রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলার ঘটনায় দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলাও গ্রহণ করেছে পুলিশ। এর আগে গত শুক্রবার রাতে জাতীয় পার্টি ও শনিবার রাতে এনসিপির পক্ষ থেকে থানায় পরষ্পরবিরোধী এজাহার দাখিল করা হয়। তবে ওই সময় পুলিশ মামলা রেকর্ডভুক্ত করেনি। রোববার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মহানগর কোতয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান।
 
বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর নগরের সেনপাড়াস্থ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের স্কাইভিউ  বাসভবনে হামলা হয়। হামলাকারীরা বাসভবনের জানালার গ্লাসসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও  অগ্নিসংযোগ করে। ঘটনার সময় জি এম কাদের ওই বাড়িতেই ছিলেন। জাতীয় পার্টির অভিযোগ, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এই হামলা করেছেন। 

তবে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, রংপুরে জি এম কাদেরের আগমনের প্রতিবাদে তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জাতীয় পার্টির লোকজন হামলা চালিয়েছে।

হামলার ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে কোতয়ালি থানায় মামলা করতে যান জাতীয় পার্টির নেতারা। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর থানা থেকে বের হয়ে তারা অভিযোগ করেন, থানার ওসি আতাউর রহমান মামলা নেননি। থানা সূত্র জানায়, পার্টির পক্ষে করা ওই মামলার বাদী জাতীয় ছাত্র সমাজের নেতা আরিফ আলী। মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহাম্মেদ ইমতি ও এনসিপি নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারসহ ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫০/৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

অন্যদিকে, এনসিপির করা মামলার বাদী দলটির রংপুরের সংগঠক আলমগীর রহমান নয়ন। মামলায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রংপুর মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসিরসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৮০-৯০ জনকে। 

শনিবার রাতে মামলা করতে গিয়ে থানা থেকে ফিরে আলমগীর রহমান নয়ন জানান, মামলা দিতে গেলে ওসি ওপর মহলে কথা বলবেন বলে ঘণ্টা দুয়েক গড়িমসি করেন। শেষে এসে বলেন, তারা অভিযোগটি নিয়েছেন। কিন্তু মামলা রেকর্ড হয়নি।
 
রোববার রাত ১০টায় কোতয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, রোববারই জাতীয় পার্টি ও এনসিপি দুই পক্ষেরই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামলা দুটি তদন্ত করছেন বলেও জানান তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এম ক দ র র রহম ন এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

বরিশালে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর, আহত ১০

রংপুরে চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে শনিবার নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় পার্টি। এ ছাড়া গতকাল বিকেলে বরিশালে জাপার প্রতিবাদ মিছিলে হামলা হয়েছে। এ সময় জাপার পাল্টা হামলায় গণঅধিকার পরিষদের জেলা এবং মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।

এদিকে হামলার প্রতিবাদে গণঅধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী রাতে শহরে প্রতিবাদ মিছিল করে। মিছিলটি ফকিরবাড়ি সড়কে ঢুকে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর করেছে।

আহত পাঁচজনকে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন– জেলা সভাপতি শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম হাসান, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ফরহাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ ফরাজি ও কেন্দ্রীয় মানবধিকারবিষয়ক সম্পাদক মিরাজ হোসেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাপার শতাধিক নেতাকর্মীর মিছিলটি ফকিরবাড়ি সড়কের দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়। কিছুদূর অগ্রসর হলে ফকিরবাড়ি ও সদর রোড সংযোগমুখে কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে মিছিলের ওপর হামলা করে। জাপা কর্মীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়লে হামলাকারীরা দৌড়ে পালায়। কয়েকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢুকে পড়ে। জাপা কর্মীরা ওইসব দোকানে ঢুকে হামলাকারীদের বেদম পেটায়। পরে পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।

মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও মহানগর আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, হামলাকারীরা জাতীয় নাগরিক পার্টির লোকজন। তারা শান্তিপূর্ণ মিছিলে পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। বরিশালে এনসিপিকে থাকতে দেওয়া হবে না।

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্র অধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক তৌফিস আহমেদ সাব্বির বলেন, তারা সড়কের পাশে দাঁড়ানো ছিলেন। পাশ দিয়ে যাওয়া জাপার মিছিল থেকে তাদের ওপর হামলা হয়।

রংপুরে মামলা নেয়নি পুলিশ
শনিবার রংপুরে বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পায়রা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটির সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘এখন মবের যুগ, মব ভায়োলেন্স চলছে। তবে জাতীয় পার্টি মবে দুর্বল নয়, যে কোনো মব ফেস করতে পারে। কেউ মব করলে আমরা চাই না মব ভায়োলেন্স করতে। তবে কেউ অ্যাকশন করলে আমরা রিঅ্যাকশন করতে প্রস্তুত।’

এ সময় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহসভাপতি লোকমান হোসেন, সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

গত বৃহস্পতিবার রাতে জি এম কাদেরের রংপুরের বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে কোতোয়ালি থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগর আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহাম্মেদ ইমতি, এনসিপি নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তবে মামলাটি গ্রহণ করেনি পুলিশ। ওসি আতাউর রহমান বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশে হামলা হয়েছে: সংবাদ সম্মেলনে ‘তথ্য আপা’
  • রংপুরে জাপা-এনসিপির পাল্টাপাল্টি মামলা নিল পুলিশ
  • সেনাবাহিনীর কাছে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেন এনসিপি ও বিএনপি নেতারা
  • প্রিজন ভ্যানে করে ‘তথ্য আপা’দের ‘সরিয়ে নিল’ পুলিশ
  • জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলা: কোনো পক্ষেরই মামলা নেয়নি পুলিশ
  • মবের নামে নাশকতার সুযোগ নেই এখন, সারজিসকে সেনা কর্মকর্তা
  • দ্রুত অচলাবস্থার নিরসন হোক
  • বরিশালে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর, আহত ১০
  • জি এম কাদেরের বাসায় হামলার প্রতিবাদে রংপুরে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ
  • ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা নেওয়ার দাবি জাতীয় পার্টির