Samakal:
2025-09-18@02:36:12 GMT

বই পড়ে ‘সেরা’ নির্বাচিত করেছি

Published: 10th, July 2025 GMT

বই পড়ে ‘সেরা’ নির্বাচিত করেছি

ধন্যবাদ সবাইকে। একটু পরেই আমরা রাতের খাবারে মিলিত হবো। সুতরাং কম কথা বলাই ভালো। তবু একটু বলি, ২০১৫ সালে নভেরা আহমেদ মারা গেলেন ফ্রান্সে। তখন তাঁর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার কথা হচ্ছিল যে নভেরা আহমেদকে নিয়ে একটা এক্সিবিশন বা বই প্রকাশ অথবা অন্য কী করা যায়, তার পরিকল্পনা করছিলাম। তখনই একদিন হাসনাত আবদুল হাই স্যার আমার রুমে এসেছিলেন। 
একটু আগে দেখানো তথ্যচিত্রে হাসনাত আবদুল হাই বলেছিলেন, নভেরা আহমেদকে নিয়ে আমি কী লিখব। তাঁকে তো আমি চিনি না। আমি এই কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। কেননা, তিনি সেদিন আমার রুমে এসে আমাকে স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, আমিই তো তাঁর প্রেমে পড়েছিলাম। নভেরা আহমেদ পঞ্চাশের দশকে এত স্মার্ট একজন নারী ছিলেন যে হাসনাত আবদুল হাই তাঁর প্রেমে না পড়ে থাকতে পারেননি। তেমনি রেহমান সোবহানসহ অনেকেই তাঁর প্রেমে পড়েছিলেন। এই তালিকা অনেক দীর্ঘ। তো আমরা হাসনাত আবদুল হাইকে আজ সম্মাননা জানাতে পেরে আনন্দিত এবং গর্বিত।
আসলে জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবে আমাদের কাছে বেশকিছু বই এসেছিল। এক মাসের মধ্যে এই বইগুলো পড়া সত্যিই কঠিন। আবার কিছুটা সহজ এজন্য যে, আমরা তাদের অনেককে চিনি। আমরা জানি, তাদের কে কেমন লেখেন। এতে আমাদের বিচারকাজ কিছুটা সহজ হয়ে যায়। আজ আমরা প্রবন্ধ এবং গদ্য রচনা শাখায় পুরস্কার দিয়েছি আমিনুল ইসলাম ভুইয়ার অনবদ্য একটি বই– ‘প্লেটো প্রবেশিকা’কে। এই অনবদ্য বই তাঁর অনবদ্যতার জন্য আগেও একবার পুরস্কার পেয়েছিল। তো আমার প্রশ্ন হচ্ছে– কেন আমরা নতুন বই তেমন পাচ্ছি না। ভালো বই কি আমরা লিখতে পারছি না? নাকি প্রকাশকরা ভালো বই জমা দিচ্ছেন না? 
দ্বিতীয়ত উম্মে ফারহানা ‘টক টু মি’ লিখেছেন। খুব স্মার্ট ভাষা। এর মধ্যেও তিনি ময়মনসিংহের খাইছুন-যাইছুন লিখে আমাদের আমুদায়িত করেছেন।
আমি তাঁর জন্য শুভকামনা জানাই। তাঁর কেপাবিলিটি আছে। যেটা একজন ম্যাচিউরড লেখকের জন্য খুব দরকার, তা আছে তাঁর। আমি চাইব, তিনি তাঁর লেখালেখি অব্যাহত রাখবেন।   
আর ধ্রুব এষকে তো আমরা চিনি। তিনি প্রায় ৩০ হাজার বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন। ৩৫ বা ৩৭ বছর ধরে তিনি সাহিত্যের সঙ্গে আছেন। তিনি কবিতা দিয়ে শুরু করেছিলেন। লাজুক মানুষ। ঘরে থাকেন। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে লেখেন। আমরা তাঁর লেখার মধ্যে ভাষার একটা নতুন গাঁথুনি লক্ষ্য করি। তাঁর নিজস্বতা খুঁজে পাই। তিনি থাকেন তাঁর চিন্তার জগতে। যে জীবন যাপনের মধ্যে তিনি থাকেন তাই তাঁর রচনার রসদ।
তো এই হচ্ছে জুরি বোর্ডের পক্ষ থেকে আমাদের নিবেদন। আমরা যথাযথ বিবেচনা করে, সব বই পড়ে, শিক্ষার্থীদের যেভাবে নাম্বার দিই, সেভাবে নাম্বারিং করে সেরা বই নির্বাচিত করেছি। সবাইকে আবারও ধন্যবাদ। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ক র আম দ র আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে এই হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল চালাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। গত পাঁচবছরে চিকিৎসাধীন ও রেফার্ড করা ২৪ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ৩১ শয্যার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। তাদের মধ্যে একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ১৮ জন নার্স পদে রয়েছেন মাত্র চারজন। চারজন মিডওয়াইফ থাকার কথা, নেই একজনও।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাদের সিদ্দিকী

প্রাথমিক থেকে শুরু করে জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ছুটে যান পাহাড়ি ও বাঙালিরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

দুর্গম এলাকার রোগীরা অনেক সময় নদীপথ কিংবা পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পান না। বরং তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অনেক সময় বান্দরবানে যাওয়ার পথে রোগীরা মারা যান। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবীদ পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন রোগী। এর মধ্যে ৪৫৬ জনকে রেফার্ড করা হয় বান্দরবান সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন রোগী। 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মংক্যসিং মারমা বলেন, “২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অন্তত সাতজন রেফার্ড করা রোগী মাঝপথে আমার গাড়িতেই মারা গেছেন।”

 

শৈসাই মং মারমা তিন বছর আগে বিনা চিকিৎসায় তার মাকে মারা যেতে দেখেছেন। তিনি জানান, তার মা শৈমেপ্রু মারমা (৩৪) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। রেমাক্রী বাজার থেকে নদীপথে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভাড়া গাড়িতে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় চিম্বুক বারো মাইল এলাকায় তার মা মারা যান।

লেংরু ম্রো নামে চার সন্তানের মা হারিয়েছেন স্বামীকে। তিনি জানান, তার স্বামী রেং য়ুং ম্রো (৪৫) কিডনি জটিলতা নিয়ে থানচি হাসপাতালে যান। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার মাঝপথে মারা যান তার স্বামী।

স্থানীয় বাসিন্দা মংমে মারমা বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বদলি হলেও অনেকেই থানচিতে যোগ দেন না, ডিপুটেশনে থেকে যান সদর হাসপাতালে। ফলে এ অঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙালি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

রিয়েং ম্রো নামে অপর বাসিন্দা বলেন, “পাহাড়ে বসবাসকারীদের অধিকাংশ গরিব। জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। রেমাক্রি, বড় মোদক, তিন্দু থেকে থানচি সদরে রোগী আনতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিকিৎসা করাবে?” 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে আমিসহ দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিন রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ফলে পুরো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না। দীর্ঘ পথের কারণে অনেকেই জীবিত অবস্থায় সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না।”

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “শুধু বান্দরবান নয়, পুরো তিন পার্বত্য জেলাতেই চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নতুন করে ৪৮তম বিসিএসের ডাক্তার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের আট-দশজন চিকিৎসককে বান্দরবানে বদলি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • ৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে