নারীকে ‘লাথি মেরে’ বহিষ্কার সেই জামায়াতকর্মী গ্রেপ্তার
Published: 1st, June 2025 GMT
চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে নারীকে ‘লাথি মারার’ ঘটনায় বহিষ্কৃত জামায়াতকর্মী আকাশ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (১ জুন) বিকেলে নগরীর কোতোয়ালী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আকাশ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের করা দ্রুত বিচার আইনের মামলায় তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’’
আরো পড়ুন:
জিএম কাদেরসহ ২৮০ জনের বিরুদ্ধে বরিশালে মামলা
‘সরকার নির্ধারিত হাসিলের বাইরে কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না’
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পাওয়ার প্রতিবাদে গত বুধবার বিকেলে কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
কর্মসূচি শুরুর পরপর সেখানে মিছিল নিয়ে আসে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। এসময় শাহবাগবিরোধী ঐক্যের লোকজন ছাত্র জোটের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান। এতে ১২ জন আহত হন।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ওবাইদুর ও সেলিম নামের দুজনকে আটক করে পুলিশ এবং হামলার ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে আটক দুই জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় ২০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা করে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলাকায় মহড়া দিয়ে জনমনে আতঙ্ক, ত্রাস ও রাস্তায় যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।
এদিকে হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে এক নারীসহ দুজনকে পেছন থেকে লাথি মারতে দেখা যায় এক ব্যক্তিকে। যে ব্যক্তিকে লাথি মারতে দেখা গেছে, তার নাম আকাশ চৌধুরী।
ভিডিওতে দেখা যায়, হামলার পর প্রেস ক্লাবের পাশে একটি ভবনের নিচে আশ্রয় নেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা। সেখানে এক পুলিশ সদস্যকেও দেখা যায়। হামলাকারী পুলিশের চোখ এড়িয়ে নেতা-কর্মীদের পেছনে যান এবং সেখানে দাঁড়িয়ে হঠাৎ এক জনকে লাথি মারেন। এরপর ঘুরে আবার আরেক নারীকে লাথি মারেন তিনি।
এ ঘটনায় আকাশ চৌধুরী নামের এক জনকে বহিষ্কার করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (৩০ মে) রাতে দলের চট্টগ্রাম মহানগরের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহর সই করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে আকাশকে জামায়াতের কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগেও, আকাশ চৌধুরীর বিরুদ্ধে নগরীর মুরাদপুরে সুন্নিদের কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ ছিল।
ঢাকা/রেজাউল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অবকাঠামো থাকলেও যেসব সুবিধা চালু হয়নি কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়ায় ২৯ একর জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে ঝিনুক আকৃতির আইকনিক রেলস্টেশন। ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০১ কিলোমিটারের দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের সঙ্গে দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশনও উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের প্রায় ১ বছর ৭ মাস পার হলেও স্টেশনে যাত্রীসেবার অনেক সুবিধাই চালু হয়নি। অবকাঠামো তৈরি হলেও সেসব পড়ে থাকায় চুরি হচ্ছে বিদ্যুতের তার, বাল্বসহ মূল্যবান জিনিস। নির্মিত অবকাঠামো বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারে দেরির কারণে সরকার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তও হচ্ছে।
রেলস্টেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি), চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি), বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড দুই ভাগে এই কাজ করছে। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর মধ্যে ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ছয়তলা রেলস্টেশন নির্মাণে খরচ হয়েছে ২৩৬ কোটি টাকা। তবে মূল প্রকল্পে থাকলেও স্টেশনের এক ডজনের বেশি যাত্রী পরিষেবা চালু হয়নি। এসব সুবিধা চালু না হওয়ায় একদিকে যাত্রীরা যেমন হতাশ হচ্ছেন, তেমনি সরকার আয়বঞ্চিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছয়তলা ভবনের নিচতলায় তথ্যকেন্দ্র, মসজিদ, শিশুদের বিনোদনের জায়গা, প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জ ও পদচারী-সেতু, দ্বিতীয় তলায় শপিং মল, শিশুযত্ন কেন্দ্র, রেস্তোরাঁ, তৃতীয় তলায় ৩৯ কক্ষবিশিষ্ট তারকা মানের হোটেল, চতুর্থ তলায় রেস্তোরাঁ, শিশুযত্ন কেন্দ্র, কনফারেন্স হল ও কর্মকর্তাদের কার্যালয় কিছুই চালু হয়নি। ভবনের সম্মুখভাগে তৈরি হয় ঝিনুক আদলের ফোয়ারা। যাত্রীরা ঝিনুক ফোয়ারা দিয়ে স্টেশনে প্রবেশ করার কথা, কিন্তু প্রবেশপথটি বন্ধ। ফোয়ারাতে পানির বিচ্ছুরণও নেই।
সবকিছু থেকেও নেই, বেহাল দশা
গত ২৮ মে সকালে রেলস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে পূর্ব পাশের সরু প্ল্যাটফর্ম দিয়ে বেরিয়ে আসছেন। একই পথে ট্রেনে ওঠার জন্য ছুটছেন আরেক দল যাত্রী। তাতে বাড়ছে ভিড়, হুড়োহুড়ি। মালামাল ও শিশুসন্তানদের নিয়ে বের হতে গিয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন নারী যাত্রীরা।
রেলস্টেশনের টিকিট কালেক্টর শরীফুল ইসলাম বলেন, দুটি ট্রেনের যাত্রীরা যখন ভবনের বাইরে একটি গেট দিয়ে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করেন এবং বের হন, তখন চেকিং করতে সমস্যা হয়। চেকিং করতে গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়াতে হয়।
স্টেশনের প্রবেশপথের পাশে (ভবনের নিচতলায়) একটিমাত্র টয়লেট রয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, যাত্রীদের বিশাল লাইন। প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের বসার এবং নামাজের কোনো ব্যবস্থা নেই। নেই খাবারের ব্যবস্থা।
চালু হয়নি স্টেশনের চলন্ত সিঁড়ি। সম্প্রতি কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশনে