কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণে ময়মনসিংহের তারাকান্দা-শ্যামগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের চংনাপাড়া ও রায়জান বাজারের মধ্যবর্তী স্থানে নির্মিত বিকল্প ডাইভারশন সড়কটি সম্পূর্ণ ধসে গেছে। এর ফলে তারাকান্দা, পূর্বধলা ও গৌরীপুর উপজেলার হাজারো মানুষের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যা ঈদযাত্রার আগ মুহূর্তে চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা গেছে, তারাকান্দার কামারগাও ইউনিয়নের চংনাপাড়া বাজারের কাছে একটি নতুন সেতু নির্মাণাধীন রয়েছে। মূল সেতুর কাজ চলায় যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে একটি অস্থায়ী ডাইভারশন সড়ক তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু প্রবল বর্ষণে সেই ডাইভারশনটি সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়ায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

স্থানীয় বহেড়াকান্দি গালাগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম জানান, এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন পূর্বধলা, গৌরীপুরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলার মানুষ যাতায়াত করে। সড়কটি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় জরুরিভিত্তিতে সংস্কার না হলে সাধারণ মানুষের চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়বে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, হাজীগঞ্জ, আশ্বিয়া, অনন্তপুর, ভেরুয়া, হরিয়াতলা, হারিভাঙ্গা, রাজধারিকেল, কামারগাঁও, ওয়াই ও গোবিন্দখিলা এলাকার মানুষজন এই সড়কের ওপর নির্ভরশীল। শিক্ষার্থী, রোগী, কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য এই দুর্ভোগ আরও প্রকট হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটে। নির্মাণ কাজের ধীরগতি এবং অস্থায়ী ডাইভারশন ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে নিয়মিত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তারা দ্রুত সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করার পাশাপাশি অবিলম্বে বিকল্প সড়কটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন সমকালকে বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে রাস্তাটি পরিদর্শন করে এসেছি। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারকে দ্রুত সময়ের ভেতরে রাস্তাটি মেরামত করতে বলা হয়েছে। আগামীকাল থেকে যাতে ছোট যানবাহনগুলো চলাচল করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তবে তারাকান্দা উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, ভাঙ্গা রাস্তাটি ফেসবুকে দেখেছি। এটি খুব বাজেভাবে ভাঙ্গায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় ঘটনাস্থলে যেতে পারিনি। সম্ভবত রাস্তাটি বিসকা ইউনিয়নে পড়েছে। রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেতে পারি। রাস্তাটি এলজিইডির হলে ইউএনওর সাথে কথা বলে মেরামতের ব্যবস্থা করব।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে জয়নুল আবেদিন উদ্যানে উচ্ছেদ হচ্ছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক

ময়মনসিংহ নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের ভেতরে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক উচ্ছেদ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের তিনজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।

এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুমনা আল মজীদ বলেন, চুক্তির শর্ত ভঙ্গ, অর্থ পরিশোধ না করায় মিনি চিড়িয়াখানা ও পাশের জমিতে করা শিশুপার্কের চুক্তি বাতিল করে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উচ্ছেদ হওয়া স্থানে শিশুদের জন্য ‘কিডস জোন’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিশুদের জন্য লাইব্রেরি, খেলনা ও কিছু রাইড থাকবে এবং বাগান করে দেওয়া হবে। শিশুরা সেখানে খেলাধুলা করবে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, জয়নুল আবেদিন উদ্যানে মিনি চিড়িয়াখানা ও চিড়িয়াখানাসংলগ্ন শিশুপার্কের ভূমি ইজারার চুক্তিপত্র বাতিল করে গত ২৬ জুন ইজারাগ্রহীতা মো. সেলিম মিয়াকে চিঠি দেয় সিটি করপোরেশন। চিঠি পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে সেখানকার অবকাঠামো ও পশুপাখি নিজ হেফাজতে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। ইজারাগ্রহীতা সেলিম মিয়া হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমানের শ্যালক। চলতি বছরের ৮ মার্চ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন মাহবুবুর রহমান।

তবে সেলিম মিয়ার নামে পার্ক ইজারা নেওয়া হলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করতেন আওয়ামী লীগ নেতা ও কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান। ২০১৪ সালের ৩০ জুন তৎকালীন পৌরসভা মিনি চিড়িয়াখানাটি ১০ বছরের জন্য ইজারা দেয়। ২০২৪ সালের ৩০ জুন ইজারার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। ৬ লাখ টাকায় চিড়িয়াখানাটি ইজারা দিলেও মেয়াদ শেষ হলেও মাত্র ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়। মিনি চিড়িয়াখানার পাশের জমিটি ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে মাসিক ১ হাজার টাকা ভাড়ায় চুক্তি সম্পাদন করা হয়। এটিও ইজারা দেওয়া হয় সেলিম এন্টারপ্রাইজকে। দুই শতক জমি ১০ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হলেও চুক্তিপত্রে শিশুপার্কের কথা সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয় বলে সিটি করপোরেশনের চুক্তি বাতিলের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ দুপুর ১২টার দিকে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলামসহ তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে অভিযান চালান। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, বন বিভাগের সদস্যরা এতে অংশ নেন। এক্সকাভেটর দিয়ে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জয়নুল উদ্যান এলাকায় ভ্রাম্যমাণ দোকানপাটও উচ্ছেদ করা হয়েছে। বেলা তিনটায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্কে অভিযান চলছিল।

মিনি চিড়িয়াখানায় প্রাণীগুলোকে হেফাজতে নিয়েছেন বন বিভাগের কর্মীরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বেহাল সড়ক
  • কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে ১০ শ্রমিক আহত
  • ময়মনসিংহে জয়নুল আবেদিন উদ্যানে উচ্ছেদ হচ্ছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক
  • ময়মনসিংহে ময়লা ছিটিয়ে টাকা ছিনতাই, দুই বছর পর ঢাকা থেকে আসামি গ্রেপ্তার
  • সাগরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত, ঢাকাসহ ৪ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
  • ময়মনসিংহের সেই মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্কের চুক্তি বাতিল, অপসারণের উদ্যোগ
  • ময়মনসিংহে বন্ধুর বাড়িতে যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ
  • টাঙ্গাইলে কুকুরের কামড়ে ২৫ জন আহত
  • মেঘনার জোয়ারে সেতুর সংযোগ সড়কে ধস, দুই উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
  • ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি, আজও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস