাজিক উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে জাপানের সোকা ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রিজন ভ্যানে করে ‘তথ্য আপা’দের ‘সরিয়ে নিল’ পুলিশ
দুই দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা সংলগ্ন কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নেওয়া মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, রোববার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নেওয়া ‘তথ্য আপা’দের প্রিজন ভ্যানে করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এর আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীদের রোববার বিকাল ৪টার দিকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তুলতে দেখা যায়।
পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তাদেরকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, এর আগে আন্দোলনকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করা হলেও তারা তা শোনেননি। এ পরিস্থিতিতে ‘ভয় দেখানোর জন্য’ তাদের প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে মিছিল বের করেন ‘তথ্য আপা’রা। প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে বের হওয়ার সময় তারা একবার পুলিশি বাধা অতিক্রম করলেও কাকরাইল মসজিদ মোড়ে আবার বাধা পেয়ে সেখানেই অবস্থান নেন।
সে সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি ঘটে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জও করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা দুই দফা দাবিতে গত বুধবার থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
তাদের দুই দফা দাবি হলো- ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পে কর্মরত সব জনবলকে সমগ্রেডে পদ সৃজন করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা এবং কর্তন করা বেতন ও ভাতা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই হাজার নারী মাঠ পর্যায়ে কাজ করে আসছেন। চলতি মাসের পর প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে, তাই তারা চাকরির স্থায়ী সমাধান চেয়ে কর্মসূচি পালন করছেন।