বাংলাদেশের বিপক্ষে আমিরাতের সিরিজ জয়ের নায়ক ওয়াসিম এখন আইসিসির মাসসেরার দৌড়ে
Published: 3rd, June 2025 GMT
গত মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রথম ম্যাচে হারের পরও সিরিজটা ২-১ ব্যবধানে জিতেছে আমিরাত। বাংলাদেশকে চমকে দেওয়া সেই সিরিজের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন দলটির অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিম। ৩ ম্যাচে দুই ফিফটিতে ১৪৫ রান করেছিলেন ওয়াসিম। দ্বিতীয় ম্যাচে তাঁর ৪২ বলে খেলা ৮২ রানের ইনিংসে ভর করেই ২০৬ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে জিতেছিল আমিরাত। এই পারফরম্যান্স এবার তাঁকে রেখেছে আইসিসির মাসসেরা হওয়ার দৌড়েও।
মে মাসের মাসসেরা মনোনয়ন পেয়েছেন ওয়াসিম। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দুজনও সহযোগী সদস্যদেশের, স্কটল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাকমুলান ও যুক্তরাষ্ট্রের মিলিন্দ কুমার। এবার মাসের সেরা নির্বাচিত হলে সহযোগী দেশগুলোর প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে একাধিকবার এই স্বীকৃতি পাবেন ওয়াসিম।
এর আগে গত বছরের এপ্রিলে প্রথমবার মাসসেরা হয়েছিলেন ওয়াসিম। আমিরাত অধিনায়ক ছাড়া সহযোগী দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে মাসসেরা হয়েছেন শুধু নেপালের সন্দীপ লামিচানে (২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে)।
ব্রেন্ডন ম্যাকমুলান.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম র ত
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যবসাটা মৌসুমী হলেও অনেকের বড় ভরসা
মাংস কাটার ছুরি, চাপাতি, খাটিয়া, হোগলা পাতার পাটি–এসব উপকরণ ছাড়া কোরবানির ঈদ চিন্তাই করা যায় না। তাই, ঈদুল আজহা এলেই এসব উপকরণের চাহিদা বেড়ে যায়। কেউ কেউ বছরব্যাপী এগুলোর ব্যবসা করলেও মৌসুমী ব্যবসায়ীর সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়।
এমনই একজন ব্যবসায়ী হলেন হোসেন আলী। রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বীরকুৎসা গ্রামের এই বাসিন্দার বয়স প্রায় ৬০ বছর। দীর্ঘ পেশাগত জীবনে অনেক হাটে ঘুরে ঘুরে খাটিয়া বিক্রি করেছেন। তিনি মূলত কাঠ ব্যবসায়ী। তবে ঈদুল আজহা এলে খাটিয়ার পাশাপাশি পশু জবাই ও চামড়া ছাড়ানোর ছুরিও বিক্রি করেন।
হোসেন আলী এ বছর বসেছেন বাগমারার যোগীপাড়া ইউনিয়নের ভাগনদী হাটে। গত বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তেঁতুল কাঠের খাটিয়া বিক্রি করছেন তিনি। একেকটির দাম ৬০০ টাকা। অন্য খাটিয়া থেকে তাঁর খাটিয়ার দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতা আছে ভালোই।
আলাপকালে হোসেন আলী জানালেন, গত কয়েক বছর ধরে তিনি উপজেলার হামিরকুৎসা, তালঘোড়ীয়া, নখপাড়া ও বীরকুৎসাসহ বিভিন্ন হাটে ঘুরে ঘুরে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে খাটিয়া ব্যবসা করছেন। কোনো দরদাম করেন না। সামান্য লাভ রেখে দাম নির্ধারণ করেন। ফলে বিক্রিও ভালো।
খাটিয়া তৈরির জন্য ৬ ফিটের মোটা একটি গুল (গাছের আংশ) পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় কেনেন হোসেন আলী। প্রতিটি গুল থেকে ১২ থেকে ১৪টি খাটিয়া তৈরি হয়। খাটিয়া প্রতি ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা খরচ পড়ে। প্রতিটি খাটিয়া বিক্রি করেন ৬০০ টাকা। জানালেন, খাটিয়া তৈরি ছাড়াও অন্য কিছু খরচও আছে। যেমন: অস্থায়ীভাবে বসলেও হাট ইজারদারকে প্রতিদিন ২০০ টাকা দিতে হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে দিনে তার লাভ থাকছে তিন থেকে চার হাজার টাকা।
হোসেন আলী ছাড়াও এই হাটে জুয়েল রানা (৩৪) ও আকরাম হোসেন (৩৮) নামের আরও দু’জন খাটিয়া বিক্রি করছেন। তাদের কাছে তেঁতুল গাছের খাটিয়া ছাড়াও কড়ই ও মেহগনি কাঠের খাটিয়া রয়েছে। জুয়েল বলেন, করই ও মেহগনি কাঠের চেয়ে তেঁতুল কাঠ বেশি শক্ত, তাই এর দাম কড়ই ও মেহগনির চেয়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা বেশি। তবে দাম বেশি হলেও খাটিয়া হিসেবে তেঁতুল কাঠই ক্রেতাদের বেশি পছন্দ। খাটিয়ার পাশাপাশি পশুর খাবার হিসেবে ভুট্টা ও গমের ভুসিও বিক্রি করেন জুয়েল।
জিয়াউর রহমান পেশায় কসাই। টাকার বিনিময়ে ঈদের দিন কোরবানির গরু-ছাগলের মাংস কাটার কাজ করেন। তাই খাটিয়া কিনতে এসেছেন। জানালেন, এ বছর খাটিয়ার দাম গত বছরের চেয়ে বেশি। তবে কোরবানির ঈদে তাঁর ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় হয়। ফলে খাটিয়ার দাম নিয়ে তেমন একটা ভাবছেন না।
পল্লী চিকিৎসক মিজানুর রহমানও খাটিয়া কিনতে এসেছেন। তিনি বললেন, হোসেন আলীর খাটিয়ার মান ভালো। তাই অনেকেই তাঁর কাছ থেকে খাটিয়া কেনেন। একই কথা জানালেন কলেজশিক্ষক সাহাবুল ইসলাম। তিনিও হোসেন আলীর তৈরি তেঁতুল কাঠের খাটিয়া কিনেছেন।
কোরবানির ঈদে আরও একটি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। তা হলো কাঁঠাল পাতা। ভাগনদী হাটের গেটের সাথেই রাস্তার ওপর ভ্যানে করে কাঁঠাল পাতা নিয়ে বসেছেন ইদ্রিস আলী (৫৫)। তিনি গত তিন-চার দিন ধরে কাঁঠাল পাতা বিক্রি করছেন। একেকটি আঁটি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জানালেন, এতে তার প্রতিদিন গড়ে ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা লাভ থাকছে।
হাটে কাঁঠাল পাতা ছাড়াও কলাপাতা ও ধানের খড়ের আঁটি বিক্রি করেন অনেকে। এ বিষয়ে ভাগনদী হাট ইজারাদার রফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদে কোরবানির পশু কেনাবেচার পাশাপাশি এর খাবার, জবাই ও চামড়া ছাড়ানোর ছুরি এবং খাটিয়াসহ অন্যান্য সরঞ্জাম কেনাবেচা হয়। সব মিলে নানা পেশার মানুষের সম্মিলন ঘটে এই ঈদ ঘিরে, যা ঈদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দেয়।